Sunday 15 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাবা: সকল ফলের বৃক্ষ

ওমর ফারুক
১৫ জুন ২০২৫ ১৪:০৮

‘পৃথিবীতে বাবা হলেন সেই বৃক্ষ
যেই বৃক্ষে সকল ফল পাওয়া যায়’

যিনি এই সবুজ গ্রহ উপহার দিয়েছেন তিনি বাবা। যিনি এই একান্ন কোটি বর্গ কিমি পৃথিবীতে নিঃশ্বাস নিতে ও দেখতে সুযোগ করে দিয়েছেন তিনি বাবা। বাবাদের ভালোবাসা নিরবধি যার কোনো সমাপ্তি নেই। ছোট্ট রক্ত পিন্ডের শিশু থেকে এতো বড়ো হওয়ার পিছনে তারই শ্রম। তিনিই রক্ত ঝরা পরিশ্রম করে আমাদের গড়ে তুলেছেন। নিজের পায়ের চটি ঠিক না থাকলেও আমাদের শরীরের সমস্ত অঙ্গ ঢাকার ব্যবস্থা করে দেন। তিনি বাবা যিনি সবার চাহিদা মিটাতে দূর প্রবাসে পাড়ি জমান। নিজের জন্মভূমি ত্যাগ করে পরদেশে রাতদিন কঠিন কষ্ট করেন। নিজের জীবন বাজি রেখে গভীর সমুদ্রে মাছ মারতে যান। বিমান নিয়ে আকাশে উড়ে বেড়ায় হওয়ার মধ্যে একজন বাবা। কনকনে শীতে ও অঝোর বৃষ্টিতে পাহাড়ে চলে যায় জীবিকার তাগিদে। একা একা প্রতিটা সেকেন্ড ব্য় করেন হাজার কিলোমিটার দূরে। তিনি বাবা যিনি সন্তান ও পরিবারের জন্য নিজের সহস্র কিছু বর্জন করেন। নিজের আনন্দ উল্লাস ভুলে আমাদের মুখে হাসি ফুটান। কনকনে শীতে ভোর বেলা যাকে খুঁজে পান না বাড়িতে তিনি বাবা। সীমাহীন বৃষ্টিতে যিনি জীবীকার জন্য বাহিরে চলে যায় তিনি বাবা। প্রসান্তের মত মহাসাগর যিনি জয় করেন তিনি বাবা। যার কাছে সমস্ত পৃথিবীর সকল কাজ তুচ্ছ। কঠোর পরিশ্রমে যিনি সব কাজকে সহজ করেন তিনি বাবা।

বিজ্ঞাপন

আমার মা আমার বেস্ট ফ্রেন্ডের চেয়েও বেশি। কাউকে না বলতে পারা কথা আমি তাকেই বলি। এই কথাটা কেন বললাম? তাইতো? তাইলে শুনুন! বাইশ বছর হওয়ার পরেও আমার বাবাকে আমি চোখে চোখে তাকিয়ে প্রশ্ন করতে পারি না। বাবাকে প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে আমার মা বার্তা বাহক হিসেবে কাজ করেন৷ আমি মাকে বলি তিনি বাবাকে বলেন। তারপর এসে আবার আমাকে বলেন। আমি যেদিন বাজার বেশি করি ঐদিন বাবা মা’কে বলে সে এতো টাকা কোথায় পেয়েছে? কোনো আজে বাজে কিছু করছে নাতো? যদিও আমার উপর শতভাগ বিশ্বাস আছে। আমি আমার বাবাকে প্রশ্ন করতে ভয় পাই এখনো। বাড়িতে কোন ধরনের নাস্তা দেখলে কিংবা খাবার অপরিচিত দেখলে মা’কে অনেক বার জিজ্ঞেস করবে। কে দিয়েছে? কি উপলক্ষে দিয়েছে? কেন দিয়েছে? যদি দেখেন একটু বেলাইনে, বেপর্দা, হারাম উৎস থেকে আসে কিংবা নামাজ রোজা করেনা রাখেনা এরকম মানুষের খাবার বা নাস্তা তাহলে তিনি হাত দিবেন দূরের কথা! সামনে থেকে সরিয়ে ফেলতে বলেন।

পুরো পরিবারের ভার যিনি বহন করেন তিনি বাবা। একজন বাবা পরিবার ও ছেলেমেয়েদের মানুষ করতে তার পুরো জীবন, শ্রম, অর্থ ও সময় ব্যয় করে থাকেন। এই ত্যাগ শুধু মাত্র বাবারা পারে আর কেউ পারে না। একজন কৃষক বাবা তার সন্তানকে দেশের প্রধানমন্ত্রী বানাতে পারেন। একজন জেলে বাবা তার সন্তানকে দেশ সেরা শিক্ষক বানাতে পারেন। একজন দিনমজুর বাবা তার সন্তানকে পৃথিবী খ্যাত দার্শনিক বানাতে পারেন। বাবারা সর্ব মুহূর্তে শুধু দিয়েই যায় তার বিনিময় হিসাব করেন না। একজন বাবার সমস্ত কষ্টের বিনিময় হিসাব করলে পৃথিবীর কোন সন্তান কখনো তা ফেরত দিতে পারবেন না। পৃথিবীর এমন কোন কাগজ বা সম্পদ নাই যে বাবার ঋণ শোধ করতে পারবে। বাবারা হয় অমূল্য! যাইহোক, আমি দুনিয়ার সকল বাবাকে ভালোবাসি। জগতের সব বাবার জন্য অজস্র দোয়া। ভূখন্ডের সমস্ত বাবার জন্য শুভ কামনা। ভূমন্ডলের সব বাবা ভালো থাকুক। অকালে যেন চলে গিয়ে কাউকে আগুনের স্তুপে ঠেলে না দেই সেই কামনা রবে’র প্রতি। এই বসুন্ধরায় বাবা নামক ডাকটা অমূল্য সম্পদ। যা পুরো পৃথিবীর বিনিময়ে কেনা যাবে না।

বাবা মানে এক একটা কঠিন ইতিহাস।
বাবা মানে বুলেট গেঁথে নিথর দেহের লাশ।
বাবা মানে পাহাড় কেটে সুড়ঙ্গ রাস্তা।
বাবা মানে সহস্র ত্যাগ যদিও থাকে অনিচ্ছা।
বাবা মানে সাঁতারায়ে প্রসান্ত পাড়ি দেওয়া।
বাবা মানে হঠাৎ মারাত্মক দুর্ঘটনা!
বাবা মানে আকস্মিক হৃদয়ে বন্যা।
বাবা মানে সাইক্লোন টর্নেডো ভুমিকম্প।
বাবা মানে অকালে সব হারিয়ে হৃদয় শূন্য।
বানা মানে ত্যাগ ত্যাগ ত্যাগ ও ত্যাগী হওয়া।

লেখক: শিক্ষার্থী, সরকারি সিটি কলেজ

সারাবাংলা/এএসজি

ওমর ফারুক বাবা মুক্তমত

বিজ্ঞাপন

টিউলিপকে ফের দুদকে তলব
১৫ জুন ২০২৫ ২১:৩০

আরো

সম্পর্কিত খবর