প্রকৃতির আশীর্বাদ সুন্দরবন, রক্ষা করা জরুরি
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:২৬
দক্ষিনাঞ্চল ছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মানুষের কাছে সুন্দরবন শুধুমাত্র ট্যুরিজম স্পটের মতই। যেখানে তারা ঘুরতে যায়, অ্যাডভেঞ্চার নিতে যায়। হ্যাঁ, এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে সুন্দরবন ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য প্রিয় একটি জায়গা যেখানে পরতে পরতে রয়েছে জীব বৈচিত্রের অপার সমাহার।
এই দিকটি ব্যতীত সুন্দরবনের আরেকটি দিক রয়েছে যেটি সুন্দরবন ও তার আশেপাশের অঞ্চলের মানুষের জন্য স্রষ্টার অপার আশীর্বাদ স্বরুপ। শুধু ওই অঞ্চলের মানুষের জন্যই নয়, সুন্দরবন তো গোটা বাংলাদেশের জন্যই আশীর্বাদ। বাংলাদেশের উপর কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ আঘাত হানার আগে তাকে অতিক্রম করতে হয় সুন্দরবন। সুন্দরবন তখন তার সৌন্দর্যের রূপ ত্যাগ করে হয়ে ওঠে বাংলাদেশের রক্ষাকবচ।
এর বাইরে দেশের যে তিন জেলায় (সাতক্ষীরার, খুলনা ও বাগেরহাট) সুন্দরবন বিস্তৃত, এসব জেলার মানুষের জীবন ও জীবিকার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে সুন্দরবনের নাম। মাছ ধরা, কাকড়া শিকার, গোল কর্তন, কাঠ সংগ্রহ, মধু সংগ্রহসহ নানাভাবে সুন্দরবনে সাথে মানুষের জীবনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া এ বনকে জালের মত জড়িয়ে রয়েছে সামুদ্রিক স্রোতধারা, কাদা চর এবং ম্যানগ্রোভ বনভূমির লবণাক্ততাসহ ছোট ছোট অনেক দ্বীপ। সুন্দরবন সম্পর্কে বলা হয়ে থাকে এর ‘জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ।’
৫৬০তম রামসার সাইট হিসেবে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত প্রাকৃতিক ও জীব বৈচিত্রের অনন্য নিদর্শন বিশ্বের বৃহৎ এ ম্যানগ্রোভ বনভূমির উপর ১০ লাখেরও বেশি মানুষের জীবন-জীবিকা নির্ভরশীল। এ বনভূমির সুরক্ষার অন্যতম অনুষঙ্গ একদিকে যেমন বাঘ, অন্যদিকে এ সুন্দরবনই ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে দক্ষিণ বঙ্গকে রক্ষা করে।
প্রকৃতির এ অপরূপ দান সুন্দরবনকে রক্ষা করা জরুরি। আসুন সুন্দরবন দিবসে আমরা নিজেরা সুন্দরবন রক্ষায় সচেতন হই, অপরকে সচেতন করি। সুন্দরবন বাঁচলে বাঁচবে দেশ।
লেখক: শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মী
সারাবাংলা/এজেডএস