Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডিমের উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থাপনায় সংকট

ড. মিহির কুমার রায়
১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:৩৪

ডিমের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে এবং ইহা সাধারণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে । বলছে কারা ডিমের দাম বাড়িয়েছে, ডিমের বাজার অস্থিতিশীল করছে। ইচ্ছামতো অসাধু ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছে। লুটে নিচ্ছে মানুষের টাকা। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে ডিমের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। চাহিদা বাড়েনি, উৎপাদনও কমেনি তবুও ডিমের দাম সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। খামারে একটি ডিমের উৎপাদন ব্যয় পড়ে সর্বোচ্চ সাড়ে ১০ টাকা। খুচরা পর্যায়ে এই ডিম কোনোভাবেই ১২ টাকার বেশি হওয়ার কথা না। অথচ বেশি সময় ধরে একটি ডিম ১৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। অর্থাৎ ডিমপ্রতি ব্যবসায়ীরা ৩ টাকা বেশি লাভ করেছে। একদিনে দেশে ডিমের চাহিদা ৪ কোটি পিস। প্রতি ডিমে ৩ টাকা বেশি মুনাফা করায় ১২ কোটি টাকা লুটে নেয়া হয়েছে। । এমন চিত্র আমাদের শঙ্কিত করে। ডিম ছাড়াও বাজারে চাল, পেঁয়াজ, সবজি, মাছ- সব কিছুর দাম বেশি। প্রায় ২ বছর ধরে বাজারের উচ্চমূল্য সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন ভোক্তারা। এর মধ্যেই দফায় দফায় বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে সুযোগ নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। বাজার মনিটরিং না থাকাকে এমন অবস্থার জন্য দায়ী করছে মানুষ। বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি নতুন নয়। সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। চলমান পরিস্থিতিতে স্বল্প আয়ের মানুষের নিত্যদিনের চাহিদায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে জানা গেছে, ঢাকার বাজারে ফার্মের মুরগির এক হালি বাদামি ডিমের দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। এক মাস আগের তুলনায় এই দর ২৮ শতাংশ বেশি। এক বছর আগের তুলনায় তা ৫৪ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে দেশি হাঁস ও মুরগির ডিমের দর উঠেছে প্রতি হালি ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়।দেশের ইতিহাসে ডিমের ডজন কখনোই দেড়শ টাকা স্পর্শ করেনি। গরিবের ‘মাংস’ খ্যাত এই খাদ্যপণ্যটির প্রতি ডজন কিনতে এখন এলাকাভেদে ক্রেতার খরচ পড়ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। তবে এক হালি কিনলে রাখা হচ্ছে ৫৫ টাকা।

বিজ্ঞাপন

টাঙ্গাইলের অন্যতম ব্রয়লার মুরগি ও ডিম উৎপাদনকারী সোহেল রানা বলেন, মুরগি পালনে মোট খরচের ৭৫ শতাংশই হয় খাবারের পেছনে। সম্প্রতি খাবারের দাম আরও বেড়েছে। এ ছাড়া অনেক খামারি লোকসানে পড়ে উৎপাদন বন্ধ রেখেছেন। কেউ কেউ ব্যবসা ছেড়েও দিয়েছেন। এ কারণে দাম বাড়ছে।এক সপ্তাহের ব্যবধানে এত দাম বাড়ার পেছনে মূল কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বাড়তি দরের কতটুকু পাচ্ছেন খামারিরা, সেটাও দেখতে হবে। খামার থেকে খুচরা পর্যায়ে যাওয়া পর্যন্ত যে মধ্যস্বত্বভোগীরা রয়েছেন তাঁরাও এর থেকে মুনাফা নিচ্ছেন। দাম বাড়ার পেছনে এটিও একটি কারণ। আমদানি করে ডিমের দাম কমাতে চাইলে উলটো দাম বাড়বে। তখন ১২ টাকার ডিম ২০ টাকায় খেতে হবে। এ কথা বলেছেন, ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি)-এর সহসভাপতি আনোয়ারুল হক। রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) আয়োজিত কর্মশালায় এ কথা বলেন তিনি। তিনি আরো বলেন, ‘মুরগির ফিডের দাম না কমালে ডিমের উৎপাদন খরচ কমানো সম্ভব না।’ওই কর্মশালায় বক্তারা বলেন, পোলট্রি শিল্পে যেসব কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়, এর ৮৫ শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। সম্প্রতি ডলারের দাম বৃদ্ধির কারণে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলারের দাম ১০৯ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যাংকের কাছ থেকে ব্যবসায়ীদের কিনতে হচ্ছে ১১৪ টাকায়। ফলে ডলারের দাম না কমলে ডিম ও পোলট্রি মুরগির দাম কমানো কঠিন। এতে আরো বক্তব্য দেন বিপিআইসিসির সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ; ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি)-এর সভাপতি কাজী জাহিদ হাসান, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান; ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম; ওয়ার্ল্ড’স পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সহসভাপতি মো. তৌহিদ হোসেন, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (এফআইএবি)-এর সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, এনিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আহকাব)-এর সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আফতাব আলম, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো ফিড ইনগ্রিডিয়েন্টস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম আমিরুল ইসলাম প্রমুখ। তারা বলেন, উৎপাদন খরচের বিপরীতে নায্য দাম না পাওয়া, অপপ্রচার এবং বাজার তদারকি সংস্থার চাপে প্রান্তিক খামারিরা দিনদিন আরও প্রান্তিক হয়ে পড়ছেন। ইতোমধ্যে অনেক খামার বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কমেছে উৎপাদন। এ অবস্থা চলতে থাকলে ডিম-মাংসের উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, ২০২২ ও ২০২৩ সালের বেশির ভাগ সময় খামারিরা লোকসান দিয়েছেন। উৎপাদন খরচের চেয়েও কম মূল্যে উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন। ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়েও খামারিরা চেষ্টা করেছেন উৎপাদন সচল রাখতে। কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগীরা অন্যায্য মুনাফা করেছে অথচ খড়্গ নেমেছে উৎপাদকদের ওপর। তিনি বলেন, ‘এভাবে বাজারে স্থিতিশীলতা আসবে না। খামারিরা লাভ করতে পারলে যারা সরে গেছে তারা আবারও ফিরে আসবে। উৎপাদন বাড়লে বাজারও স্থিতিশীল হবে। কাজী জাহিদ হাসান বলেন, ‘ডিম-মুরগির বাজারে সিন্ডিকেটের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এটি অপপ্রচার। ‘প্রান্তিক খামারি’ বনাম ‘করপোরেট খামারি’র বির্তক সৃষ্টির মাধ্যমেও দেশীয় খামারি ও উদ্যোক্তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টা হচ্ছে।’মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ডিম-মুরগি আমদানি করা হলে তো দেশেরই ক্ষতি হবে।’নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে ভুট্টা, সয়াবিন মিলসহ ফিড তৈরির অন্যান্য উপকরণ এবং ওষুধের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েছে। ডলার সংকটের কারণে এলসি করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে এনওসি দিয়ে আমদানি করা ফিড গ্রেড পণ্যকেও ফুড গ্রেড লেবেল দিয়ে উচ্চহারে শুল্কায়ন করা হচ্ছে।’আফতাব আলম বলেন, ‘প্রায়ই খামার ও খুচরা বাজারের মধ্যে বড় ধরনের ফারাক লক্ষ করা যাচ্ছে। ১০ দশমিক ৭৫ টাকায় উৎপাদিত ডিমের সঙ্গে ২ টাকা যোগ করলেও খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম ১২ দশমিক ৭৫ টাকার বেশি হওয়া সমীচীন নয়। অথচ বাজারে তা ক্ষেত্রবিশেষে ১৫ টাকা এমনকি কোথাও কোথাও ১৭ টাকা পর্যন্ত উঠতে দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

এক শ্রেণির ব্যবসায়ী এমন কাজ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। যারা সরকারের চেয়েও ক্ষমতাধর। সরকারকে যারা ভয় করে না, উল্টো ভয় দেখায়। একবার এক মন্ত্রী বলছিলেন, বাজার ব্যবস্থাপনায় হস্তক্ষেপ করলে ব্যবসায়ীর দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। আবার সরকারের ওই দ্রব্য আমদানির সংবাদে দ্রব্যের দাম কমে আসে। অসাধু ব্যবসায়ীরা যে গোটা রাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণের পথঘাট চিনে ফেলেছেন, তা কিন্তু লুকানোর বা আড়াল করার কোনো উপায় নেই। মুরগির ডিম পাড়তে যতটা না কষ্ট, তার চেয়ে বহুগুণে কষ্ট মানুষ প্রাণীর মুরগির ডিম কিনে খাওয়ার চেষ্টা করা। তারও চেয়ে বোধহয় বেশি কষ্ট সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনার। কোনোভাবেই কোনোকিছুতেই সরকার ব্যবসায়ীদের লাগাম টেনে ধরতে পারছে না। কযা হোক, শিশুদের শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থতায় বেড়ে ওঠার জন্য ডিম, দুধ তথা পুষ্টিকর খাবারের কোনো বিকল্প নেই। পাঠ্যপুস্তক থেকে শুরুকেরে সোশ্যাল ও কমার্শিয়াল বিজনেসে সেই সত্য ঘুরেফিরে বলা হয়েছে, হচ্ছে। পুষ্টির জন্য বেশ ক’টা প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে। এখন সুন্দর ও সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার কথা কে ভাবছে, ভাবতে সাহস পাচ্ছে? আর কীভাবেই বা পুষ্টিকর খাবার খাবে শিশুরা? একদিকে বলা হচ্ছে শিশুকে, গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে, অপরদিকে সেইসব খাবার থাকছে, চলে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে, তাহলে? সবকিছুই তো বুলিসর্বস্ব হয়ে পড়ছে, তাই না?

সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ডিম বাড়ার প্রসঙ্গে বলেছিলেন, প্রয়োজনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে ডিম আমদানি করা হবে। এটাও ব্যবসায়ীদের জন্য এক ধরনের থ্রেট বলে অনেকের অভিমত। কিন্তু এতে কী এসে যায় অসাধু ব্যবসায়ীদের। কিসসু না। আর কেন সরকারকে এভাবে আমদানির ভয় দেখিয়ে বাজারব্যবস্থাকে স্থিতিশীল করার চেষ্টা বারবার করতে হবে, এই প্রশ্ন সবার। সরকার কর্তৃক বিধি আরোপ হলেও কেন তা অনুসরণে, মেনে চলতে অপারগ ব্যবসায়ীরা? এত ধৃষ্টতা কেন পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা? অনেকে মনে করেন, এখানে অদৃশ্য কারসাজি আছে, যা কেবল সরকারের ভেতর ঘুপটি মারা একটা শ্রেণিই অবলোকন করতে সক্ষম এবং যারা এখান থেকে ফায়দা লুটে। কতিপয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এই শ্রেণির মানুষের রয়েছে বিশেষ সখ্য ও চুক্তি। নিঃসন্দেহে বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক এবং চরম ব্যর্থতার। পত্রিকায় প্রকাশ, ভোক্তার অধিকারের দায়িত্বশীলরা বাজারে গিয়ে দেখতে পেয়েছেন, কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান পাইকারিভাবে ডিম কিনলেও ক্যাশমেমোতে ডিমের সংখ্যা উল্লেখ থাকলেও ডিমের দাম উল্লেখ নেই। অর্থাৎ কাঁচা ক্যাশমেমো দেয়া হয়েছে। যত দূর জানা গেছে, সেসব প্রতিষ্ঠানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ব্যস, উদ্ধার হলো সব অপরাধ ও অন্যায় মাত্র ১০ হাজার টাকায়! এমন অজস্র ছোট ছোট অন্যায় ঘটনা যে বড় ধরনের অন্যায়, অপরাধের বিষফোঁড়ার আকার ধারণ করে বসে, সেটা যেন কেউ আর বুঝল না!

বাজার মনিটরিং না থাকাকে এমন অবস্থার জন্য দায়ী করছে মানুষ। বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি নতুন নয়। সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। চলমান পরিস্থিতিতে স্বল্প আয়ের মানুষের নিত্যদিনের চাহিদায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে। সব মিলে নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম মেটাতে ভোক্তার হাঁসফাঁস অবস্থা। চাহিদার সঙ্গে দাম যাতে না বাড়ে, সেজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সংস্থাগুলো দৃশ্যত কিছু বিশেষ ব্যবস্থাও নিয়ে থাকে।গত বছর ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন বাজারে মাঝে মধ্যে অভিযান পরিচালনা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। তবে তাদের অভিযানেও ফেরেনি স্বস্তি। জরিমানা করেও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না ডিমের বাজার। আমাদের পূর্বের অভিজ্ঞতায় আছে, এসব ব্যবস্থা বাজার নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক তেমন প্রভাব ফেলতে পারে না। এটা স্পষ্ট যে, করোনা-দুর্যোগে অনেকের আয়-রোজগার কমে গেছে, অনেকেই হয়েছেন কর্মহীন। এখনো বাজার স্থিতিশীল রাখতে গত সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছিল। ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির মাধ্যমে যাতে বাজারকে অস্থিতিশীল করতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখার কথা জানিয়ে ছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। অবশ্য এসব তৎপরতায় তেমন কোনো সাফল্য দেখা যায়নি। বাস্তব সত্য হচ্ছে, বাজারের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। তবে বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যেসব পরিকল্পনা গত বছর নেয়া হয়েছিল এগুলো যেন যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। পণ্য পরিবহন নির্বিঘ্নে রাখতে বিশেষ করে কৃষিপণ্যের সরবরাহে যাতে কোনো বাধার সৃষ্টি হতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে সংশ্লিষ্টদের। এর বাইরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাজার পরিস্থিতি তদারকি অব্যাহত রাখতে হবে। জনস্বার্থে সিন্ডিকেট ভাঙতেই হবে। ডিমের দাম বাড়লে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে স্বল্প আয়ের মানুষ। কারণ ডিমের দামে মাছ বা মাংস কোনোটাই কেনা সম্ভব নয়। তাই স্বল্প আয়ের মানুষের প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে ভরসা ডিম। কিন্তু এখন তাও নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে- যা মোটেই কাম্য নয়। আমরা মনে করি, কেন্দ্র থেকে স্থানীয় উৎপাদন ক্ষেত্র পর্যন্ত ব্যবস্থাপনাও নজরদারির আওতায় আনা জরুরি। একই সঙ্গে ডিমসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন ও নির্বিঘœ রাখার ব্যবস্থাও নিশ্চিত করতে হবে। কেউ যদি ভেবে বসে, ডিম তো মুরগি পাড়ে, সেইটা এমন আর কী একটি দেশের জন্য। তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, দেশটা জনগণ ছাড়া চলে না। সেই জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে জনগণের অস্তিত্ব থাকে কী করে? এক ডিমেই ব্যক্তির পুষ্টির সম্ভাবনা কতটুকু, তা ভুলে গেলে না হয় আবার জেনে নিই। আর্থিক স্বল্পতার কারণে মাছ, মাংস মানুষ কিনতে সাহস পায় না। সেখানে বিকল্প এমন কিছু খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। ডিম হাতছাড়া হলে তার বিকল্প পরামর্শও হয়তো কেউ দিয়ে ফেলবে। এত বিকল্প ভাবনায় জীবন না জানি কখন বিকল হয়ে যায়!

লেখক: গবেষক ও অর্থনীতিবীদ

সারাবাংলা/এসবিডিই

ড. মিহির কুমার রায় ডিমের উৎপাদনমূল্য ও বাজার ব্যবস্থাপনায় করনীয় মত-দ্বিমত

বিজ্ঞাপন

নতুন বার্সেলোনায় মুগ্ধ মেসি
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১০:৫৫

মাদকের টাকার জন্য মা'কে খুন
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭

আরো

সম্পর্কিত খবর