Friday 25 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পেঁয়াজের ঝাঁজ সবজিতেও, স্বস্তিতে মসলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:১০ | আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:০১

পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেশী। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: চাহিদার চেয়ে মজুত বেশি। বাজারেও নেই সংকট। তবু বাড়ছে পেঁয়াজের ঝাঁজ। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা। তবে আরও বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন আড়তদার ও পাইকারি বিক্রেতারা। মূলত কৃষকের অজুহাতে রান্নার কাজে অতিপ্রয়োজনীয় এ দ্রব্য নিয়ে কিছুদিন পরপর কারসাজি চলছে বলে দাবি খুচরা বিক্রেতাদের। তীব্র গরমে উত্তাপ ছড়াচ্ছে সবজির বাজারেও। মুরগিতে কিছুটা স্বস্তি মিললেও বেড়েছে মাছের দাম।

বিজ্ঞাপন

স্থিতিশীল ব্রয়লার মুরগীর বাজার। ছবি: সারাবাংলা

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, কচুক্ষেত, ক্ষিলক্ষেতসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়; যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৫-৬০ টাকা। আলু পাইকারি ১১-১২ টাকায় প্রতিকেজি মিললেও খুচরায় বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়। আদা-রসুন ২০-৫০ টাকা কমে ২০০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া করলা মিলছে ৫০-৬০ টাকায়। ঢেঁড়শ ৪০-৫০, টমেটো ৩০-৪০ ও লেবু হালিপ্রতি ১৫ টাকা।

সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুন, কাঁকরোল, বরবটিসহ কিছু সবজির জন্য ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। ভালোমানের লম্বা বা গোল বেগুন ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে; যা ছিল ৭০-৮০ টাকা। কাঁকরোল ১২০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা ও লতি ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শসার দাম কমে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।

ঝাল কমেছে কাঁচা মরিচেরও। কেজিপ্রতি ৩০-৪০ টাকা কমে পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকায়। প্রতি কেজি পেঁপে ৪৫-৫০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা ও পটল ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া ব্রয়লার মুরগি আগের দামেই ১৬০ টাকায় মিলছে। সোনালি মুরগির কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারে আসা ক্রেতা রশিদ মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘সবজির দাম কিছুটা বাড়লেও মুদি পণ্যে অনেকটা স্বস্তি রয়েছে। আসলে কৃষকের কথাও আমাদের ভাবতে হবে। আমরা কম দামে পেলেই হবে না। কারণ কৃষকরা কষ্ট করে এসব উৎপাদন করেন। তারা কেমন মূল্য পান সেটিও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।’

ক্রেতারা জানান, বাজার পরিস্থিতি আগের মতোই স্থিতিশীল রয়েছে। কেননা কিছু পণ্যের দাম কমেছে, আবার কিছু বেড়েছে। অর্থাৎ অন্যান্য বারের তুলনায় তেমন পার্থক্য নেই। বাজার ওঠানামা করা স্বাভাবিক ব্যাপার। দাম বাড়লেও আমাদের কিছু করার নেই। কারণ আমাদের চাহিদা মেটাতেই হবে।

বিজ্ঞাপন

কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা আবদুস সালাম বলেন, সপ্তাহ কয়েক ধরে পাইকারি বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। এর মধ্যে কাঁকরোল, বেগুন, বরবটিসহ কয়েকটি পণ্যের দাম বেশ চড়া। বেশি দামে কেনার কারণে ক্রেতাদেরও বাড়তি টাকা গুনতে হয়। এখানে আমাদের কিছু করার নেই। এছাড়া শীতের পর সবজিরও কিছুটা ঘাটতি রয়েছে।

পেঁয়াজের দাম বাড়া নিয়ে কারওয়ান বাজারের আড়তদার মো. খলিল সারাবাংলাকে বলেন, ‘দেশে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ। অন্যান্য দেশ থেকেও তেমন আসছে না। গত কয়েক মাস ধরে দেশি পেঁয়াজেই চাহিদা মিটছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হওয়ায় আমরাও কম দামে ছেড়েছি। কিন্তু বর্তমানে তুলনামূলক সরবরাহ কম। দিন বাড়ার সঙ্গে এ সরবরাহ আরও কমবে। ফলে দামও বেড়ে যাবে। এখানে আমাদের হাত নেই।’

ক্ষিলক্ষেতের ব্যবসায়ী ওবায়দুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, আমারা বেশিরভাগ পণ্যই কারওয়ান বাজার থেকে মোকাম করি। সেখারকার দামের ওপররেই আমরা বিক্রি করি। পাইকারিতে ৪৮ টাকায় প্রতিকেজি পেঁয়াজ কিনলে খরচ বাদে আমরা ৫ টাকা লাভ করি। অর্থাৎ ৫৫ টাকায় খুচরা বিক্রি করতে হয়। তবে কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গুদামজাত করে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করেন।

কমেনি চালের দাম। ছবি: সারাবাংলা

তিনি বলেন, অনেক সময় কৃষকের কথা বলে বড় ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেন। অথচ তারা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। যেমন বাজারে ৬০ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি হলে কৃষকরা পান অতি সামান্য। কিন্তু আড়তদাররা ঠিকেই লাভবান হন। তারা কৃষকের কাছ থেকে একসঙ্গে সব পণ্য কিনে ধীরে ধীরে বাজারে ছাড়েন। আর এজন্যই মাঝেমধ্যে কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে লাফিয়ে দাম বেড়ে যায় বিভিন্ন পণ্যের।

সারাবাংলা/আরএম/এমপি

চাল মুরগী সাপ্তাহিক বাজার

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর