প্রবারণা পূর্ণিমায় ১ দিনের রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা হোক

১৬ অক্টোবর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণার দাবিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘শুভ প্রবারণায় ছুটির জন্য মন্ত্রী হিসেবে আমি পারি না। এটা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নির্বাহী ব্যক্তি আমাদের চিফ এডভাইজার (প্রধান উপদেষ্টা) মহোদয়ের ঘোষণা লাগবে। আপনারা একটা হাই পাওয়ার টিম (সর্বোচ্চ বৌদ্ধ নেতৃত্বের দল) প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করেন। আমি আপনাদের পক্ষে সুপারিশ করব।’

সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর কাজীর দেউরীতে এক বৌদ্ধ ধর্মীয় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এছাড়া তিনি বলেন, ‘ভারতের বুদ্ধ গয়ার তীর্থযাত্রীদের ভিসা বন্ধ রয়েছে।’ এ বিষয়েও তিনি ভারতীয় হাইকমিশনারের সাথে আলোচনা করবেন বলে তিনি জানান।

প্রবারণা পূর্ণিমাকে সরকারি ছুটি ঘোষণা করার দাবিটি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অনেক দিনের। কিন্তু বিগত কোনো সরকারই এ বিষয়ে কোনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ কিংবা মন্তব্য করেননি। জনাব ধর্ম উপদেষ্টার বক্তব্যকে শ্রদ্ধা রেখেই বলছি ওনার একার পক্ষে এই ছুটি ঘোষণার কোনো ক্ষমতা নেই। বৌদ্ধরা উদ্যোগ না নিলে ও বাস্তব পদক্ষেপ না নিলে এই দাবি কথার ফুলঝুরি হয়েই থাকবে। তবে এখন বিষয়টা হলো এ বৌদ্ধ ‘হাই পাওয়ার টিম’ কারা? আদৌ কী কোনো সুগঠিত টিম কী রয়েছে বৌদ্ধদের?

ধর্ম উপদেষ্টা মহোদয় বলেই দিয়েছেন আপানারা দ্রুত দেখা করেন। তিনি নিশ্চয়ই আশাবাদী। তবে দেখবেন, এ হাইপাওয়ার টিম সিলেক্ট করতে করতে প্রবারণা পূর্ণিমা যেন শেষ হয়ে না যায় আবার। সঠিক সময়ের সদ্ব্যবহার না হলে পরে হতাশা দেখিয়ে লাভ নেই। তাই বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের প্রতি অনুরোধ করবো এখনই সময়, আপনারা টিম গঠন করে দ্রুত দেখা করুন ও দাবি আদায় করুন। আমরা কথার ফুলঝুরি শুনতে চাই না।

বাংলাদেশ ঐতিহাসিক ভাবে একটি ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। এখানে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ নানা বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে আবহমান কাল থেকে বসবাস করে আসছে। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সকল ধর্মের সম্প্রীতি ও সহবস্থান নিশ্চিতকরণে কাজ করে যাচ্ছে। একই সাথে আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে সকল নাগরিক ও সম্প্রদায়ের সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হয়েছে। আমরা সরকারের এই নীতি ও লক্ষ্যকে শ্রদ্ধা জানাই।

প্রসঙ্গত, আগামী ১৬ অক্টোবর ( বুধবার) বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা; যা প্রতিবছর ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ও খুবই উৎসবমুখর আয়োজনে পালন করে আসছে এদেশের বৌদ্ধরা। কিন্তু সংখ্যালঘু বৌদ্ধদের এ উৎসবের জন্য রাষ্ট্রীয় কোনো ছুটি নেই। বিগত কোনো সরকারই বৌদ্ধদের এই দাবির প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেনি। বলাবাহুল্য, শুধু বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে এদেশের বৌদ্ধরা রাষ্ট্রীয় ছুটি পায় মাত্র বছরে একদিনই। শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা ও উৎসব উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় ছুটি পাওয়া পুরো বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে খুবই কৃতজ্ঞ ও আনন্দিত করবে।

লেখক: শিক্ষক, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বৌদ্ধ ছাত্র পরিষদ

সারাবাংলা/এসবিডিই

প্রবারণা পূর্ণিমায় ১ দিনের রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা হোক মুক্তমত হিমু বড়ুয়া