Friday 25 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মুন্সীগঞ্জে ২ গ্রুপের সংঘর্ষ, গোলাগুলি-ককটেল বিস্ফোরণ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপনডেন্ট
২৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:১৯

সংঘর্ষকালে মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় হোগলাকান্দি গ্রামে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গোলাগুলি, ককটেল বিস্ফোরণ, ছয়টি বসতঘর ভাঙচুর ও একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত থেমে থেমে দুই গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষ চলে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহত নেই।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ইমামপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামের আমিরুল ইসলাম মেম্বার গ্রুপের সঙ্গে লালু-সৈকত গ্রুপের বিরোধ ছিল। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

চলতি মাসের ৬ এপ্রিল আমিরুল মেম্বার গ্রুপের হামলায় আহত হয় লালু-সৈকত গ্রুপের আল আমিন ও রেনু মিয়া নামে দুইজন।

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সম্প্রতি জামিন পায় আমিরুল মেম্বার গ্রুপের লোকজন। এসব বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটায় সংঘর্ষে জড়ায় উভয়পক্ষ।

লালু-সৈকত গ্রুপের লোকজনের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায় আমিরুল মেম্বার গ্রুপের লোকজন। এ সময় সংঘর্ষে আমিরুল মেম্বার গ্রুপের একজন মারা গেছেন এমন একটি গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়, এতে আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।

এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর লালু-সৈকত গ্রুপের লোকজন আমিরুল মেম্বার সমর্থকদের উপর পালটা হামলা চালায়। এ সময় একটি বসতঘরে ভাঙচুর ও একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে তারা। উভয় পক্ষের মধ্যে চলে গোলাগুলি এবং ককটেল বিস্ফোরণ। রাতভর থেমে থেমে গুলিবর্ষণ এবং ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা মেহেদী হাসান বলেন, ‘৩/৪টি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি আমি। এগুলো গুলির শব্দ নাকি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ তা বলতে পারব না। আতঙ্কিত এলাকাবাসী যে যার ঘরে অবস্থান করছিলেন।’

বিজ্ঞাপন

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা ফাতেমা বেগম বলেন, ‘এই দুই গ্রুপের জ্বালায় আমরা অতিষ্ঠ। কয়দিন পর পর মারামারি, গোলাগুলি করে। গতকাল রাত সাড়ে আটটা থেকে বারোটা পর্যন্ত একটু পর পর গুলির শব্দ পেয়েছি আমরা।’

বিষয়টি নিয়ে লালু-সৈকত গ্রুপের সৈকত বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে আমরা এখন বাড়িতে থাকি না। বৃহস্পতিবার রাতে আমরা বাড়িতে আসবো এমন খবরে আমিরুল মেম্বারের নেতৃত্বে তার লোকজন আমাদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর চালায়। আমাদের সমর্থক সোহেল, নূর মোহাম্মদ, আহমদ আলী, বাচ্চু ও আলী আহমদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চালানো হয়। আমাদের লোকজনকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে তারা।’

এ সম্পর্কে আমিরুল ইসলাম মেম্বার বলেন, ‘আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে লালু-সৈকত গ্রুপের লোকজন দুই দফা হামলা চালায় আমাদের ওপর। প্রথমবার ১০/১৫ জন সন্ত্রাসী অতর্কিতভাবে আমাদের লোকজনকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়তে থাকে। এ সময় আতঙ্কিত হয়ে আমাদের লোকজন দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। এই ঘটনার কিছুক্ষণ পরে আবারও হামলা চালায় তারা। এ সময় একটি বসতঘরে ভাঙচুর ও একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে তারা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।’

গজারিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এরকম একটি খবর শুনে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। পুলিশের উপস্থিতির টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা সটকে পড়ে। কত রাউন্ডের মতো গুলি হয়েছে তা বলতে পারব না তবে আমরা ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা ও পটকা উদ্ধার করেছি। এই ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি, কেউ হতাহত হয়েছে বলে আমার জানা নেই। মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।’

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে গজারিয়া থানার অফিসার মো. আনোয়ার আলম আজাদ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বলেন, ‘সংঘর্ষর ঘটনায় কেউ আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি। এখনো ওই স্থানের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।’

এ ঘটনায় কেউ আহত হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আহত হওয়ার কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই। পুলিশ এ ঘটনা তদন্ত করছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

সারাবাংলা/এসডব্লিউ

২ গ্রুপের সংঘর্ষ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর