Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এসব মর্মান্তিক মৃত্যু, হত্যার দায় আমরা এড়াতে পারি না

ফারজানা ইয়াসমীন
৫ মার্চ ২০২৪ ১৩:০৪

একেকটা দুর্ঘটনা ঘটে, মানুষ মারা যায়, আমরা আফসোস করি, ফেসবুকের প্রোফাইল কালো করে দিয়ে শোক প্রকাশ করি। কিন্তু যে স্বজন হারায় সে বোঝে তার কষ্ট কী! আমরা এসব মর্মান্তিক মৃত্যু, হত্যার দায় এড়াতে পারি না। আমাদের নিজেদের গায়ে যতক্ষণ না আগুন লাগবে ততক্ষণ আমরা অপেক্ষা করব আর সবাইকে উপদেশ দিতে থাকব।

রাজধানীতে খেলার জন্য মাঠ না থাকলেও, আছে অসংখ্য নামিদামী রেস্তোরাঁ। এখন বাচ্চারা বিরক্ত করলে মায়েরা বাধ্য হয়েই রেস্তোরাঁয় নিয়ে যায়। এসব রেস্তোরাঁয় বাচ্চাদের জন্য রয়েছে খেলার আকর্ষণীয় ব্যবস্থা। বাচ্চাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য কার্বন মনোক্সাইডযুক্ত যেসব বেলুন ব্যবহার করা হয়েছে আজ সেসব গ্যাসই পরিস্থিতিকে আরও মারাত্মক করে তুলেছিল, খুব দ্রুতই বাচ্চারা শ্বাসবন্ধ হয়ে মারা যায়।

বিজ্ঞাপন

বেইলি রোডের ভবনের সিড়িতে সংরক্ষিত ছিল অসংখ্য সিলিন্ডার যা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পরও আমরা দেখেও না দেখার ভান করে চলেছি I এসব রেস্তোরাঁগুলি তো আর একদিনে হয়নি, আমাদের চোখের সামনেই গড়ে উঠেছে আমাদেরই মরণফাঁদ। আর এসব রেস্তেরাঁ উদ্বোধনে আনা হয় নামীদামি সুপারস্টারদের, তারা এদের ব্র্যাণ্ড প্রমোটার হয়ে মানুষকে রেস্তেরাঁমুখী করে তুলছে। আবার সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে দেখা যায় অসংখ্য ফুড ব্লগারদের চটকদার প্রমোশনাল রিভিউ, ফ্রিতে খাচ্ছেন নিজেদের চ্যানেলের ভিউ বাড়াচ্ছেন, এরা কখনো কী কোনো রেস্তোরাঁকে ঝুঁকিপূর্ণ বলেছেন? আজকে থেকে এসব ফুড ব্লগারদের ফলো করা বন্ধ করে দিন, দেখবেন শান্তি পাবেন I

আমরা জানি আগুন লাগলে নিচে নামতে না পারলে উপরের দিকে অর্থাৎ ছাদে যেতে হবে, সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করতে হবে, অথচ ভয়াল সেই রাতে বেইলি রোডের ভবনটির ছাঁদ ছিল তালাবন্ধ। লক্ষ্য করলে দেখবেন বহুতল ভবনের ছাঁদগুলো এখন ব্যবহার করা হচ্ছে রেস্তেরাঁ হিসেবে, দুর্ঘটনা ঘটলে অগ্নি নির্বাপণের কোনো ব্যবস্থাই সেখানে নেই। বহুতল ভবনে লিফট লাগানো হয়েছে বলে সিড়িগুলো এতোটাই সরু করা হয়েছে যে একসাথে দুজনের বেশি মানুষ নামা যায়না আর দুঘটনা ঘটলে কী অবস্থা হবে একবার ভেবে দেখুন। গুলশান, বনানী, উত্তরা, ধানমন্ডি, মিরপুরে রয়েছে অসংখ্য অবৈধ ঝুঁকিপূর্ণ রেস্তেরাঁ। কয়েকদিন হয়তো আমরা এসব রেস্তোরাঁয় যাবনা, এরপর ৪৬ টি প্রাণের কথা ভুলে যাব, আবার সবাই দলবেঁধে যাব আর আগুনে পুড়ে মরব। এটাই মনে হয় আমাদের নিয়তি।

বিজ্ঞাপন

অনুরোধ রইল সবার কাছে যেখানেই যান হোক সেটা রেস্তোরাঁ কিংবা শপিংমল, জনবহুল যেকোনো ভবন ঝুঁকিপূর্ণ মনে হলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করুন, সবাইকে সচেতন করে দিন।

সারাবাংলা/এসবিডিই

এসব মর্মান্তিক মৃত্যু- হত্যার দায় আমরা এড়াতে পারি না ফারজানা ইয়াসমীন মুক্তমত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর