ঢাকা: রাজনৈতিক ঐকমত্য ছাড়া রাখাইনে মানবিক করিডর দেওয়া ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলনের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) কুমিল্লা মহানগরের শুরা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সন্ধ্যায় দলটির প্রচার ও দাওয়া বিভাগ তাদের অফিসিয়াল হোওয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে দলীয় প্রধানের বক্তব্য শেয়ার করেন।
সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ‘রাখাইন রাজ্য নিয়ে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। বাংলাদেশ ঐতিহাসিকভাবে রাখাইনের রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্য করে আসছে। বর্তমানেও বাংলাদেশে ১৪-১৫ লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছে। মায়ানমারে গৃহযুদ্ধ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সৃষ্ট মানবিক পরিস্থিতির প্রতি আমরা সংবেদনশীল। তা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন রাজনৈতিক অস্থিরতা, স্বশস্ত্র যুদ্ধ ও জাতিগত হানাহানিতে বিপর্যস্ত এই রাজ্যের জন্য মানবিক করিডোর দেওয়ার বিষয়টির সঙ্গে দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত আছে। তাই বিস্তর বোঝাপড়া এবং রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ছাড়া এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না।’
তিনি বলেন, ‘একটি রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থান হয়ে গেল, কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ ও চরিত্রে সেই অর্থে কোনো পরিবর্তন হয় নাই। ক্ষমতার জন্য উদগ্র ব্যাকুলতা, প্রতিহিংসা, হানাহানি ও কূটকৌশল এখনো চলমান। এই পরিস্থিতে নির্বাচনের চেয়ে ব্যক্তি, দল ও রাষ্ট্রের সংস্কারই প্রধান মূখ্য হওয়া উচিত।’
সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, ‘নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন যে প্রস্তাব দিয়েছে তা আমাদের বোধ-বিশ্বাস ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাই এই প্রস্তাবনাকে প্রত্যাখ্যান করতেই হবে। একইসঙ্গে কমিশনকে বাতিল করতে হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যারা চাঁদাবাজি ও সিন্ডিকেট করে মূল্যস্ফীতি ঘটাচ্ছে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘স্বৈরতন্ত্র পতনে যে ব্যক্তি জীবন দিল তার কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে তার মেয়েকে ধর্ষণ করা হল। সেই মেয়ে পরে আত্মহত্যাও করল। এর চেয়ে কষ্টদায়ক ঘটনা আর কি হতে পারে? নিপীড়িত মেয়েটাকে কেন রাষ্ট্র রক্ষা করতে পারল না সেই জবাব সংশ্লিষ্টদের দিতে হবে। একইসঙ্গে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সারাদেশে নিহত ও আহতদের পরিবারের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে এবং অবশ্যই পতিত স্বৈরাচারের বিচার করতে হবে।’