Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনার ২০২০: প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এগিয়েছে বাংলাদেশ


৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ১৮:১৮

২০২০ সাল জুড়ে সারা পৃথিবীতে মহামারি করোনাভাইরাস তাণ্ডব চালিয়েছে। এর ছোবল থেকে বাদ যায়নি প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশও। তবে চীনে করোনাভাইরাস আবির্ভাবের পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা মোকাবিলায় কাজ শুরু করেন। যার কল্যাণে বাংলাদেশ করোনাভাইরাস মোকাবিলায় দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম এবং বিশ্বে ২০-তম দেশ হিসেবে সফল হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই করোনাভাইরাসের মধ্যেও অর্থনীতির চাকা থেমে থাকেনি। বরং এই খাতে বাংলাদেশ সফল হয়েছে। তাই মনে পড়ে, ‘মেঘ দেখে কেউ করিসনে ভয়, আড়ালে তার সূর্য হাসে।’ আমাদের সফল প্রধানমন্ত্রী করোনাভাইরাসকে মোকাবিলায় ভয় পেয়ে বসে থাকেন নি। বরং এটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে প্রত্যেক ক্ষেত্রে সফলতা, সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছেন।

বিজ্ঞাপন

করোনা মোকাবিলার সক্ষমতা বিষয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে বহির্বিশ্বের নানা দেশ নানা মন্তব্য করেছিল। এমনকি বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ছড়ালে দেশে দুর্ভিক্ষ তৈরি হবে এমন কথাও বলেছিলো। এ দেশ আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু বাস্তবে ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটেছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যখন করোনাভাইরাস মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছিলো, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায়।

বিজ্ঞাপন

এই করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সকল সেক্টরের কাজের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগকেও সমানতালে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। যখন দেশে প্রথমবারের মত করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়, তখন থেকেই দলের নেতাকর্মীকে সর্বস্তরের মানুষের পাশে দাঁড়াতে বলেন। তারপর থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ মানবতার সেবায় নেমে পড়ে। মানুষের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া, মাস্ক, স্যানিটাইজার বিতরণসহ নানা কর্মসূচি পালন করে। যখন মৃত মানুষের সৎকারে কেউ এগিয়ে না এসে অবহেলা করে, তখন যুবলীগ, ছাত্রলীগ সৎকারের ব্যবস্থা করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সার্বিক নির্দেশনা নিয়ে সকল নেতাকর্মী এখন পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন। যুবলীগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা নিয়ে শেখ ফজলে শামস পরশ ও মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নেতৃত্বে মানবিক যুবলীগ হিসেবে এই করোনাকালে কাজ করে গেছে।

২০২০ সাল পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, গত ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ আক্রান্ত তিন রোগী শনাক্ত হন। ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয় সাধারণ ছুটি, শেষ হয় ৩০ মে। গণপরিবহন চলাচল শুরু হয় ১ জুন। ৬৬ দিন পর সচল হয় ঢাকা। তবে সামাজিক দুরত্ব, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবুও মহামারি করোনার মধ্যেও নানা প্রতিকূলতা পার করে এগিয়েছে বাংলাদেশ।

পদ্মা সেতু
নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ‘দিন বদলের সনদ’ নামে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি ছিল। ক্ষমতায় আসার পর সে অনুযায়ী কাজও শুরু করে আওয়ামী লীগ সরকার। তবে কাজ শুরুর আগেই ওঠে দুর্নীতির কথিত অভিযোগ। একই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। বিদেশি অর্থায়ন নিয়ে চলে নানা জটিলতা। এক পর্যায়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ। পিছিয়ে পড়ে প্রকল্প। ঋণচুক্তির পাঁচ মাসের মাথায় দুর্নীতির অভিযোগ এনে ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন স্থগিত করে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখানেও থেমে থাকেননি। বরং নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার ঘোষণা দেন। যার ফলে গত ১০ ডিসেম্বর অবশেষে দৃশ‌্যমান হয়েছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। তবে করোনাভাইরাসের কারণে পদ্মা সেতুর কাজ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেষমেশ সবকিছু পার করেই এই করোনাকালে স্বপ্নের পদ্মা সেতু দেশবাসিকে আলাদা একটা বিজয়ের আনন্দ দিয়েছে।

রেকর্ড বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ
করোনা সংকটের মধ্যে প্রবাসীরা কষ্ট করে অর্থ পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল রেখেছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪২.০৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। গত এক বছরে রিজার্ভ বেড়েছে ১ হাজার কোটি ডলারের বেশি। ২০১৯ সালের ১৫ ডিসেম্বর রিজার্ভ ছিল ৩২ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ এখন যে ধরণের অর্থনৈতিক বিকাশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে ২০৩৫ সাল নাগাদ দেশটি হবে বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতি। ব্রিটেনের অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর ইকোনোমিকস এন্ড বিজনেস রিসার্চ তাদের সর্বশেষ এক রিপোর্টে এই পূর্বাভাস দিয়েছে। ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক লীগ টেবল ২০২১’ নামের এই রিপোর্টটি প্রকাশ করা হয়।

ক্ষুধা ও অপুষ্টি দূরীকরণে অগ্রগতি
ক্ষুধা ও অপুষ্টি দূরীকরণে গত এক বছরে বড় ধরণের অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশের। বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে এবার ১০৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৭৫-তম; যা গত বছর ছিল ৮৮-তম। অর্থাৎ গত বছরের চেয়ে বাংলাদেশ ১৩ ধাপ এগিয়েছে। কয়েক বছর ধরেই ক্ষুধা দূরীকরণে ধারাবাহিক উন্নতি করছে বাংলাদেশ। এই সূচকে প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে কয়েক বছর ধরেই। তবে বাংলাদেশের সার্বিক ক্ষুধার মাত্রা এখনও ‘গুরুতর’ পর্যায়ে রয়েছে।

মানব উন্নয়ন সূচকে এগিয়েছে
মানব উন্নয়ন সূচকে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। মানব উন্নয়ন সমীক্ষা-২০২০ এ গত বছরের চেয়ে আরও ২ ধাপ এগিয়ে ১৩৩তম অবস্থানে রয়েছে। দক্ষিণ এশীয় ৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। তবে পরিবেশের প্রভাবজনিত সমন্বিত মানব উন্নয়ন সূচক অনুযায়ী আরও ৯ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, মানব উন্নয়নে বাংলাদেশের অর্জন অসাধারণ। ১৯৯০-২০১৯ সাল পর্যন্ত মানব উন্নয়ন সূচক শতকরা ৬০.৪ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের সূচকের মান মধ্যম সারির দেশগুলোর গড় মানের চেয়ে বেশি ছিল।

২০২০ সাল ছিল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যাওয়ার। নতুন বছর নতুন বার্তা নিয়ে প্রতিটা মানুষের জীবনে সুখ, শান্তি বয়ে আনুক সেই প্রত্যাশা রইলো।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু

লেখক- সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগ

বিজ্ঞাপন

মানুষের হিংস্রতা কেন বাড়ছে?
২৪ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৪১

আরো

সম্পর্কিত খবর