‘সাধারণ মানুষ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে’
২২ অক্টোবর ২০২০ ২০:৫৭
‘ছেলে বিএনপি করে শুনে মেয়ে দিতে চায়না’ এমন একটা মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস। আজ বিএনপি বা সহযোগী সংগঠনের ছেলেরা নাকি বিয়ে করতে পারছে না, কোনো বাবা-মা নাকি তাদের মেয়েকে বিএনপি পরিবারে বিয়ে দিতে চায়না? কারণ কি?
এই পরিণতির জন্য দায়ী কে আর কারা?
বিএনপির এই নির্মম পরিণতির জন্য অনেক পেছনে যেতে হবে আমাদের। দেখতে হবে বিএনপি ও তার নেতাদের কাজকর্মগুলে। এইতো সেদিনের কথা। জামাত-বিএনপি জোট সরকার ক্ষমতায়। সেদিনের বিরোধীদলকে নিশ্চিহ্ন করতে দিতে কি করে নাই তারা। পুরো একটা বিরোধীদলকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিল আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী জনসভায়। একসাথে দুনিয়া থেকে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের সব শীর্ষ নেতাদের সরিয়ে দিতে গ্রেনেড হামলার পথে হেঁটেছিল বিএনপি। শেখ হাসিনা সেদিন ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন কিন্তু প্রাণ দিতে হয়েছে আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মীকে।
এই গ্রেনেড হামলাই শেষ হামলা ছিল না। তারপর আরও বহু হামলা হয়েছে আওয়ামী লীগের উপর, আওয়ামী লীগ নেতাদের উপর। গ্রেনেড হামলা করে হত্যা করা হয়েছে সাংসদ ও সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ কিবরিয়াকে, ব্রাশফায়ারে হত্যা করা হয়েছে সাংসদ আহসান উল্লাহ মাস্টারকে। হত্যা করা হয়েছে নাটোরের মমতাজ উদ্দিন ও খুলনার মঞ্জুরুল ইমামকে। গ্রেনেড হামলা করা হয়েছে সাংসদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের দিরাইয়ের জনসভায়, সিলেটের মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে হত্যার লক্ষ্যে বোমা হামলা করা হয়েছে সিলেটের গুলশান সেন্টারে, বোমা হামলা করা হয়েছে সিলেটের আরেক সাংসদ জেবুন্নেছা হকের বাসায়।
২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলাটা পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। নেওয়া হয়েছিল জিডি আকারে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে প্রায় ১৯ বার। আওয়ামী লীগকে রাজনীতি থেকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে সব আয়োজন করেছে বিএনপি। এমন কোনো পথ বাকি নেই, যেপথে তারা হাঁটেনি। এমনকি জঙ্গিদেরও উত্থান ঘটিয়েছে তারা। সেই দলটিকে কেন মানুষ পছন্দ করবে। কেন সমর্থন করবে? বিএনপির জঘন্য ষড়যন্ত্রের ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয় অত্যন্ত নির্মমভাবে। ছোট রাসেলও খুনীদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।
১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের পেছনের কুলশীলবদের একজন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের বিচার যাতে না হয় সেজন্য খুনি খন্দকার মোস্তাক ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল। পরবর্তীতে সেই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করেছিলেন সামরিকজান্তা জিয়াউর রহমান। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরিও দিয়েছিলেন তিনি। এত এত ষড়যন্ত্র, অপকর্ম আর হত্যা মানুষ কিভাবে সহ্য করবে?
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের লালনপালন, পৃষ্ঠপোষকতা মানুষ ভালো চোখে নেয়নি। মানুষ মেনে নিতে পারেনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ অন্যান্য বোমা হামলা আর গ্রেনেড হামলা। বিএনপির নেতারা এসব কুকর্ম করে তারা নিজেরাই নিজেদের পায়ে কুড়াল মেরেছেন।
আর সর্বশেষ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী জামাতকে পৃষ্ঠপোষকতা, আগুন সন্ত্রাস এবং পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা এবং সরকারের গৃহীত নানান উন্নয়নকাজের বিরোধিতাসহ নানান কুকর্ম করে বিএনপি এবং বিএনপির নেতারা জনগণ থেকে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন।
ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, আজ তারা নিজেরা স্বীকার করছে ‘সাধারণ মানুষ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, বিয়ের জন্য মেয়ে দিতে চায়না।’