‘এখনো দেশের দুই-তৃতীয়াংশ কর দেয় গরিবরা’
৩০ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৫১ | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৫ ২৩:৫৫
ঢাকা: এখনো দেশের দুই তৃতীয়াংশ কর গরিবরা দেয় বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর ) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরামর্শক কমিটির ৪৫তম সভায় তিনি এ কথা জানান তিনি। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপলক্ষ্যে দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য দেন- অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বিন হারুন। বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিএমএ’র সভাপতি শওকত আজীজ রাসেল, রিহ্যাবের পরিচালক আইয়ুব আলীসহ ৪০ জনের বেশি ব্যবসায়ী বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে এতে তাদের নানা প্রস্তাব তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এফবিসিসিআই প্রশাসক হাফিজুর রহমান।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘এখনো আমাদের রাজস্বের দুই-তৃতীয়াংশ গরিবরাই দেয়- এটাই বাস্তবতা। অথচ উন্নত দেশে উল্টো চিত্র। তাদের রাজস্বের বেশিরভাগই আসে প্রত্যক্ষ কর বা আয়কর থেকে। এখনো আমরা পরোক্ষ করের ওপর নির্ভরশীল। আমাদের প্রত্যক্ষ কর বা ডিরেক্ট ট্যাক্স বাড়াতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার চালানোর জন্য রাজস্ব প্রয়োজন। সেই রাজস্ব কোন জায়গা থেকে আসে, তার ওপর নির্ভর করে আমরা কতটুকু সভ্য হয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাটের একক হার হওয়া উচিত। কর ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য এটি প্রয়োজন। করপোরেট কর কমানো হয়েছে। এটি আর কমানোর সম্ভব নয়।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাজেটে এবার ব্যবসা সহজীকরণকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বাজেটে ব্যবসা পরিচালনার প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার চেষ্টা থাকবে। আমরা বন্ড অটোমেশনে জোর দিচ্ছি। এনবিআরের অটোমেশন হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে আইনের শাসন নেই, সুশাসনের সিরিয়াস ইস্যু আছে। এ জন্য যারা কর ফাঁকি দেয়, তারা সহজে পার পেয়ে যেতে পারে। এনবিআরেরও রাজস্ব ফাঁকি বন্ধের চেষ্টার অভাব আছে। এটা বন্ধ করতে হলে ব্যবসায়ী ও এনবিআর উভয়কেই এগিয়ে আসতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জমির রেজিস্ট্রেশন কমাতে প্রস্তাব এসেছে। কিন্তু এর সঙ্গে অনেকেই জড়িত। সেটি এখনো কমানো যাবে কি না তা বলা যাচ্ছে না।’ ব্যবসায়ীদের প্রস্তাব ও প্রত্যাশার বিষয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাজেটে আপনাদের সব কথা হয়তো শুনতে পারব না। কারণ, আমাদের কর বাড়াতে হবে। হয়তো আপনাদের প্রত্যাশার সব প্রতিফলন ঘটবে না।’
পরামর্শক কমিটির সভায় এফবিসিসিআই’র প্রস্তবনায় হাজারের বেশি প্রস্তাবনা রয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এসব প্রস্তাবনা সরকারের পক্ষ থেকে আরও কম প্রস্তাব রাখার অনুরোধ করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট ও স্বল্প প্রস্তাবনা থাকলে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/পিটিএম