Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সবকিছু ‘নষ্টদের অধিকারে’ এবং আমাদের ভবিষ্যৎ

ইমরান ইমন
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৫০

বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে পদায়িত করা হয়েছে হিরো আলমকে। কী যোগ্যতাবলে তাকে এ পদে পদায়িত করা হয়েছে এবং কারা করেছেন ও কী উদ্দেশ্যে করেছেন—সে প্রশ্ন না ওঠে পারে না। হিরো আলমের ব্যক্তিগতজীবন বিশ্লেষণের দিকে বা তাকে নিয়ে কাঁদাছোড়াছুড়ির দিকে আমি যাচ্ছি না। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে একটি দলকে, সংগঠনকে, সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে—সার্বিকভাবে দেশকে। পাশাপাশি দেশের অনাগত সময় ও ভবিষ্যত প্রজন্মকে।

বিজ্ঞাপন

এ থেকে সহজেই অনুমেয়—কী ধরনের প্রজন্ম আমাদের নীতিনির্ধারকরা চান! হিরো আলম গংদের মতো যারা দেশকে এবং দেশের শিল্প-সংস্কৃতিকে নেতৃত্ব দিবেন বা তাদেরকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা হবে—তখন দেশ সার্বিকভাবে কোথায় নিমজ্জিত হবে সেটা সহজেই অনুমেয়। কারা দেশকে রসাতলে ফেলতে চান!

হিরো আলমকে নিয়ে এই প্রথম আমি কিছু লিখলাম। এর আগে লিখিনি—তাকে লেখার ‘বিষয়বস্তু’ মনে করিনি বলে। কারণ, হিরো আলমদের নিয়ে লেখা মানে তাদের ‘প্রমোট’ করা। আমি প্রজন্মকে সে ধরনের ‘নেতিবাচক’ কিছু দিতে চাইনি কখনও। তাই সবসময়ই বলে গেছি সংকট ও সম্ভাবনার কথা। কিন্তু আজ আর না লিখে পারিনি।

হিরো আলম যখন উদ্ভট গানবাজনা করে সংগীতাঙ্গনকে কলুষিত করেছেন তখন তাকে কেউ থামাননি। তার হাত থেকে রক্ষা পায়নি স্বয়ং রবীন্দ্রনাথও!শেষমেশ সে রাজনীতিতেও ছোবল মেরেছে। তখন তথাকথিত সুশীল সম্প্রদায় কিছু বলেননি। মাঝখানে তার কর্মকাণ্ডে দেশে “রুচির দুর্ভিক্ষ” চলছে বলে কতিপয় লোক আওয়াজ তুলেছেন। কিন্তু সে “রুচির দুর্ভিক্ষ” বন্ধে তারা কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলেননি। শেষমেশ যখন তাকে মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক করা হয়েছে তখন সেই “রুচির দুর্ভিক্ষ” বলা লোকজনও নিশ্চুপ আছেন।

হিরো আলমের ডিশ আলম থেকে হিরো আলম হয়ে ওঠার ব্যক্তিগতজীবন ও সংগ্রামীজীবনকে আমি শ্রদ্ধা করি। সেখানে কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু যে জায়গায় তার যোগ্যতা নেই, সে জায়গায় কেন তিনি হাত দিবেন? শিল্প-সংস্কৃতির মতো সেন্সেটিভ ক্ষেত্রেও কেন তাকে ছোবল মারতে হবে, কেন কলুষিত ও প্রশ্নবিদ্ধ করতে হবে দেশকে? হিরো আলমের সর্বগ্রাসী প্রভাবের জন্য আমারই দায়ী। তাকে আমারই সুযোগ দিয়েছি, করেছি প্রমোট।

বিজ্ঞাপন

কী হবে আমাদের—আমাদের ভবিষ্যতের! উদ্ভূত পরিস্থিতিতে চোখের সামনে প্রজন্মের তিলে তিলে ক্ষয়ে যাওয়া ‘সম্ভাবনা’ আমাকে ভারাক্রান্ত করে তোলে। প্রজন্মের ‘চোখে চোখ রাখার’ সাধ্য নেই। অথচ এদের নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই।

মাঝে মাঝে আমি প্রচন্ড ভেঙে পড়ি, ভারাক্রান্ত হই—কেন শুধুই আমি এসব নিয়ে চিন্তা করি—কেন বলি-লিখি! আমারই বা কেন দেশের কল্যাণ নিয়ে, দেশের ভবিষ্যতে নিয়ে প্রজন্ম নিয়ে এতো চিন্তাভাবনা! শেষমেশ আমি কোনো উত্তর পাই না…

লেখক: কলামিস্ট

সারাবাংলা/এসবিডিই

‘সবকিছু নষ্টদের অধিকারে’ এবং আমাদের ভবিষ্যৎ ইমরান ইমন মুক্তমত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর