Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম

আনোয়ার হাকিম
৭ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:৫২

প্রসঙ্গে আসি। আমাদের বাঙ্গালিত্ব আমাদের কাছে যেমন অহংকারের তেমনি আমাদের জন্য তা বিরাট সীমাবদ্ধতারও। আমাদের কিছু খাসলত এমন যে আমরা বুঝেও তা আঁকড়ে ধরে থাকি। যেন সেসব বদ খাসলত আমাদের সাথে ইন বিল্ট হয়ে সেঁটে আছে। সময়-সুযোগ পেলেই তা আলটপকা ফাল মেরে উঠতে পারে।

আমাদের এখন দ্বিতীয় স্বাধীনতার হানিমুন পিরিয়ড চলছে। ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় উত্থানে নব তরঙ্গে উচ্ছ্বসিত দেশ আগামীর মেরামত কাজে ব্যস্ত। সে পথ মোটেই মসৃণ নয়। কণ্টকাকীর্ণ, শ্বাপদসংকুল, প্রত্যক্ষ বা বন্ধুরূপী অরি বেষ্টিত। আগামীর এ পথ চলায় ভুলের কোন স্থান নেই। ভুলের মাশুল দিতে হবে চড়া দরে। এখানে ব্যর্থতার কোন স্থান নেই। ব্যর্থতা মানে আত্মবিনাশ। সময় এখানে বড় ক্রীড়ণক। কথায় আছে সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়। আমরা বাঙ্গালিরা সময়ের কাছে বারবার পরাস্ত হয়েছি। বাকির খাতায় তুলে রেখে সময়কে অবজ্ঞা করে বহু আয়োজনকে অংকুরেই বিনষ্ট করে ফেলেছি। সময় প্রতিশোধ নেয়। সময়ের প্রতিশোধ বড় ভয়ংকর। কথায় আছে ‘সময় বহিয়া যায় হাটুরিয়া হাট বেলা নাহি পায়’। আমাদের অতীতের অভিজ্ঞতা কিন্তু সে কথাই বার বার স্মরণ করিয়ে দেয়। আমাদের বহু অর্জন শুরুতে ছক্কা হাঁকালেও কালের আবর্তে যথাযথ মন:সংযোগের অভাবে বিপথে হারিয়ে গেছে বা মুখ থুবড়ে পড়েছে। কু লোকে স্টিয়ারিং হাতে পেয়ে যথেচ্ছ ড্রাইভ করে গেছে।

বিজ্ঞাপন

জুলাই বিপ্লব অমিত তেজ নিয়ে এসেছে আমাদের ঘুড়ে দাঁড়াবার অভিলাষে। জেন জি ছাত্রদের ধী প্রখরতায়; নিজেদের পৃথিবী নিজেরাই গড়ে তোলার প্রত্যয়ে; যে পথচলার সূচনা হয়েছে তাকে সঠিক ট্র্যাকে পরিচালনার দায়িত্ব পড়েছে প্রাচীনপন্থী বলে সুখ্যাত অথচ সব কিছুতে বাগড়া দেওয়া, ফন্দি ফিকিরে সারাক্ষণ ব্যতিব্যস্ত, বয়ষ্ক গোষ্ঠীর উপর। এটা বিপ্লবের স্পিরিটকে কতটা শাণিত করবে, কতটা বেগবান করবে তা সময়ের পরিসরে বিবেচ্য। তবে প্রাচীনপন্থী এসব ফন্দিবাজ, পক্ককেশ, জ্ঞানভারে ন্যুব্জদেরকে নজরদারিতে রাখা অতিব জরুরি। এসব ফন্দিবাজ, পল্টিবাজরা হায়ার ম্যাথের ভুজুং ভাজুং তুলে ধরে অতীতেও দেশটাকে বহুবার বিপথে বলাচলে কুপথে পরিচালিত করেছে। ব্যর্থতায় অনুশোচনা নয় বরং ভুলভাল সূত্রে করা অংকের ভুল উত্তরকেই করেছে প্রতিষ্ঠিত ও সৌকর্যমণ্ডিত। ছাত্র জনতার আন্দোলনের জিকির তুলে আবার সেই ছেলে ভোলানো পথেই আমরা অগ্রসর হচ্ছি কিনা সেটা দেখতে ছাত্রদেরকেই প্রতিক্ষণ সতর্ক পাহারা বসিয়ে রাখতে হবে। রবীবাবুর সূত্র ধরেই বলি, “আমরা আরম্ভ করি, শেষ করি না; আড়ম্বর করি, কাজ করি না; যাহা অনুষ্ঠান করি তাহা বিশ্বাস করি না; যাহা বিশ্বাস করি তাহা পালন করি না; ভূরি পরিমাণ বাক্যরচনা করিতে পারি, তিলপরিমাণ আত্মত্যাগ করিতে পারি না; আমরা অহংকার দেখাইয়া পরিতৃপ্ত থাকি, যোগ্যতা লাভের চেষ্টা করি না; আমরা সকল কাজেই পরের প্রত্যাশা করি, অথচ পরের ত্রুটি লইয়া আকাশ বিদীর্ণ করিতে থাকি; পরের অনুকরণে আমাদের গর্ব, পরের অনুগ্রহে আমাদের সম্মান, পরের চক্ষে ধূলি নিক্ষেপ করিয়া আমাদের পলিটিকস এবং নিজের বাক্চাতুর্যে নিজের প্রতি ভক্তিবিহ্বল হইয়া উঠাই আমাদের জীবনের প্রধান উদ্দেশ্য”। আমরা অপরকে ওয়াজ নসীহত করতে সিদ্ধ কিন্তু নিজে আমল করি না। ভোগে আমাদের আসক্তি ত্যাগে বিরক্তি।

বিজ্ঞাপন

আগস্ট বিপ্লবের চেতনা আমরা সঠিক ভাবে বুঝতে পেরেছি কিনা সন্দেহ জাগে। এরিমধ্যে আমাদের বডি ল্যাংগুয়েজ চিরপরিচিত চিত্রকে প্রস্ফুটিত করতে শুরু করেছে। যেন আমরা আবার পূর্ববৎ প্রক্রিয়া জারী রাখতে গা ঝাড়া দিয়ে উঠার অপেক্ষায় আড়মোড়া ভাঙ্গছি। ছাত্র সমাজকে এ বিষয়টি অনুধাবন করে আপোষহীন ও সুদুরপ্রসারি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নিছক বয়সের কারণে, অভিজ্ঞতার দোহাই দিয়ে অভিভাবকের আসনে উপবিষ্ট প্রবীণ সুচতুর চালকদের কাছে শতভাগ দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে আপন ডেরায় ফিরে গেলে বিপ্লব শুয়ে পড়বে। পরে হয়ত একদা আগস্ট বিপ্লবের স্মৃতিচারণ নিয়েই খেদ করতে হতে পারে। এরিমধ্যে আলামত বেশ স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। সবাই গা ঝাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করেছে। আবহাওয়া এমন হয়েছে যে, বিপ্লবকাল শেষ, আবার সেই অনুকূল নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যাচ্ছে। এরিমধ্যেই এমন একটা ভাব শুরু হয়ে গেছে যে, টনের্ডো থেমে গেছে, ক্ষয়ক্ষতি যা হবার তা হয়ে গেছে। আবার জমবে মেলা বটতলা হাটখোলা।

এখনো আমাদেরকে পুরোনো স্মৃতিকাতরতা মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছে। ইনিয়ে বিনিয়ে সেকথা যেন আবার বলার গ্রাউ- ওয়ার্ক শুরু হয়ে গেছে। কৃত্যভিত্তিক সংগঠন গুলো এক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়েও গেছে। এরিমধ্যে তারা প্রাথমিক জড়তা কাটিয়ে দাঁড়াবার মত ভিত করে নিয়েছে। গেলো রিজিমে সবচেয়ে পচন ধরেছে যে পেশাগুলোয় তা হলো সাংবাদিকতা, সাংস্কৃতিক অংগন, বুদ্ধিজীবি শ্রেণী, ব্যবসায়ী গোষ্ঠী আর ক্লেপ্টোক্রেসির সুফল ভোগী আমলা ও রাজনীতিবিদ। এখন তাদের একই অঙ্গে এত রূপ প্রদর্শনের মৌসুম। কী না করেছে তারা রেজিমকে টিকিয়ে রাখতে, মধুলেহন করতে। লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে সভ্যতা-ভব্যতাকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে স্মরণকালের অপরাজিত চ্যাম্পিয়নের মত হাত দিয়ে, পা দিয়ে সমান তালে খেলে গেছেন তারা। ভাগাভাগি থেকে শুরু করে হানাহানি, কাটাকাটি, দৌড়াদৌড়ি কী না করেছে সাংবাদিক নামধারী সেবাদাসরা? পা চেটে চেটে ময়লাকে সাফ-সুতরো করে, পৃষ্ঠদেশ ঘষে ঘষে কালো চামড়াকে ফেয়ার এণ্ড গ্লো’র ঝলকে উজ্জ্বল ফর্সা করে, সম্মুখ প্রশংসায় গল্প-উপন্যাসের চাটুকারদেরকেও হার মানিয়ে নিজেদের স্বত্বার সতীত্ব বিলিয়ে দিয়ে প্রভূত বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়েছেন একেকজন। আজ তাদের মুখেই উল্টো কথা, ধরণী বিভক্ত হতেও লজ্জা পাচ্ছে। এরা সমাজের, দেশের এক নম্বর শত্রু, প্রতারক। এরা প্রতারণা করেছে দেশের আঠারো কোটি মানুষের সাথে। প্রতিনিয়ত সার্টিফিকেট দিয়েছেন বিগত রেজিমের। কোথাও কোন বিরুদ্ধ কণ্ঠ নেই এরূপ জিকির তুলে একমুখী প্রোপাগাণ্ডার দোসর হিসেবে কাজ করেছে তারা।

আগস্ট বিপ্লব তাই এদেরকে হতবাক করেছে ক্ষনিকের জন্য। এখন তারা নিজেদেরকে গুছিয়ে নিয়ে আবার নতুন গান বেধে নেমে পড়েছেন। ভাবটা এমন যে, ধুয়ে যাক, মুছে যাক পুরোনো সব গ্লানি। পুত:পবিত্র করতে কাপড় কাচার বিকল্প নেই। তাই এদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় অবশ্যই দাঁড় করাতে হবে। আর এ কাজটি ছাত্রদেরকেই নিশ্চিত করতে হবে। বয়সীদের উপর সব ছেড়েছুড়ে দিয়ে বসে থাকলে বিপ্লবের বারোটা বাজতে বারো মাসও লাগবে না। বুদ্ধিজীবী, শিল্পী-সাহিত্যিক শ্রেণী এখনো সেভাবে নতুন গীত রচনা করে জনসমক্ষে হাজির হয়নি। তবে নেমে পড়বে সহসাই। এরা বিভাজনের রাজনীতি পরিবারের মধ্যে অনুপ্রবেশ করিয়ে দিয়েছে খুব কার্যকর ভাবে। যার প্রভাব বয়ে বেড়াতে হবে আমাদেরকে কয়েক প্রজন্ম অবধি। এদের ক্ষমা নেই।

চানক্য অর্থনীতির অন্যতম প্রভাবক বেনিয়া গোষ্ঠী। এদের নিয়ে অলিগার্ক নিশ্চিন্তে পার করেছে পুরোটা রেজিম। যেন তামাক আর ফিল্টার দু’জনে দু’জনার। দেশের সবচেয়ে ক্ষতি করেছে ব্যবসায়ী নামধারী লুটেরা শ্রেণী। অর্থনীতির বারোটা বাজাতে এহেন পথ নেই যেপথে তাদের বিচরণ ছিল না। সিণ্ডিকেট করে, জনগণকে জিম্মি করে, ব্যাংক লোপাট করে, অর্থ-সম্পদ পাচার করে তারা ক্লেপ্টোক্রেসির অন্যতম ভাগীদার হয়েছে। এখন তারাই আবার নিজেদেরকে বিগত রেজিমে নিপীড়নের অন্যতম শিকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছেন। এমন একটা অভিব্যক্তি ইতোমধ্যে প্রকাশ করে ফেলেছেন যে, বিগত রেজিমে তারা ছিলেন কাঠের পুতুল, মূক ও বধির। অথচ বিগত বৎসরসমূহে তাদের সদম্ভ নড়াচড়া, চোয়াল শক্ত বাকভঙ্গি, তেল চকচকে মুখাবয়ব, ঔদ্ধত্যপূর্ণ হুংকার, অলিভ অয়েলে সিক্ত অবাক করা সব স্তুতি মিডিয়ার পর্দায় আর কাগজের হরফে উৎকীর্ণ হয়ে আছে। তাদেরকে অতি আবশ্যিকভাবে জরুরি ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট আইনের আওতায় এনে কৃত অপরাধের শাস্তি বিধান করা যেমন প্রয়োজন তেমনি লুটপাটকৃত অর্থ-সম্পদ বাজেয়াপ্ত করত: দৃষ্টান্ত স্থাপন করা দরকার। তাদের লুণ্ঠনের ফিরিস্তি তাদের জবানীতেই জনগণের কাছে তুলে ধরার ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবী।

তদ্রুপ, বেসামরিক আমলা ও সামরিক বাহিনীসহ র‌্যাব-পুলিশের কৃতকর্মের পৃথক পৃথক পূর্ণাঙ্গ ময়না তদন্ত জনগণের সামনে দৃশ্যমান করতে হবে ও সংশ্লিষ্টদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। এখন যারা উলটো গীত গাওয়ার কৌশল করছেন তাদেরকে চিহ্নিত করে কৃত অপরাধের যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা এরিমধ্যে অধৈর্য হয়ে পড়েছেন। এখন তারা নেপথ্যে এমন বার্তাই ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছেন যে, আগের জমানাই ভালো ছিলো। এখন টক শো তে বসে, নিজের ইউটিউব চ্যানেল খুলে বা পত্রিকায় কলাম লিখে অনেকেই বিপ্লবোত্তর এই দু মাসের চুলচেড়া বিশ্লেষণ করা শুরু করে দিয়েছেন। বলার চেষ্টা করছেন বিপ্লব উবে গেছে, সমন্বয়কদের মুখোশ উন্মোচিত হচ্ছে, যাহা বাহান্ন তাহাই তেপ্পান্ন, কোথায় সেই বড় বড় কথা, কোথায় আইন শৃঙ্খলা, কোথায় দ্রব্যমূল্যের সহনীয় পর্যায়, কোথায় এই সেই ইত্যাদি। এগুলো আসলে তাদের অস্বস্তির জায়গা থেকে উৎসারিত। যারা এতকাল লুটপাট করেছে, লুট না করলেও বখরা পেয়েছে, ইধারকার মাল উধার করেছে, কলিজায় পারা দিয়ে ছিনতাই করেছে, ভীতির রাজত্ব কায়েম করে একচ্ছত্র অধিপতির মত যাচ্ছেতাই করেছে তাদের কাছেই আজকাল সবকিছু পানসে লাগছে, তিতা তিতা লাগছে, বমি বমি লাগছে, মাথা ভার ভার লাগছে। নি:শ্বাসেও তাদের স্বস্তি নেই, চোখে শান্তি নেই, মনে বিষাদময়তা ভর করেছে, বুকের কোথায় যেন অবিরত খচ খচ করছে, কপালে ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে-আসলে বৈরি এই পরিবেশে এখন কোন কিছুই ভালো লাগার কথা না। এটাই স্বাভাবিক। তারাই আজ ক্রমে ক্রমে অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে।

আজ যারা আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কথা তুলছেন তারা বেশ ভালো করেই জানেন কেন এখনো উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পুলিশ কর্মক্ষেত্রে অনুপস্থিত, কেন তাদের অনেকেই দেশান্তরি হয়ে গেছে, কেন রাজপথে ট্রাফিক আগের মত দৃশ্যমান হচ্ছে না? দায়িত্বপালনে কেন তাদের মধ্যে এত দ্বিধা, অনীহা, আস্থার অভাব? কেন এত ভয় তাদের মাঝে এখনো কাজ করছে? কেন অফিস-আদালতে এখনো সেই আগের কুশীলবরা ঢিলেঢালা চালে দিনাতিপাত করছেন? কেন দেড় যুগ মুখে কুলুপ এঁটে থাকার পর সব শ্রেণী-পেশা-গোষ্ঠী এক সাথে যৌক্তিক-অযৌক্তিক-হাস্যকর-উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সব দাবী নিয়ে রাজপথে নেমে আসছে? কেন পাহাড় অসন্তোষ হচ্ছে, সাথে লঘু-গুরু প্রীতি বিনষ্টের আওয়াজ জোরদার হচ্ছে? কেন এখনো একের পর এক দাবী আদায়ের নামে আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়ছে সমাজ জীবনে? এরা কারা, কী তাদের অন্তর্গত খায়েস, কারা এদের পেছনে থেকে গলায় ভায়াগ্রা-তেজ যোগান দিচ্ছে তা বুঝতে আইনস্টাইন ব্রেনের প্রয়োজন হয় না।

অথচ এই কিছু দিন আগেও প্রতিপক্ষ ভাবাপন্নদেরকে দেখলেই তাদের মুখে গীত হত সুখ সংগীত “আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম…”। সেই খোঁচা যে বুমেরাং হয়ে এমনি ভাবে নিজেদের বুকে এসে বিঁধবে তা ঘুণাক্ষরেও তারা অনুমান করতে পারেন নি। এখন তারা একই গীত আওড়াচ্ছেন বিলাপের সুরে। সময় কত প্রতিশোধ পরায়ন! সঙ্গত কারণেই তাদের এখন দম বন্ধ হয়ে আসছে। বোধকরি তাদের জন্যই সেই অমোঘ বাণী প্রযোজ্য, “কি যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে? কভু আশীবিষে দংশেনি যারে”। প্র্রবাদে আরো আছে, “দুষ্টু লোকের মিষ্টি কথায় ভুলিতে নাই”। এইসব পতিত নক্ষত্র আর তাদের পাইক-পেয়াদাকূল মুখিয়ে আছে সময় ও সুযোগের অপেক্ষায়। একটু অসাবধানতায় যে কোন সময় অশান্ত হয়ে যেতে পারে পরিস্থিতি। মনে রাখা দরকার সময়ের এক ফোঁড় অসময়ের দশ ফোঁড়। বিপ্লবের শুরুটা যেমন ছিলো অভীষ্টমূখী তেমনি এর পরিসমাপ্তিটাও হতে হবে অর্জনে পুষ্ট। এখন এগিয়ে যাওয়ার সময়, তাই এখন কাজের সময়। ষড়যন্ত্র তন্ত্রের আবিষ্কারক গোষ্ঠী নিষ্ক্রিয় হয়ে মুখে আংগুল দিয়ে বসে থাকবে এটা ভাবা মুর্খতা। জেন জি প্রজন্মকে তাই লেখাপড়ার পাশাপাশি সজাগ থাকতে হবে। কেউ তাদের পক্ষে হুইসেল ব্লো না করলেও সাম্প্রতিক সময়ের মত হুইসেল ব্লোয়ারের দায়িত্ব তাদেরকেই পালন করতে হবে। নাহলে এত এত আত্মত্যাগ ও এত বড় মহতী উদ্যোগ মাঠে মারা যাবে। এর পরিণাম দেশ, জাতি ও ব্যক্তি- কারো জন্যই সুখকর হবে না। কাম্যও হতে পারে না। অতএব, সাধু সাবধান। সবার সুবোধ জাগ্রত হোক।

লেখক: কলামিস্ট

সারাবাংলা/এসবিডিই

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর