গাড়িশিল্পে দ্রুত জায়গা দখল করছে চীন-ইরান
২১ মে ২০২৩ ১৮:৪৫
চীন এবছরের প্রথম প্রান্তিকে জাপানকে পেছনে ফেলে শীর্ষ গাড়ি রফতানিকারক দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বৈদ্যুতিক গাড়ি রফতানিতে এই তিন মাসে তাদের প্রবৃদ্ধি ঘটেছে প্রায় ৯০ শতাংশ। তারা আশা করছে ২০২৩ সালে ৪০ থেকে ৪৫ লাখ গাড়ি রফতানি করবে।
গাড়ি রফতানিকারক হিসেবে শীর্ষে আসার পেছনের কারণ হচ্ছে চীন বর্তমানে বৈদ্যুতিক গাড়ির (ইভি) ব্যাটারির বাজারে আধিপত্য বিস্তার করছে। দেশটি এই বাজারের ৫৬ শতাংশ যোগান দাতা হিসেবে কাজ করছে। ইভি ব্যাটারি প্রস্তুতকারক শীর্ষ ১০টি কোম্পানির চারটিই চীনের। চীনের ইভি ব্যাটারি প্রস্তুতকারক কোম্পানি সিএটিএল সারাবিশ্বে একাই ৩৪ শতাংশ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করছে। ২০০৯ সাল থেকেই চীনা সরকার এই খাতে নানান রকম প্রণোদনা দিয়ে আসছে, যার ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালে তারা শীর্ষ গাড়ি রফতানিকারক দেশ হিসেবে উঠে এল।
মজার ব্যাপার হলো, ইভি ব্যাটারির কাঁচামাল লিথিয়াম উৎপাদনে বিশ্বে ১ নম্বর অবস্থানে আছে চিলি। আর্জেন্টিনা, চিলি এবং বলিভিয়া সম্মিলিতভাবে ‘লিথিয়াম ত্রিভুজ’ হিসেবে পরিচিত। কারণ তাদের কাছে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি লিথিয়ামের মজুদ রয়েছে। চীনকে প্রায় ৮০ শতাংশ লিথিয়াম বিদেশ থেকে রফতানি করতে হয়। তাই তারা ২০৩০ সালের মধ্যে পুনর্ব্যবহারযোগ্য ইভি ব্যাটারির বাজার ২০.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে চাইছে। চীনা কোম্পানিগুলো ব্যাটারি পুনর্ব্যবহারের জন্য দক্ষিণ কোরিয়া, ইউরোপ, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনামসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোকে বেছে নিচ্ছে।
একটি বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরির খরচের প্রায় ৪০ শতাংশ ব্যাটারির পেছনে ব্যয় হয়। আর তাই খরচ কমানোর কথা চিন্তা করে আরেকটি চীনা গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানি বিওয়াইডি নামক একটি পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রক্রিয়া তৈরি করেছে যা একটি ব্যাটারিতে ব্যবহৃত ৯০ শতাংশ পর্যন্ত উপকরণ পুনর্ব্যবহার করতে পারে। বিওয়াইডি আশা করছে এই বছরের ভেতরেই তারা টেসলাকে পেছনে ফেলতে পারবে, কারণ তারা এ বছর প্রায় ৩ থেকে ৩৬ লাখ ইভি গাড়ি উৎপাদন করবে। উল্লেখ্য, টেসলার চাইতে কম দামে গাড়ি তৈরি করে চীন। ২০২৩ সালে টেসলার আনুমানিক গাড়ি উৎপাদন হবে ১৮ লাখ।
উল্লেখ্য যে, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া এবং চেক রিপাবলিককে পেছনে ফেলে ইরান ছিল ২০২২ সালের হিসেবে বিশ্বের ১৬তম বৃহৎ গাড়ি তৈরির দেশ। আর তৈরি বৃদ্ধি হারের দিক থেকে ইরান ছিল ৬ষ্ঠ অবস্থানে। ইরানে তৈরিকৃত গাড়ির দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় পড়ছে ৬ থেকে ১৩ লাখ টাকার কাছাকাছি। পরিবেশবান্ধব বা প্রযুক্তিগত দিক থেকে ইরানি গাড়িগুলো সেরকম উচ্চমানের না হলেও ২০২২ সালের শেষ দিকে ইরান রাশিয়ার সঙ্গে ৩ কোটি ডলারে ৩০,০০০ গাড়ি বিক্রির চুক্তি করেছে। জ্বালানি খাতের পর গাড়ি শিল্পেই ইরানে সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান ঘটে। অন্যদিকে চেরি ব্র্যান্ড গাড়ি তৈরির জন্য প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ ডলার ইরানে বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে চীন।
সারাবাংলা/আইই