Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কারা যেন ভয় দেখায়, কারা যেন মজা নেয়

আনোয়ার হাকিম 
২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৬:২৪
সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা, কিছু রটনা আর কিছু আড়াল আবডাল খেলা দেখে মনেই হতে পারে কি হচ্ছে এসব? দেখার কি কেউ নেই? ব্যবস্থা নেওয়ার কি কোন কর্তৃপক্ষ নেই? জনমনে এরূপ প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। প্রশ্ন উঠছে অনেক কিন্তু  উত্তর কারো জানা নেই। তাই, ঘটমান-বর্তমান বাস্তব চিত্র দেখে মানুষজন এখন উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা নিয়ে উত্তর তালাশ করে বেরাচ্ছে।
৫ আগষ্ট ২০২৪ গেলো রেজিমের ভূমিধস-পতন হয়েছে। তাদের গড়া ১৬ বছরের স্টেনলেস স্টীল ফ্রেমের এত সহজে  পতন হবে তা যেমন কেউ বিশ্বাস করতে পারে নি তেমনি এরপর কী হবে তা নিয়েও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কমতি নেই। ৫ আগষ্টকে বলা হচ্ছে ৩৬ই জুলাই, বলা হচ্ছে দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিবস। কিন্তু অর্জনের পর সেই বিপ্লবের তেজ স্তিমিত হয়ে গেছে অজানা  কারণে। বিপ্লব এখন টিকে আছে কথায় আর ছাত্রদের হুংকারে। বিপ্লবোত্তর কয়েকদিন ছিলো পরিবর্তনের,  চমকের, শুদ্ধতার, অঙ্গীকারের আর প্রত্যাশার। ক্রমে ক্রমে দৈনন্দিন জীবনচক্রে তা অতীত ভারাক্রান্ত হতে সময় নেয় নি। যার যেখানে যতটুকু সুবিধা নেওয়া দরকার তারা সেখানে বিপ্লবের ফ্লেভার ততটুকুই ছড়িয়ে দিয়েছে। দুর্গন্ধ যুক্ত স্থান নি:শ্বাস গ্রহণ উপযোগী করার লক্ষ্যে দামী পারফিউম স্প্রে করার মত।
অন্তর্বতীকালীন সরকার কাজ করে যাচ্ছে। উদ্ভুত নানাবিধ অপ্রত্যাশিত উত্তেজনা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু কেন জানি দুয়ে দুয়ে চার না হয়ে অন্য কিছু হচ্ছে। মানুষজন এরিমধ্যেই যেন চূড়ান্ত মূল্যায়ন-মন্তব্য করতে শুরু করে দিয়েছে।  আমাদের সব কিছুতেই যেমন উচ্চাশা ভর করে তেমনি দ্রুত আশাহত  হতে আমাদের জুড়ি নেই। পনের-ষোল বছরের দমন-পীড়নে কারো পক্ষে মতামত প্রক্ষেপণ করাও ছিলো শংকার। এখন দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের পর হঠাৎ করেই আমরা হয়ে উঠেছি অসম্ভব বাক পটু। আমরা যেন ইতোমধ্যেই হাঁপিয়ে উঠেছি। ভাবটা এমন যে, এমনই যদি হবে তাহলে আগেরটা কি ক্ষতি করেছিলো? কেউ কেউ গলা ফাটিয়ে বলা শুরু করে দিয়েছেন আগেরটাই তো ভালো ছিলো। জনমনে নানা প্রশ্ন জাগছে। কেউ কেউ চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছেন কই গেলো দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ, কই গেলো আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন? কই গেলো সি-িকেটের পি-ি চটকানোর হুমকি-ধামকি ইত্যাদি। সমাজের সর্বত্র বিরাজিত বৈষম্য নিরসনের শ্লোগান নিয়ে ছাত্ররা বিপ্লবে নেমেছিলো। সেই বৈষম্য নিরসনেরই বা কি হলো? পনের বছরে যারা ছিলো স্পীকটি নট তারাও গলা ফাটিয়ে রাস্তা দাপিয়ে সরকারের ভিত ধরে নাড়ানাড়ি করা শুরু করে দিয়েছেন।
৫ আগষ্টের পর নানাবিধ ঝড়-ঝঞ্জাট সামাল দিতে হচ্ছে সরকারকে। কথাটা ঘুড়িয়ে বললে বলা যায় সরকার লড়ছে অসংখ্য নতুন নতুন পুতুলের সাথে। তাদের পেছনে কারা যেন সূতা ধরে ইচ্ছেমত নাচাচ্ছে। জনগণ এগুলো দেখছে। তারা জানে সবই পরিকল্পিত বিনাশী খেলার স্টেজ রিহার্সেল মাত্র। একের পর এক ঢেউ এসে দাপাদাপি করে যাচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি জনগণও শিহরিত হচ্ছে। উদ্বেগ,  উৎকণ্ঠা নিয়ে টিভি স্ক্রল দেখছে, প্রতি ঘন্টার নিউজ হেডলাইটসে চোখ রাখছে। কোন কিছুর কূল-কিনারা করতে পায়না । শুধু অনুমান করে আর কানে কানে কথা চতুর্দিক করে। আর কয়েকদিন বিদ্যমান পরিস্থিত এরূপ  থাকলে জন আস্থা ক্রমহ্রাসমান প্রান্তিক বিধির সূত্র ধরে আরো নিম্নগামী হতে থাকবে।
কেন এই পরিস্থিতি থেকে থেকে বলগ দিয়ে উঠছে? কারা এগুলো করছে, কেন করছে? কারা এর আলটিমেট সুফল ভোগী? সবার তা জানা। এখন প্রতিক্ষণ এসবই বহুল চর্চিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গুজব অনুকূল আবহাওয়া পেয়েছে। কারা যেন এক গাদা অর্ধ শিক্ষিত ইউটিউবার ও কন্টেন্ট ক্রিয়েটরকে  উচ্চমূল্যে  ভাড়া করে নিয়েছে। তাদের কাজই হচ্ছে সত্যমিথ্যার কাটছাট করে মাঠ সর্বক্ষণ সরগরম রাখা। বিনোদনের সাথে গুজবের চতুর মিশ্রণে তারা  সারিবাদি সালসা পরিবেশন করে যাচ্ছে ক্লান্তিহীন। গেলো রেজিমে সাইবার আইন ২০২৩ প্রণয়নের মাধ্যমে বিরুদ্ধ মতবাদ নিষ্ঠুরভাবে দমন করা হয়েছে। বর্তমান সিরিজ গুজবের বিস্তার রোধে এই আইনের যৌক্তিক প্রয়োগ করা প্রয়োজন। নইলে জনমনের শংকা দূর হবে না।
বাজার অস্থিতিশীল, সি-িকেট ভাঙ্গা যাচ্ছে না, ব্যাংকেরও যায় যায় দশা। এগুলো যেন একান্তভাবেই বিপ্লবোত্তর উপসর্গ –  এমন প্রচারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আজ সয়লাব। যেন এর আগের সময়ে এরূপ কিছু হয়ে থাকলেও ব্যবস্থাপনার দক্ষতা ছিলো উচ্চমার্গের। সবকিছু চালু ছিলো রথের চাকার মত ছন্দময়। এখন হয়েছে ছন্দপতন। তাহলে পরিবর্তন হলো কিসে? শুধুই কি সিংহাসনে? এরূপ মন্তব্যই যেন এখন বাজারে সর্বত্র চালু রয়েছে। বলা হচ্ছে এ সরকার কোনভাবেই পারছে না পরিস্থিতি সামাল দিতে। দেশ চালানো কি এতই সহজ?  এরূপ বয়ান প্রচার করে প্রকারান্তরে আগেরটাই ভালো ছিলো জায়েজ করার অপচেষ্টা হচ্ছে। এখন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াসহ পাবলিক গসিপেও এরূপ আলোচনা উচ্চকণ্ঠ পেতে যাচ্ছে। কেউ বলছেন, বাজারের উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই কেন? অথচ পালটা প্রশ্ন কেউ করে না, পনের-ষোল বছরে বাজার পরিস্থিতি কিরূপ ছিল? অনেকেই বলছেন, ব্যাংকগুলো এখনো ক্রাইসিস কাটিয়ে উঠতে পারছে না কেন? সেখানে প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক, গত দেড় যুগে কি তা কোনদিন সবল ছিল? বলা হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা অবস্থা এখনো ঠিক হয়নি কেন? যারা এরূপ প্রশ্ন করে জনমানসে ভীতি আর বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে আস্থাহীনতাকে চাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন তারা কিন্তু খুব  ভালো করেই জানেন, বিডিআর বিদ্রোহের মাধ্যমে কবর দেওয়া বিডিআরের ত্যাড়া ঘাড় নতুন জন্ম দেওয়া পুতুল বিজিবি   দিয়ে এখনো শক্ত-পোক্ত করা সম্ভব হয়নি । তারা এও ভালো করে জানেন পুলিশের ভাবমূর্তি এখন জিরো পেরিয়ে নেগেটিভ পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। পুলিশের অনেকেই কেন এখনো পলাতক, অন্যরা কেন সশস্ত্র হয়েও শক্ত হয়ে দায়িত্বপালন  করতে পারছেনা? ৫ আগষ্ট দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জনের পর কেন রাজধানীর অলিতে গলিতে দলবদ্ধ ডাকাতের অবির্ভাব হয়েছিলো? কেন আনসারের সদস্যরা দাবী মেনে নেওয়ার পরেও অবুঝ শিশুর মত অথবা দম দেওয়া পুতুলের মত সচিবালয় কাঁপিয়ে-কুপিয়ে দিয়ে গেলো? কেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা অটোপাসের দাবীর নামে আচম্বিত সচিবালয়ে হানা দিয়ে সব কিছু ভ-ুল করে দিয়ে অসহায় কর্তৃপক্ষকে জিম্মি করে দাবী আদায়নামা বের করে নিয়ে গেলো? কেন ফল প্রকাশের পরেও তারা আবার এসে তাদের ইচ্ছেমত পাসের গ্যারান্টি নিতে সচিবালয়ে হানা দিয়েছে? কেন গেলো পনের বছরে জনবল কাঠামোর স্বল্পতা, পদোন্নতি সোপানে বৈষম্য ও অনিয়মের কোন দাবী উত্থাপন করা হয় নি। আজ সবাই কেন একসাথে এসব বিভাগীয় প্রশাসনিক দাবী-দাওয়া নিয়ে মারমুখী আল্টিমেটাম দিয়ে যাচ্ছে? কেন পেশাজীবিরা পনের বছরে তাদের দলবাজ কর্তৃপক্ষকে দাবী-দাওয়ার বিষয়ে নমনীয় করতে পারেনি? এখন কেন তারা এগুলো নিয়ে আস্ফালন করছে? কেন তারা চাকরির আচরণ বিধিরও তোয়াক্কা করছে না? যারা এসব করছেন তারা এর উত্তর খুব ভালো করেই জানেন।
গত রিজিমের পুরোটা জুড়ে টপ গিয়ারে থাকা ক্লেপ্টোক্রেসির অন্যতম কুশীলব গার্মেন্টস মালিক সমিতি, ব্যাংকারস সমিতি, ব্যবসায়ী সি-িকেট জো হুকুম আর জ্বী জাঁহাপনা করে নিজেদেরকে হৃষ্টপুষ্ট করেছে। এখন তাদের মুখে উলটো সুর শোনা যাচ্ছে। চলমান গার্মেন্টস অস্থিরতায় তাদের কি কোনই দায় নেই? বাজার সি-িকেট ভাঙ্গার দায় কি শুধুই স্বল্প জনশক্তিসম্পন্ন ভোক্তা অধিকার দপ্তরের কাজ? এর নেপথ্যে তাদের কি কোন কূট-ক্রীড়া নেই? ছুতানাতা দাবী নিয়ে যারা রাজধানী অচল করার প্রয়াসে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন আল্টিমেটাম নিয়ে মাঠে নামছে তারা কি নিজ শক্তিতেই নামছে? নাকি তাদের নেপথ্যে   বুলডোজারের মত কোন অপশক্তি কাজ করছে? এসব কেউ তলিয়ে দেখছে না। পুরাতন আবার ফিরে এলে যেন সব কিছু আবার প্রাণ ফিরে পাবে- এরূপ প্রচারে মিডিয়ার পরোক্ষ মদদ অনুধাবন করতে কারো অসুবিধে হয় না। সুযোগ পেলেই তারা  উদ্দেশ্যমূলক রিপোর্ট করে ফেলেন। একটি বারের জন্যও তলিয়ে দেখেন না বা দেখতে চান না, এত বছরের এত এত অনিয়মের পরেও দুই মাসের মধ্যেই রাজপথে মানুষের আওয়াজ কেন আজ এত চড়া? এরা কারা? কারা এদের পাঠিয়েছে বুলি শিখিয়ে নাছোড়বান্দার মত মরণকামড় দিয়ে রাজপথ দখল করে রাখতে? যমুনা ঘেরাও করতে?
সরকারের ভুল আছে। পরিকল্পনার ত্রুটি আছে অথবা পরিকল্পনা করাই হয়ে উঠেনি এখনো। যারা কর্তাব্যক্তি তারা কেন প্রো এক্টিভ হতে পারছেন না? হয়ত অভ্যস্তরীণ সমন্বয়হীনতা রয়েছে। নয়ত রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাহীন কর্তৃপক্ষ উদ্ভুত পরিস্থিতির গতিপ্রকৃতি ও আশু করণীয় সম্মন্ধে ঠিক বুঝে উঠতে পারছেন না। বিপ্লবের স্পিরিট স্তিমিত করে দেওয়া ছিলো তাদের জন্য মারাত্মক এক আত্মঘাতী ভুল। যার খেসারত এখন দিতে হচ্ছে তাদেরকে। দুই মাসের মধ্যেই তাদের প্রতি জনগণের পাহাড় সমান আস্থায় চিড় ধরেছে। কু লোকেরা সুযোগ নিচ্ছে হরহামেশাই। পানি ঘোলা করে মাছ শিকারের সহজ কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে গত রেজিমের ক্লেপ্টোক্রেসির অক্ষশক্তি।  অন্তর্বতীকালীন সরকার এখনো প্রশাসন গোছাতে পারেন নি। কেন পারেন নি তা জনগণের কাছে পরিষ্কার না। ক্লেপ্টোক্রেসির দোসর আমলাদের দিয়ে বিপ্লবজাত নতুন আশার বাস্তবায়ন বোকামী ছাড়া আর কিছু না। বিকল্প পথ তালাশ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সরকারের মূল চালিকাশক্তি হলো প্রশাসন যন্ত্র। সেটাতেই কারা যেন পানি পড়া, কান পড়া,  ঝাড়ফুঁক, তুকতাক মন্ত্র দিয়ে মন্থর গতি করে দিচ্ছে। তা থেকে অতি আবশ্যিকভাবে বেরিয়ে আসা জরুরি হয়ে পড়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের বিকল্প নেই এটা যেমন ঠিক তেমনি অনিচ্ছুক, ভেস্টেড ইন্টারেস্ট এলিমেন্টস দিয়ে কাংখিত সেবা আশা করা যায় না এটাও প্রমানিত বাস্তবতা। তাই, অনতিবিলম্বে কন্সটেবল থেকে এস আই পর্যন্ত সকল পদে জনবল নিয়োগ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কর্মরত পুলিশের মধ্যে যারা বদ মতলবের, ট্র্যাক রেকর্ড যাদের বিধ্বংসী তাদেরকে বিধি অনুযায়ী বা স্পেশাল আইন করে বাহিনী থেকে বিয়োজন করা সময়ের দাবী। পুলিশের উর্ধতন পদে, ক্যাডার পদে স্পেশাল বিসিএস আহ্বান করে স্বল্প সময়ে নিয়োগ কাজ সম্পন্ন করতে  টাইম ফ্রেম বেধে দেওয়া যেতে পারে। ঘন বসতিপূর্ণ এদেশে উচ্চশিক্ষিত প্রচুর বেকার চাকরির আশায় হন্যে হয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে। সরকারি চাকরি, উচ্চতম বেতন-কাঠামো আর রেশনের আকর্ষণীয় প্যাকেজ থাকায় পুলিশে জনবল নিয়োগে সমস্যা হওয়ার কথা না। তদ্রুপ বিনা দ্বিধায় বিদ্রোহী আনসারদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাদেরকে বাহিনী থেকে অতিদ্রুত বিযুক্ত করতে হবে। নতুন আনসার নিয়োগ দিতে হবে পুলিশের অনুরূপ পদ্ধতিতে। একই ফর্মুলায় বিজবিকেও করতে হবে শক্তিশালী। বিগত রেজিমের সময় আদালত পরিচালনায় কার কিরূপ ভূমিকা ছিলো তা খতিয়ে দেখে সেখানেও অনমনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নির্বাচন কমিশনে জরুরি ভিত্তিতে কাঠামোগত ও আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। কেননা, আসন্ন সর্বজনগ্রাহ্য নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ, নিরপেক্ষ ও দৃঢ়চেতা জনবল তৈরি করতে হাতে সময় খুব কম। তাই, এখনই মনযোগ দেওয়া প্রয়োজন। ছাত্রদেরকে গ্রামীন পর্যায় থেকে জেলা-বিভাগ- রাজধানী পর্যায়ে অবিলম্বে সরকারি, আধাসরকারী, স্বায়ত্বশাসিত, ব্যাংক-বীমা, কর্পোরেশনের বিভিন্ন স্তরে সহায়ক শক্তি হিসেবে সম্মানীভিত্তিক নিয়োগ করার ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকার অতি  সম্প্রতি রাজধানীর সড়কসমূহে যানজট উদ্ভুত সমস্যা মোকাবেলায় ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সম্মানীর বিনিময়ে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি অবশ্যই আমাদের দেশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। বিদেশে পার্ট টাইম চাকরির সুযোগ থাকলেও আমাদের দেশে এর সুযোগ খুবই সীমিত, নাই বললেই চলে। বিদেশে কর্মসংস্থানের উপযোগী জনশক্তি তৈরিতে বিদ্যমান সরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সিলেবাস যুগোপযোগী ও বাস্তবমুখী করতে হবে। বিদেশে জনশক্তি রপ্তানীর নতুন নতুন ক্ষেত্র তালাশ করতে হবে। দূতাবাসে যারা এরূপ কর্মে নিযুক্ত থাকবেন তাদের টার্গেট নির্ধারণ করে নির্দিষ্ট সময়ের পর তা মূল্যায়ন করতে হবে। মূলতঃ তাদের পারফরম্যান্সের উপরই নির্ভর করবে তাদের চাকরির স্থায়ীত্বকালের হ্রাসবৃদ্ধি। এটাই হবে তাদের জন্য বর্তমানে চালু এনুয়াল পারফরম্যান্স এগ্রিমেন্ট (এপিএ)। এভাবে শিক্ষিত কর্মমুখী জনবল তথা  রেমিট্যান্স যোদ্ধা তৈরি করা সম্ভব হবে।
আমাদের মত দেশে মিডিয়ার দায়িত্ব  অপরিসীম। মিডিয়া সম্মন্ধে এদেশের জনসাধারণের ধারণা সাংঘাতিক রকমের নিম্নমুখী। তাদেরকেও এ থেকে বেরিয়ে এসে নতুন সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্কুপ নিউজের পরিবর্তে অনুসন্ধানী ও উন্নয়নমুখী রিপোর্টিং করা উচিত। নায়ক-নায়িকা আর বিনোদন ভাঁড়দের পিছু ছুটে অযথা রুচি বিকৃতির বিস্তার রোধে তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। উচ্চাভিলাষী না হয়ে সীমিত কাজে গভীরভাবে মন:সংযোগ করাই হবে বর্তমান অন্তর্বতীকালীন সরকারের উদ্দীষ্ট।
সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ দেখে সঙ্গত কারণেই মনে হচ্ছে কারা যেন আমাদেরকে ভয় দেখাচ্ছে,  কারা যেন আড়াল থেকে লাড়া দিচ্ছে আর কারা যেন এসব দেখে ভীষণ মজা পাচ্ছে। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। কানের অস্তিত্ব না খুঁজে চিলের পিছু ছুটা হবে নির্বুদ্ধিতা আর আত্মবিনাশের শামিল। অতএব সাধু সাবধান। সবার সুবোধ জাগ্রত হোক।
লেখক: কলামিস্ট

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসবিডিই

আনোয়ার হাকিম কারা যেন ভয় দেখায়- কারা যেন মজা নেয় মুক্তমত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর