করোনায় আক্রান্ত ৫০ লাখ: মার্চ থেকে মে মাসের বিশ্ব বাস্তবতা
২০ মে ২০২০ ১৫:৩২
আশা-নিরাশার অবস্থান খুব কাছাকাছি। আপনি কোনটিকে বেশি গুরুত্ব দিবেন, তা নির্ধারণ করবে আপনার চিন্তা-ভাবনা ও পারিপার্শ্বিকতা। আপনি যখন এই লেখাটি পড়ছেন, তখন পৃথিবীতে ৫০ লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, এটি একটি বিশাল সংখ্যা, অর্ধকোটি। এছাড়াও মারা গেছেন প্রায় সোয়া ৩ লাখের মত মানুষ। প্রকৃত আক্রান্ত হয়েছেন এর অনেকগুণ বেশি। তবে আশার কথা আক্রান্তের অনেকেই কোন লক্ষণ প্রকাশ না করেই সুস্থ হয়ে গেছেন। আবার আশঙ্কার কথা কেউ কেউ লক্ষণ প্রকাশ না করেও আক্রান্ত হয়েছেন এবং কোয়ারেনটাইনে থাকার নিয়মাবলী না মেনে অন্য অনেককে আক্রান্ত করছে।
আমরা ৫০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হবার যে সংখ্যাটি পাচ্ছি, তা শুধুমাত্র টেস্ট করার মাধ্যমে জানা সংখ্যা। পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষকেই করোনার জন্য টেস্ট করা সম্ভব হয়নি নানা কারণে, যার মধ্যে অন্যতম কারণ সরকারগুলোর দূরদর্শিতার অভাব। আমরা যদি পিছনে তাকাই তবে জানুয়ারির ২০ তারিখে দেখা যাবে পৃথিবীর প্রায় কোন দেশই করোনার টেস্ট তেমনভাবে শুরু করেনি, মার্চের ১৮ তারিখে এসে কিছু পরিবর্তন দেখতে পাবেন, মে মাসের ১৮ তারিখে এসে তাতে বেশ উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়েছে (দেখতে পারবেন নিচের টেবিলগুলোতে)।
টেবিলটিগুলোকে আমি মূলত ৩ ভাগে ভাগ করেছি-
১) করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে যারা শুরু থেকে গ্রহণযোগ্য মাত্রার টেস্ট করে একটি ভালো অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছে । এই কাতারে আছে আইসল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, ক্যানাডা এবং জার্মানি।
২) যারা শুরু থেকেই হঠকারী ও নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিয়ে সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেই শুধুমাত্র ব্যর্থ হয়নি, কারণ হয়েছে অসংখ্য মানুষকে আক্রান্ত, সংক্রমিত ও মৃত্যুর মুখে ঠেলা দেবার মাধ্যমে পুরো বিশ্বকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলায়। এই তালিকায় আছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, ও স্পেন।
৩) যে কয়টি দেশ আমাদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে আছে, এবং সামনের দিনগুলোতে করোনার অন্যতম সংক্রমণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হতে পারে, সেগুলো। এই দেশগুলো হচ্ছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ও ভারত।
এছাড়াও এই তিনটি দলের বাইরে চীন, ইরান, ব্রাজিল ও রাশিয়ায় তথ্যের নির্ভরযোগ্যতার অভাব থাকায় আমি খুব বেশি আলোচনা করিনি।
টেবিল ১
* মার্চের ২৮ তারিখের আগে এবং এপ্রিলের ২০ তারিখের পর ব্রাজিলের তথ্য পাওয়া যায়নি। মার্চের ২৮ তারিখে প্রতি লাখে ৩০ জন এবং এপ্রিলের ২০ তারিখে প্রতি লাখে ৬২ জনের টেস্ট করছিল তারা।
** স্পেনে টেস্টের তথ্য পেয়েছি। এপ্রিলের ১৩ তারিখে ১৯৯০টি। তার আগের তথ্য পাইনি।
অধিক টেস্ট করা কেন জরুরি ছিল? বিশ্বব্যাপী করা টেস্টের একটি প্রবাহমান চিত্র
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ শুরু থেকেই বলে এসেছেন করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট কোভিড-১৯ এমন একটি মহামারী যার কোন প্রতিষেধক নেই। ফলশ্রুতিতে সামাজিক ও আচরণগত বিজ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগেই শুধুমাত্র এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। বেশি বেশি টেস্টের মাধ্যমে কোন দেশে সংক্রমণের মাত্রা নির্ধারণ করেই কেবল প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব । কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও এই পরামর্শগুলো সঠিক সময়ে খুব কম দেশেই বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রথমেই দেখে আসা যাক যে দেশগুলো এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো সঠিক সময়ে নিতে সক্ষম হয়েছে।
আইসল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, ক্যানাডা, ও জার্মানি সরকার শুরুতেই অধিক টেস্ট করার সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল
টেবিল ২ এ তাকালে দেখতে পারবেন যে, আমি আইসল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, সুইজারল্যান্ড, ক্যানাডা এবং জার্মানিকে একত্রে রেখেছি।
টেবিল ২
এই পাঁচটি দেশ মার্চের ১৮ তারিখে তাদের জনসংখ্যার অনুপাতে প্রতিলাখে করোনার জন্য টেস্ট করেছিল যথাক্রমে ২২৯৭টি, ৫৬১টি, ৬৩১টি , ১৪৩টি এবং ৩০১টি করে। আজকে দুই মাস পরে তাদের দেশে সর্বমোট মৃত্যুর সংখ্যা যথাক্রমে ১০ জন, ১০০ জন, ১৮৯১ জন, ৫৯০৯ এবং ৮১৬১ জন করে যা তাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে অনেক কম। এখানে উল্লেখ্য, শুধুমাত্র অধিক টেস্ট করলেই যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব তা নয়। টেস্টের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক, হাসপাতাল, পথ্য ও অর্থায়নের মাধ্যমেই কেবল একটি রোগ নির্ণয় এবং নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব, যা এই দেশগুলো করেছে।
এছাড়া আইসল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া ভৌগলিকভাবে সমুদ্রবেষ্টিত ও বিচ্ছিন্ন থাকায় তাদের আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল কড়াকড়ি করার সিদ্ধান্ত করোনা নিয়ন্ত্রণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। উপরোক্ত পাঁচটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের আচরণে দায়িত্বশীলতা, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা এবং সঠিক সময়ে দ্রুততার সঙ্গে কার্যকরী সিদ্ধান্ত নেওয়ার দৃঢ়তা ছিল লক্ষণীয়।
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন ব্যর্থ রাজনৈতিক নেতৃত্বের শিকার
অন্যদিকে চীনে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর অনেকটা সময় হাতে পেলেও কিছু দেশ সঠিক নেতৃত্বের অভাবে করোনা প্রতিরোধে অনেকটা পিছিয়ে পড়ে এবং কার্যকরী সিদ্ধান্ত নিতে বার বার ব্যর্থ হয়। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার প্রধানরা করোনার ভয়াবহতাকে শুরুতে একেবারেই উড়িয়ে দেন। করোনার কেন্দ্রবিন্দু ইউরোপে চলে আসার পরেও ইতালি, ফ্রান্স কিংবা স্পেনে মানুষকে সচেতন করার এবং শারীরিক দূরত্ব মানার ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিতে কোন কার্যকরী ভূমিকা নিতে দেখা যায়নি। বিশেষত ইতালি অনেক দ্রুত আক্রান্ত হবার পরও তার প্রতিবেশী দেশগুলোর শিথিলতা ছিল ক্ষমার অযোগ্য, কেননা মহামারীর ক্ষেত্রে একটি দেশের হঠকারী ভূমিকার জন্য সারা বিশ্বকে চড়া মূল্য দিতে হয়।
টেবিল ৩
কিছুটা বিচ্ছিন্ন, কিছুটা অজানা থেকে যাচ্ছে রাশিয়া, ব্রাজিল, ইরান, ও চীনপ্রাথমিকভাবে যেখানে মার্চের ১৮ তারিখে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি ও ফ্রান্স প্রতিলাখে যথাক্রমে মাত্র ২৯টি, ৮৩টি, ২৭৪টি, ও ৫৬টি করে টেস্ট করছিল, ঠিক দুই মাসের মাথায় এসে তারা এখন যথাক্রমে ৩৪৭৪টি, ২৭৮০টি, ৫০৩০টি, এবং ১২৭৩টি করে টেস্ট করছে। টেস্টের সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্র বাড়িয়ে দিয়েছে প্রায় ১২০ গুনের মত। অন্যদিকে যুক্তরাজ্য বাড়িয়েছে প্রায় ৩৩ গুণ, ইতালি বাড়িয়েছে প্রায় ১৮ গুণ, ফ্রান্স বাড়িয়েছে প্রায় ২৩ গুণের মত। স্পেনও এখন প্রায় ৪১০৫টি করে টেস্ট করছে প্রতি ১ লাখ জনসংখ্যার বিপরীতে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এতদিন পরে তারা আক্রান্ত ও মৃত্যুর ভয়াবহ ঊর্ধ্বগতিতে কিছুটা রাশ টেনে ধরতে পারলেও শুরুর দিকের হঠকারী ভূমিকার জন্য বড় ধরণের ক্ষতির শিকার হয়েছে। এই ৫টি দেশেই আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২৫ লাখ যার মধ্যে এক যুক্তরাষ্ট্রেই প্রায় ১৬ লাখের মতো। এই ৫টি দেশে মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত প্রায় সোয়া ২ লাখ, যা সর্বমোট বৈশ্বিক মৃত্যুর দুই-তৃতীয়াংশ।
ব্রাজিলে আক্রান্তের হার ছুঁয়েছে প্রায় ৩ লাখ, এবং মারা গেছে প্রায় ১৮ হাজার মানুষ। কিন্তু রাশিয়ার মতই ব্রাজিলের তথ্য কতটা নির্ভরযোগ্য সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া কঠিন। রাশিয়ার ক্ষেত্রে শুরুর দিকে কোন তথ্য জানা না গেলেও বর্তমানে প্রায় ৩ লাখ আক্রান্ত এবং ৩ হাজার মৃতের সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে। এখানে উল্লেখ্য, রাশিয়াতে মার্চ মাসের ১৮ তারিখে করোনার জন্য প্রতি লাখে টেস্ট করা হচ্ছিল মাত্র ৮৪টি, যার মাত্রা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৮৯৬ তে।
এছাড়াও তথ্যের ধারাবাহিকতা না থাকায় এবং ইতিমধ্যে বহুল চর্চিত হওয়ায় ইরান ও চীনকে আমি এই আলোচনার বাইরে রেখেছি।
প্রিয় বাংলাদেশ কেমন আছে? কী করছে ভারত ও পাকিস্তান?
বিশ্বের ২৫ শতাংশ মানুষ বাস করে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে, তাই স্বাভাবিকভাবেই এই দেশগুলোর প্রতি সবার একটি আলাদা নজর রয়েছে। ১৮ মার্চে ভারত ও পাকিস্তানে যখন প্রতি লাখে ১ জনের মত মানুষকে করোনা টেস্ট করা হচ্ছিল, তখন বাংলাদেশে হারটা এতই কম ছিল যে তা লাখের হিসেবে ধরা যাচ্ছিল না। সেই তুলনায় ২ মাস পরে এসে ১৮ মে ২০২০ এ করোনার জন্য প্রতিলাখে পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ টেস্ট করাচ্ছে গড়ে যথাক্রমে ১৭৫টি , ১৬৭টি ও ১১৩টি করে। পুরো টেবিলের ১৫টি দেশের মধ্যে টেস্ট করানোর দিক দিয়ে আজ থেকে দু’মাস আগেও বাংলাদেশ ছিল সর্বনিম্ন অবস্থানে, আজ দু’মাস পরেও আমরা আছি তালিকার সবচেয়ে নিচে। বাংলাদেশের অবস্থান ভারত, এমনকি পাকিস্তানেরও নীচে থাকার ব্যাপারটা নিঃসন্দেহে হতাশাব্যঞ্জক।
টেবিল ৪
গত কয়েক সপ্তাহে টেস্ট করানোর হার বাড়িয়ে বাংলাদেশ কিছুটা অগ্রগতি দেখালেও, সেটি যে কেবল প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল তাই নয়, বিশ্ব মানচিত্রে সর্বাধিক আক্রান্ত দেশগুলোর তালিকায় নিচের দিকে, এমনকি উপমহাদেশে ভারত এবং পাকিস্তানের চাইতেও আমাদের অবস্থান নিচে হওয়ায় আমাদের যে এখনও অনেক কিছু করার বাকি আছে সেটি বোধকরি সবার বুঝতে কষ্ট হবে না। যদিও প্রতি লাখে শতকরা হারে ব্যবধান অল্প মনে হয়, কিন্তু সর্বমোট জনসংখ্যার বিবেচনায় টেস্টের পরিমাণে যে ঘাটতি তা বেশ পরিষ্কারভাবেই চোখে লাগে। অন্যান্য দেশের কথা বাদই দিলাম, পাকিস্তানে যেখানে ২২ কোটি জনসংখ্যার বিপরীতে ৪ লাখ টেস্ট করা হয়ে গেছে, সেখানে বাংলাদেশে সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যার বিপরীতে টেস্ট হয়েছে ২ লাখেরও কম।তবে এই তিনটি দেশে মৃত্যুর শতকরা হারে বৈপরীত্য আছে। বাংলাদেশে আক্রান্তের মধ্যে শতকরা ১ দশমিক ৪৭, পাকিস্তানে ২ দশমিক ১৩ এবং ভারতে ৩ দশমিক ৩ ভাগ মারা যাচ্ছেন। এই শতকরা হারটি কোন মহামারীর ক্ষেত্রে সঠিক নির্দেশনা দেয়না। কেননা বর্তমানে আক্রান্তের সবাই সুস্থ কিংবা মারা গেছেন, এই তথ্য এখনও হাতে এসে পৌঁছেনি। কেইস ফ্যাটালিটি রেটের (Case Fatality Rate) একটি সূত্র মহামারীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করলেও, সেটির হারও যে সম্পূর্ণ সঠিক হয় তা নয়, কেবল একটি ধারণা পাওয়া যায়। মহামারীর ক্ষেত্রে মূলত, মহামারী শেষ হবার পর যখন সব আক্রান্তের ব্যাপারে সুস্থ কিংবা মৃত্যুর চূড়ান্ত সংখ্যা পাওয়া যায়, তখনই মৃত্যুর হার নির্ধারণ করা যায়। তবে আপাতত গড় হিসেবে এই তিন দেশে যে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হারে যে বৈপরীত্য দেখা যায়, তাতে করে তথ্য সংগ্রহ এবং উপস্থাপনের ক্ষেত্রে এই তিনটি দেশে অস্বচ্ছতা ও অসামঞ্জস্যতা থাকতে পারে বলে প্রতীয়মান হয়।
‘প্রায় শেষ করা আর একেবারেই শুরু না করা একই কথা’
এটি একটি বাংলা প্রবাদ, শুনেছেন নিশ্চয়ই। বাংলাদেশ কিছু ভালো কাজ শুরু করেছে। টেস্টের সংখ্যা বাড়িয়েছে। কোয়ারেনটাইন চেষ্টা করেছে, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় উপাদানের সরবরাহ বাড়িয়েছে, টেস্টের কেন্দ্র বাড়িয়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দিয়েছে। বেসরকারি সংগঠনগুলোকে যুক্ত করেছে। এছাড়াও পূর্ববর্তী অনুমান, তথ্য-উপাত্তকে এখন পর্যন্ত বেশ দমিয়ে রেখে বাংলাদেশে মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম আছে।
বর্তমানে ২৫ হাজার ১২১ জন আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে করোনা তালিকায় সর্বমোট আক্রান্তের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ২৮। আশার কথা ৩৭০ মৃতের সংখ্যা নিয়ে সর্বমোট মৃত্যুর তালিকায় আমাদের বর্তমান অবস্থান ৩৯। এই তথ্য-উপাত্ত প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। এর আগে কয়েকটি বড় ধরণের জনসমাবেশ হবার পরও সেই তুলনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু বাংলাদেশে হয়নি। কেন হয়নি, তার কোন নিশ্চিত উত্তর আমরা জানি না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত দৃঢ়তার পাশাপাশি তার মন্ত্রী পরিষদেও যদি একটি নাড়া দিতেন, তাহলে দেশবাসী আশ্বস্ত হত। এটি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রী ও আমলাদের বেশ কিছু অগ্রহণযোগ্য কার্যক্রমের পরেও তাদেরকে সরিয়ে না দেওয়াতে মানুষ হতাশ হয়েছে। মনে রাখা দরকার এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি খারাপ হলেও নাজুক পর্যায়ে যায়নি। সরকারের উচিৎ হবে সব ধরণের ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে সবাইকে নিয়ে কাজ করা, ব্যর্থ ব্যক্তিদের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া, এবং ন্যূনতম দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে জনমনে আস্থা ফিরিয়ে আনা।
ভালো থাকবেন সবাই।
লেখক: সোশাল এন্ড বিহেভিয়ারাল হেলথ সায়েন্টিস্ট, ইউনিভার্সিটি অফ টরোন্টো