Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণই হোক বিজয়ের প্রথম চমক

কাজী মাসুদুর রহমান
১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৮:২৭

আভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক গভীর ষড়যন্ত্রের মধ্যদিয়ে অবশেষে ৭ জানুয়ারি ২০২৪ এ বহুল কাঙ্খিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সফল ভাবে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। ইতোমধ্যে বৈদেশিক পর্যবেক্ষকগণ এই নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক মানদন্ডে মূল্যায়ন করে প্রশংসায় ভাসাচ্ছ। এবারের নির্বাচনের বিশেষত্ব ছিল এই যে, বাংলাদেশ যখন ‘দারিদ্র’ এর অভিশাপ মুক্ত হতে পেরেছে তখন ‘উন্নয়নশীল’ নামক ‘নির্ভরশীল’ প্রবঞ্চনা দূরীকরণের চ্যালেঞ্জেও অনেক দূর এগিয়ে যাবে’- এমনই এক সংকল্প বাস্তবায়নের পথে ধাবিত করবে বলে সচেতন মহল আশা করে। এভাবেই নিকট ভবিষ্যতে পূর্ণস্বনির্ভর আত্নমর্যাদাশীল জাতি হিসাবে আমাদের আত্নপ্রকাশ ঘটবে-এমনই এক সোনালী সম্ভাবনায় সচেতন গোষ্ঠী দিনাতিপাত করছে। নিরপেক্ষ ও নির্মোহ বিচারে আওয়ামীলীগের টানা চতুর্থক্রম নির্বাচনী ইশতেহারগুলোতে এরকম স্বপ্ন ও সম্ভাবনা অনেকটাই প্রতিফলিত হয়ে আসছে।যেমন: ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে ‘দিন বদলের সনদ’ স্লোগানে ছিল ২০২১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার।সেটা অনেকটাই সম্ভব হয়েছে। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে ছিল ‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ‘ শিরোনামে মধ্যম আয়ের দেশ প্রতিষ্ঠা।তাও সম্ভব হয়েছে যা বাস্তবায়নের স্বীকৃতি স্বরুপ বাংলাদেশ এস ডি জি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য) এর মর্যাদা অর্জনে সক্ষম হয়েছে এবং এর লক্ষ্য মাত্রা অর্জনে সাফল্যের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের প্রতিবেদনে উন্নয়নশীল ১৬৬ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১০১ তম অবস্থানে উন্নীত হয়েছে।পাশাপাশি এম ডি জি (সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য) অর্জনেও বাংলাদেশ মর্যাদার আসনে উন্নীত হয়েছে।তথ্যমতে, এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সর্বোচ্চ সফল ৬০ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৮ তম।আবার, ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শিরোনামের স্লোগানে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ কে উন্নত সমৃদ্ধ দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছিল।সে লক্ষ্য অর্জনের পূর্বশর্ত হিসাবে অবকাঠামোগত খাতে বৈপ্লবিক উন্নয়ন সংঘটিত হয়েছে। অর্থাৎ, সে অঙ্গীকারও সাফল্যের সোপান বেয়ে দারুণ অগ্রসরমান।যেমন- নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু, রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যু প্রকল্প, মাতার বাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর, পায়রা সমুদ্র বন্দর, বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, অত্যাধুনিক বিমান টার্মিনাল, আন্তর্জাতিক মানের সড়ক যোগাযোগ, দৃষ্টি নন্দন উড়াল সেতুর মাধ্যমে রাজধানীর আধুনিকায়ন প্রভৃতি। এছাড়া বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে অত্যাধুনিক ডিজিটালাইজেশন সহ বিশ্বায়নের সাথে তাল মিলিয়ে আই সি টি ভিত্তিক দেশগড়ার লক্ষ্যেও সরকার অনেক দূর এগিয়েছে। উপরন্তু প্রান্তিক স্তরের মানুষ সহ সাধারণ জনগণের জীবন-মান উন্নয়নে সাফল্যের নিদর্শন তো আছেই।এর স্বীকৃতি স্বরুপ ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক ‘আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষিতে মানব উন্নয়ন সূচক’ এ প্রশংসনীয় অবদান রাখার কৃতিত্ব স্বরূপ বাংলাদেশ এল ডি সি(লিষ্ট ডেভেলপ্ড কান্ট্রিজ) বা স্বল্পোন্নত দেশের তকমা কাটিয়ে অগ্রসরমান উন্নয়নশীল দেশের ঐতিহাসিক মর্যাদার চুড়ান্ত অনুমোদন পায় যা ২০২৬ সাল হতে কার্যকর হবে।এই উত্তরণ ছিল বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের দীর্ঘ লালিত রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ [বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন লালন করতেন] রুপকল্প(ভিশন)-২০২১ এর সফল বাস্তবায়ন। সার্বিক উন্নয়নের এমন ম্যাজিক মোশনে উচ্ছ্বসিত হয়ে জাতিসংঘ, বিশ্ব ব্যাংক,আই এম এফ সহ সকল দাতা গোষ্ঠী বাংলাদেশ কে ‘ উন্নয়নের রোল মডেল’ স্বীকৃতি দিয়ে ভূয়সী প্রশংসায় ভাসাচ্ছে যা সত্যিই ঈর্ষনীয় কৃতিত্বের দাবি রাখে।পৃথিবীর সকল উন্নয়নশীল দেশের কাছে এবং এমনকি দাতা গোষ্ঠীদের কাছেও বাংলাদেশ এখন এক অনুস্মরণীয় ও অনুকরণীয় দেশে পরিণত হয়েছে।এতো দ্রুত সময়ে বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতাকে তারা তাদের দাপ্তরিক কার্যক্রমে অন্তরভুক্ত চায়।সর্বশেষ করোনা মহামারী ও তৎসংশ্লিষ্ট বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলা করে বাংলাদেশ যেভাবে তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখছে তা উন্নত দেশগুলোকেও রীতিমতো বিষ্মিত করে তুলেছে।এমনই এক গৌরবান্বিত সন্ধিক্ষণে এই দ্বাদশ নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ‘ স্মার্ট বাংলাদেশ :উন্নয়ন দৃশ্যমান বাড়বে এবার কর্ম সংস্থান’ স্লোগানে মোট এগার দফার টানা চতুর্থতম ইশতেহার ঘোষণা দিয়ে চলমান উন্নয়নকে কাঙ্ক্ষিত স্তরে পৌঁছে দিতে উন্নত দেশগুলোর মতো এদেশকে একটি স্মার্ট দেশ ও জাতিতে পরিণত করার সুদৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক কে আহবায়ক করে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি প্রায় তিন মাস ব্যাপি গবেষণা করে এই ইশতেহার প্রণয়ন করেছেন।ইশতেহারের প্রথম দফায় বলা হয়েছে, ‘দ্রব্যমূল্য সকলের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।’ উন্নয়নের স্বপ্নিল বিলাসে তরুণ প্রজন্ম যখন একটি সুন্দর ভবিষ্যতের প্রত্যাশায় আনমনে আল্পনা এঁকে চলেছে ঠিক তখন ইশতেহারে দ্রব্যূল্যের ইস্যুটি (তাও আবার ১ নং দফায়) অনেককে হতবাক করেছে।কেননা, ১ নং এ বড় কোনো স্বপ্ন ও সম্ভাবনার কথা থাকতে পারতো বৈকি। হ্যাঁ, উন্নয়নের মহাযজ্ঞকে জনমনে অযোগ্য করে দেয়ার জন্য দ্রব্যমূল্যের অবাধ উর্ধ্বগতিই যথেষ্ঠ। দেশে বর্তমানে এ এক গণজ্বালাময়ী ইস্যু।আওয়ামীলীগ এটা হাড়ে-হাড়ে বুঝতে পেরেছে।তাই এটা ১ নং দফায় রাখতে হয়েছে।এই রাখার মাধ্যমে প্রকারান্তরে এটাও প্রতীয়মান হলো যে, আওয়ামী সরকার এটা নিয়ন্ত্রণে বিগত দিনে বেশ ব্যর্থ!তাই আগামীতে এটার নিয়ন্ত্রণকে তারা কঠোর চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছে। সচেতন মনে প্রশ্ন জাগে- দ্রব্যমূল্যের মতো এমন গণমুখী ও দৈনন্দিন স্পর্শকাতর ইস্যু সমাধান কল্পে কেন চলমান সরকারের দলীয় নির্বাচনী ইশতাহারে আশ্রয় নিতে হবে?এটা নিয়ন্ত্রণ করাটাতো সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের রুটিন ওয়ার্ক।তাহলে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের মতো এমন বিশাল রাস্ট্রযন্ত্র কেন ব্যর্থ হয়েছিল?বলা যায় বিগত সরকারের প্রায় পুরো মেয়াদকালটাই বাজারের মূল্যস্ফীতির কোপানলে আবর্তিত হতে হয়েছে।করোনা মহামারি ও ইউক্রেন- রাশিয়ার যুদ্ধের দোহাই দিয়ে মূল্য স্ফীতি যতটা বেড়েছে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে সিন্ডিকেটের কারসাজিতে যা আর বলার অপেক্ষা থাকেনা।গভীর পর্যবেক্ষণে বার বার এই তথ্যটাই উঠে এসেছে।মনে হয় একটা শিশুও এখন বাজার সিন্ডিকেট বিষয়ে ওয়াকিবহাল। তথ্যমতে, সর্বশেষ ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে এই স্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৬৪ শতাংশে। অথচ এসময়ে সরকারের লক্ষ্য মাত্রা ছিল বেশ কম অর্থাৎ ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।পরে সরকার তা ৭ শতাংশে পুনঃনির্ধারণ করলেও বর্তমানে তা আরো অনেক বেশীতে দাঁড়িয়েছে।সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সিন্ডিকেটের কাছে সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি ও কৃষি মন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাকের বারংবার প্রকাশ্য অসহায়ত্ব দেশবাসীকে বেশ হতবাক করেছিল।এমন কি সংসদেও বাণিজ্য মন্ত্রীকে প্রবল তোপের মুখে পরতে হয়েছিল।সরকারের বেঁধে দেওয়া দামেও কোনো কাজ হয়নি।ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে দিগ্বিদিক ছুটতে দেখা গেলেও তাতেও কাজ হয়নি।আশ্চর্যের বিষয় হলো, যখন দু’একটি পণ্যের দাম কয়েকদিনের জন্য কিছুটা কমে তখন পাশাপাশি অন্য কয়েকটির দাম হুহু করে বেড়ে ওঠে! এমনকি আলু পেঁয়াজের মতো অতিনিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আমদানি করে বাজার ভারসাম্য রক্ষার উদ্যোগ নিয়েও কোনো কাজ হয়নি। শুধু গত একবছরেই সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা শুধুমাত্র আলু, পেঁয়াজ ও ডিম হতে কয়কে হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত মুনাফার নামে লোপাট করেছে সাধারণ ভোক্তাদের পকেট কেটে! উল্লেখ্য চলতি ভরা মৌসুমেও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সাধারণের নাগালের বাইরে যা রীতিমতো হতবাক করে!এখন মৌসুমি আলু পেঁয়াজ বাজারে উঠেছে। সেই হিসাবে আলুর দাম কেজি প্রতি সর্বোচ্চ ২০ – ৩০ টাকা হওয়ার কথা। অথচ ৫০-৬০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। নতুন পেঁয়াজের দাম শুরুতেই কেজি প্রতি ৬০ টাকার নীচে থাকার কথা কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০/ টাকায়। পেঁপে ও মূলা বাদে প্রায় সকল সবজির দাম এখন ৫০ টাকার উর্ধ্বে।সবমিলিয়ে সংখ্যাধিক্য মধ্যবিত্তদের নাভিশ্বাস চড়মে উঠেছে। আর নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত দের কথা তো বাদই দিলাম।সর্বশেষ বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর কয়েক দফা নির্দেশও কোনো কাজে আসেনি।মনে হচ্ছে এসকল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটরা সরকারকে অগ্রাহ্য করে স্বায়ত্বশাসনের একটি শোষক বলয় সৃষ্টি করে রেখেছে।তারা সরকারকে থোরায় তোয়াক্কা করে।প্রশ্ন হলো, এদের এতো শক্তির উৎস কোথায়? উৎপাদন, মজুত ও বাজার সংশ্লিষ্ট দুই মন্ত্রী থাকতে কেন বারবার প্রধানমন্ত্রী কে হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে ?সেই হস্তক্ষেপও আবার কেন বুমেরাং হয়ে যাচ্ছে? তাহলে কে বা কারা প্রধানমন্ত্রী সহ তাবৎ সরকারকে তৃণমূলে স্তরেও বিতর্কিত করাচ্ছে?কেন বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা হচ্ছেনা?যেখানে এই সরকার জঙ্গিবাদের মতো ভয়ংকর আন্ডারগ্রাউন্ড নেটওয়ার্ক কে গুঁড়িয়ে দিয়ে প্রায় শতভাগ সাফল্যের পরিচয় দিচ্ছে এবং বিশ্ব ব্যাপী নন্দিত হচ্ছে সেখানে ওপেন গ্রাউন্ডের গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর সমন্বয়ে সৃষ্ট বাজার সিন্ডিকেট বা নেটওয়ার্ক কে কেন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা?এর রহস্য কোথায়?খোদ আওয়ামীলীগ ও সরকারের মধ্যেও বাজার ইস্যু নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।এই সাবেক দুই মন্ত্রীর ব্যর্থতার দায় কেন ধারবাহিক উন্নয়নে নন্দিত-সরকার ও আওয়ামীলীগ ঘাড়ে নিয়ে নিন্দিত হবে?কেন তাদের কারণে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে তিলে তিলে গড়ে ওঠা উন্নয়নের এই বীরোচিত কৃতিত্ব জনমনে ম্লান হতে যাবে? নির্বাচনকে ঘিরে আভ্যন্তরীন ও বৈদেশিক ষড়যন্ত্রের দাবদাহ কিছুদিন আগেও বেশ জ্বাজ্জল্যমান ছিল; কিন্তু তার রেশ এখনো শেষ হয়নি। ভরা মৌসুমেও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের এমন অসহনীয় উত্তাপ জনগণের মনকে বিষিয়ে তুলে ষড়যন্ত্রের পালে যেন পাগলা হাওয়া যোগাতে না পারে সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে! সে লক্ষ্যে রীতিমতো নির্বাচন বিরোধী গোষ্ঠীরা এই জ্বলন্ত ইস্যুটাকে বেশ কাজে লাগাতে ওঁৎ পেতে আছে। এটাকে খাটো করে দেখার নুন্যতম কোনো সুযোগ নেই- যেমনটা ঘটেছিল বঙ্গবন্ধুর ‘৭৪ এর অগ্রগামী শাসনামলে। বঙ্গবন্ধু ও তার সরকারকে জনমনে বিষিয়ে তোলার জন্য তৎকালীন দলের ও সরকারের ভিতরের মুখোশধারী,বাইরের দেশবিরোধী অপশক্তি এবং বৈদেশিক অপশক্তির ত্রিমুখী ষড়যন্ত্রে বাজার ব্যবস্থাপনাকে চরম ভাবে ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছিল!’৭৫ এর ঘৃণ্যতম প্রেক্ষাপট সৃষ্টির অন্যতম পূর্ব কুপরিকল্পনা হিসাবে তখন বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা হয়েছিল। খাদ্যে ঘাটতি না থাকা সত্ত্বেও সীমাহীন লুটপাট ও অব্যস্থাপনায় চরম অসন্তোষ সৃষ্টি করা হয়েছিল।বঙ্গবন্ধু নিজেই শিশু সুলভ মানসে অকপট বলেছিলেন, ” আমি ভিক্ষা করে আনি; তাও চাটার গুষ্টি চাইটে খাইয়ে ফেলায়া দেয়; আমার গরীব পায়না।”

বিজ্ঞাপন

দেশবিরোধী অপশক্তি কুরাজনীতির নোংরা খেলায় ‘৭৪ এর সেই দূর্বিষহ উদাহরণ কে আজো টেনে আনে।বলা বাহুল্য, ৭২ থেকে ৭৫ পূর্ব কুরাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের চেয়ে বর্তমান ষড়যন্ত্রে’র কুটিলতার গভীরতা অনেক বেশী।কেননা,অপশক্তিদের শেকড় ও ডাল-পালা সময়ের আবর্তে এখন অনেক গভীরে গ্রথিত ও বিস্তৃত। উল্লেখ্য, অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে ঘিরে দেশকে আবার অস্থিতিশীল করার জন্য পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীরা আভ্যন্তরীন অপশক্তিদের যোগসাজশে ওঁৎ পেতে আছে! উদ্দেশ্য- ভূরাজনৈতিক হীনস্বার্থ চরিতার্থে আজ্ঞাবহ পুতুল সরকার গঠন করা। এদিকে আভ্যন্তরীন অপশক্তিদের হীনউদ্দেশ্য হলো- এদের সহোযোগিতায় ‘ ৭১ এর গ্লানিকর পরাজয়ের প্রতিশোধ নেওয়া। নিয়ন্ত্রণহীন বাজার যেন সেই চক্রান্তের খোরাক না হয়ে ওঠে’- নতুন সরকারকে এ বিষয়ে এখনি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। কেননা, খাদ্যের অপ্রতুলতায় কখনো-কখনো পূর্ণিমার চাঁদও ঝলসানো রুটির মত অনুভূত হয়(কবি সুকান্তের অনুভবে);সেখানে উন্নয়ন তো দূরের কথা! ফলে, এহেন পরিস্থিতি সরকারের সকল উন্নয়ন-সাফল্য ম্লান করে দিয়ে অপশক্তির ষড়যন্ত্র কে ত্বরান্বিত করতে পারে। নবনির্বাচিত সরকার দ্রুততম সময়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে ষড়যন্ত্রের শেকড় উপড়ে ফেলে ধারাবাহিক উন্নয়নের সুখময় দ্যুতি জনমনে ছড়িয়ে দেবে- এই শুভ প্রত্যাশায় আমরা।

বিজ্ঞাপন

লেখক: কলামিস্ট

সারাবাংলা/এসবিডিই

কাজী মাসুদুর রহমান দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণই হোক বিজয়ের প্রথম চমক মুক্তমত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর