যতই সময় যাচ্ছে ততই পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশের মাত্র তিনটি জেলায় পাহাড়ি অঞ্চল। অথচ অনেক দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলই পাহাড়ি জনপদ। এরপরেও আমরা সামান্য পাহাড়ি জনপদ নিয়ে সারাবছর টেনশন করতে হয়। এর মুল কারন হলো, ভিন্ন দেশের অযাচিত হস্তক্ষেপ। বিগত সরকার এক তরফাভাবে ভারতকে সুবিধা দেওয়াই কাল হয়েছে। ব্যারাকগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার, নতুন করে ক্যাম্প স্থাপন না করা, গোয়েন্দা সংস্থার বেশিরভাগ কাযক্রম গুটিয়ে নেওয়া, বিজিবি ও সেনা সদস্য সংখ্যা কমিয়ে আনা বড় বিপদের কারন হয়েছে।
এখন এর থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে হলে নতুন করে সেনা সদস্য বাড়ানো, পুরনো ব্যারাকে পর্যাপ্ত সংখ্যক সেনা মোতায়েন করা, নতুন করে ব্যারাক স্থাপন করা, চৌকস কর্মকর্তাদের সেখানে নিয়োগ দেওয়া, বিজিবির ব্যাটালিয়ন বাড়ানো, গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা, আকাশপথে টহল বৃদ্ধি করা এবং অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করা ও সন্ত্রাসীদের নিশ্চিহ্ন করতে হবে।
মনে রাখতে হবে, এই পাহাড় বাংলাদেশের এই পাহাড় আমাদের। পাহাড় নিয়ে ষড়যন্ত্র আর সহ্য করার সময় নেই। যেখানে প্রকাশ্যে কিছু সন্ত্রাসী এটা অন্যদেশের সাথে একিভূত করার শ্লোগান দিচ্ছে সেখানে আর ধৈয্য দেখানোর সময় নেই। যেকোনো উপায়ে এবং যেকোনো মুল্যে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের রুখে দাঁড়াতে হবে।
আমি বাঙ্গালী বুঝি না, আমি আদিবাসী বুঝি না, আমি উপজাতি বুঝি না, আমার প্রথম ও শেষ পরিচয় আমি বাংলাদেশী। সুতরাং আমরা সবাই বাংলাদেশী। টেকনাফ থেকে তেতুঁলিয়া, রুপসা থেকে পাথুরিয়া, সমতল, পাহাড়, নদী নালা-চর সবখানে আমরা বাংলাদেশী। এখানে অন্য কেউ নেই। তাই আজকে পাহাড়ে সমস্যা তৈরি হয়েছে এই সমস্যা সমাধানে আমাদের সবাইকে কথা বলতে হবে, সবাইকে ঝাপিয়ে পড়তে হবে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, তিন পার্বত্য পাহাড়ি এলাকা দখলে নেওয়ার জন্য ভারত অন্তত একশো বছর ধরে পরিকল্পনা করছে। গত ১৫ বছর সেই পরিকল্পনার কিছুটা বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। সবকিছু ভেস্তে গেছে ২০২৪ এর ৫ আগস্ট গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। তাই এখন ষড়যন্ত্র করছে পাহাড়িদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে। নিরীহ পাহাড়িদের হাতে অস্ত্র দিয়ে সন্ত্রাসী বানিয়েছে। অর্থ দিয়ে তাদের মানসিক শক্তি যোগানোর চেষ্টা করছে। এমনকি সরাসরি সন্ত্রাসী পাঠিয়েও পাহাড়ি জনপদকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে।
আমরা পদ্মা সেতু করেছি, যমুনা সেতু করেছি, মেট্টোরেল করেছি আরও করছি। আমরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিয়েছি। সুতরাং পাহাড়ি সীমান্তে একটি শক্তিশালী ইটের বেড়া নির্মাণ করতে পারবো না তা নয়। সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করলেই এটি সম্ভব। সবার মনে রাখা দরকার, একটি বেড়া নির্মাণই পাড়ে সার্বভৌমত্ব রক্ষার। বেড়াও ওপারে হবে টহল সড়ক। বেড়ার ওপরে থাকবে সিসি ক্যামেরা ও নজরদারি ঘর। এর ফলে কেউ অস্ত্র সরবরাহ করতে পারবে না। ওপার থেকে কোনো সন্ত্রাসী প্রবেশ করতে পারবে না। কোনো মাদক আসবে না। সীমান্তে পুষইন বন্ধ হবে। রোহিঙ্গা প্রবেশ বন্ধ হবে। অর্থাৎ আমাদের পাহাড়ি জনপদকে কেউ অশান্ত করতে পারবে না।
লেখক: স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, সারাবাংলা ডটনেট