Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশের উন্নয়নে অর্থপাচার রোধ করা প্রয়োজন

কবিতা রাণী মৃধা
৭ জানুয়ারি ২০২৩ ১৪:৫০

পারিবারিক সামাজিক জীবনে ও দেশের উন্নয়নে অর্থ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। বর্তমান সমাজের প্রত্যেকটি মানুষের অতি প্রয়োজনীয় জিনিস হচ্ছে অর্থ। আর এই অর্থ অর্জনের তাগিদে প্রত্যেকটা মানুষ একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করে চলছে। আর প্রতিযোগিতায় প্রতিযোগী হিসেবে থাকছে নিজেদের আপনজন যেমন – ভাইয়ের সাথে ভাই, বোনের সাথে ভাই ইত্যাদি। এই অর্থের কারণেই তৈরি হচ্ছে হিংসাদ্বেষ পরিবেশ। মানুষের মধ্যে থাকছে না কোনো সততা, কোনো মানবতা। পূর্বে মানুষের অর্থের পরিমাণ কম থাকলেও একে অপরের প্রতি কিছুটা সহানুভূতি ছিল যা বর্তমান সময়ে চোখ পড়ে না বললেই চলে। তাহলে বলা যেতে পারে সমাজ পরিবর্তনের একটি প্রধান কারণ হচ্ছে অর্থ।

বিজ্ঞাপন

প্রতিটি দেশের উন্নয়নের অতীব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে অর্থ। অর্থ ছাড়া যেমন পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে উন্নয়ন করা সম্ভব নয় তেমনি দেশের উন্নয়নও সম্ভব নয়। কারণ হিসেবে বলবো যে পারিবারিক জীবনে উন্নয়ন হওয়া মানে সমাজের উন্নয়ন। আর সমাজের একটি প্রধান উপাদান হচ্ছে পরিবার। তাহলে বলা যায় পারিবারিক জীবনের উন্নয়ন মানে সামাজিক উন্নয়ন। আর এই সামাজিক উন্নয়নই ধীরে ধীরে দেশের উন্নয়নে প্রধান ভূমিকা পালন করবে। তাই একটি দেশের উন্নয়নের জন্য দেশের প্রতিটি পরিবারের উন্নয়ন আগে করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বের ৭ম দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতির একটি দেশ। তাহলে আমরা বলতে পারি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভাবে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের লোকজন যারা নিম্ন আয়ের তারা কোনোমতে বেঁচে আছে আধপেটা খেয়ে। আর যারা উচ্চস্তরের লোকজন তারা আগের চেয়ে বেশি আয় করছে। আর আয় করা এই অর্থ তারা বিদেশে পাচার করছে। বিশ্বের উন্নত রাষ্ট্রে অর্থ পাচার করে সেখানে বাড়ি, গাড়ি তৈরি করছে। তার একটা উৎকৃষ্ট উদাহরণ হিসেবে বলতে পারা যায় কানাডার বেগম পাড়ার কথা। তাছাড়া অন্যান্য দেশ গুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, হংকং-চীন৷ যেখানে বাস করেম বাংলাদেশের সব নামি-দামি মানুষজন। এখানে আমি প্রথমেই বলবো বাংলাদেশের অর্থ পাচার করার কারণে দেশের অর্থের পরিমাণ কমে যাচ্ছে যা দেশের উন্নয়নের প্রধান বাধা হিসেবে ধরতে পাড়ি। কারণ এই অর্থ যদি দেশের মধ্যেই থাকতো আর সেগুলো যদি দেশেই বিনিয়োগ করা হতো তাহলে নিম্নআয়ের জনগণ রোজগার বেশি করতে পারতো আর সুস্থ জীবন যাপন করতে পারতো। তাছাড়া এই অর্থ দেশের মধ্যে থাকলে সরকারকে যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করতে হতো না। এতে যেমন সাধারণ জনগণের ভোগান্তি কমতো তার সাথে দেশের উন্নয়নেরও সুযোগ তৈরি হতো।

গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্ট্রিগ্রিটি (জিএফআই) তথ্যানুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে ৭৫৩ কোটি ৩৭ লাখ ডলার পাচার হয়। বর্তমান বাজারদরে (১০০ টাকায় প্রতি ডলার) এর পরিমাণ ৭৫ হাজার কোটি টাকারও অধিক।গড় অর্থ পাচারের হিসাবে ১৩৫টি উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৩৩তম। (দৈনিক প্রথম আলো, ১১ জুলাই ২০২০, ‘টাকা পাচার কেন করে, কীভাবে করে’)। এভাবে দিনের পর দিন দেশের অর্থ পাচার হতে থাকলে দেশের উন্নয়ন কখনোই সম্ভব নয়।

বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় একটি অংশ হচ্ছে রেমিট্যান্স ও তৈরী পোশাক শিল্প খাত। তাছাড়া আরোও অন্যান্য কিছু খাত রয়েছে যেমন – ঔষধ, পাট, ইলেকট্রনিক, চামড়া, কাগজ, চা ইত্যাদি। এই খাতগুলিতে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজে লাগানো হয় কিন্তু দেশের অর্থই পাচার হয়েই যাচ্ছে যার কারণে উন্নয়নে বাঁধা পড়ছে। তাই সরকারের উচিত চলমান মহামারীর এবং দারিদ্রতার সময়ে অর্থ পাচার রোধ করা এবং পাচারকীত অর্থ দ্রুত দেশে ফেরত আনা।

লেখক: শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

কবিতা রাণী মৃধা দেশের উন্নয়নে অর্থপাচার রোধ করা প্রয়োজন মুক্তমত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর