Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলার ক্রিকেটে কবে হবে বিতর্কের অবসান

মাজেদুল ইসলাম
২৭ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:৩৭

বিতর্ক আর বাংলাদেশের ক্রিকেট যেন একে অপরের সমার্থক। বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়েনা। এর নেপথ‍্যে কখনো বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু, হেডকোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহে, ক‍্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল কিংবা হালের লিটন কুমার দাস। ঘটিয়েছেন একেরপর এক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড।

সাম্প্রতিক সময়ে লিটন দাস টিম হোটেল থেকে সাংবাদিকদের বের করার দেয়ার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম দেন। সেই বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে ব্রিফিং করার কথা ছিল প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর। কিন্তু নানা টালবাহানায় তিনি গণমাধ্যমের সামনে আসেননি। বাংলাদেশের গণমাধ্যমকর্মীরা অপেক্ষমান ছিলেন যে নান্নু আসবেন কিন্তু শেষপর্যন্ত তিনি আসেননি। তিনি হারিয়ে গিয়েছিলেন ব্ল‍্যাকহোলের অতল গহ্বরে। যার ফলশ্রুতিতে পরদিন বিসিবির মুখপাত্র হিসেবে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন। তাকে লিটন দাসের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিসিবির পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়েছেন। এবং লিটন দাস তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে স্ট‍্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন তিনি এ ধরনের কার্যকলাপের জন্য অত্যন্ত দুঃখিত। মূলত বিসিবির চাপের মুখে তিনি এই স্ট‍্যাটাস দিয়ে দায় সাড়তে চেয়েছেন। কিন্তু এতে কি আর শাক দিয়ে মাছ ঢাকে।

বিজ্ঞাপন

সর্বনাশ যা হবার ততক্ষণে তা হয়ে গেছে! বিশ্ব মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হয়েছে নিজ দেশের সাংবাদিকদের গার্ড দিয়ে তাড়ালেন টাইগার ওপেনার। অথচ ক্রিকেটারদের টিম হোটেলের লবিতে সাংবাদিকদের প্রবেশশাধিকার দিয়েছে স্বয়ং আইসিসি। সেখানে কিনা লিটন দাস স্বদেশী গণমাধ্যমকর্মীদের বের করে দিতে বলেন। যা বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের জন্য লজ্জাজনক। এ ঘটনায় হোটেলের নিরাপত্তা কর্মী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন আপনাদের ক্রিকেটারই আপনাদের বের করে দিতে বলেছেন।

বিজ্ঞাপন

এধরনের কর্মকাণ্ড এবারই প্রথম ঘটাননি লিটন। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে র সামনে বিতর্কিত মন্তব‍্য করেছেন অনেকবার। লিটনের এমন আচরনে অস্বস্তিতে বিসিবি। শুধু বোর্ডই নয় লিটনের এমন আচরনে ঘরোয়া লিগে তার ক্লাব আবাহনী লিমিটেডও বহুবার পড়েছেন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। এছাড়াও গত ৬মে ২০২৩ “মেডিকেল ইর্মাজেন্সি নয় বউয়ের টানে আইপিএল ছেড়েছিলেন লিটন” এই শিরোনামে খেলাযোগের পেইজে আপলোড হওয়া একটি প্রতিবেদন দেখে এর তথ‍্যসূত্র যাচাই না করে খেলাযোগের উপর ক্ষোভ ছাড়েন লিটন। অথচ প্রতিবেদনটি করেছিল ভারতীয় গণমাধ্যম ‘এই সময়’ বিষয়টি প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছিল ‘খেলাযোগ’।

সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় পড়েছে বিশ্বকাপের মাঝপথে ব‍্যাক্তিগত কারণ দেখিয়ে ক‍্যাপ্টেন সাকিব আল হাসানের দেশে ফেরার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড়। কারণ ‘টি স্পোর্টস’ কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বিশ্বকাপের স্কোয়াডে তামিম ইকবালের না থাকা নিয়ে কথা বলেন, সেখানেও তার অপেশাদারিত্ব ফুটে উঠেছে। সেখানে তিনি সরাসরি তামিম ইকবালের দিকে আঙুল তোলেন। তিনি বলেন যে এ পর্যন্ত যারা কন্ট্রিবিউট করেছে অনুর্ধ ১৫ থেকে জাতীয় দল পর্যন্ত তাদের কাউকে দল থেকে বাদ দেয়া হয়নি। ব‍্যক্তির চেয়ে দল বড়। দলের স্বার্থ আগে। যা সাকিব আল হাসানের বিশ্বকাপের মাঝপথে দেশে আসায় বিতর্ককে উষকে দিয়েছে প্রবলভাবে।

এছাড়াও হেডকোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহে বিভিন্ন সময়ে মাশরাফি বিন মোর্তজা, তামিম ইকবালসহ আরো অনেকের অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে কোন রাখঢাক না রেখে কথা বলেন।

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু বিভিন্ন সময়ে দল নির্বাচনে বিতর্ক উসকে দিয়েছেন প্রবলভাবে।

বাংলাদেশের ক্রিকেট এবং ক্রিকেটারদের স্বার্থে বিসিবি সভাপতি, প্রধান নির্বাচক, হেডকোচসহ নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের যারা আছেন তাদের উচিত গণমাধ্যমের সামনে এসে বিতর্কিত মন্তব্য এবং কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকা। ক‍্যাপ্টেনেরও উচিত গণমাধ্যমে এসে কোনো সতীর্থের প্রতি ক্ষোভ না ঝাড়া। যা তার ব‍্যক্তিগত ইমেজকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। অন্যান্য খেলোয়াদের তার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কমে।

এর সাথে অন‍্যান‍্য ক্রিকেটারদেরও উচিৎ গণমাধ্যমের সামনে এসে বিতর্কিত মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা। না হলে এ কারণে জাতীয় দলের ড্রেসিংরুমের পরিবেশ হবে উচ্ছৃঙ্খল। এর প্রভাব পড়বে ক্রিকেটারদের পারফর্মেন্সে। এরফল ভোগ করতে হবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। যার দায় তারা কোনভাবেই এড়াতে পারেন না।

লেখক: শিক্ষার্থী, শেরপুর সরকারি কলেজ, শেরপুর

সারাবাংলা/এজেডএস

বাংলার ক্রিকেটে কবে হবে বিতর্কের অবসান মাজেদুল ইসলাম

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর