Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনা ও অর্থনৈতিক মন্দা, আমরা কোন পথে?


৯ জুন ২০২০ ১৬:৪০

কর্মী ছাঁটাই: উদ্যোক্তারা কি আমাদের প্রতিপক্ষ?

এই সময়ে আমার নিজেকে ভাগ্যবান মনে হয়, কারণ কোন ব্যবসায় আমার কোন বিনিয়োগ নেই। করোনার কারণে টুকটাক কিছু অর্থ উপার্জনের সুযোগ পিছিয়ে গেছে বা হাতছাড়া হয়েছে, কিন্তু তাতে ব্যক্তিগত কোন সঞ্চিত সম্পদের ক্ষতি এখনও হয়নি!

আমি ভাবি সেই উদ্যোক্তাদের কথা- যার হয়তো মোট বিনিয়োগের পরিমাণ পাঁচ কোটি টাকা। কোটিখানেক টাকার ব্যাংক ঋণের দায় আছে। ব্যাংকে জমানো তরল অর্থের পরিমাণ ত্রিশ-চল্লিশ লাখ, ত্রিশ থেকে পঞ্চাশজন মানুষকে চাকরি যোগায়। তাদের কী অবস্থা? তাদের হাতে শেষ যে অর্ডারটি ছিল সেটি পাঠানোর জন্য ক্রেতা তাড়া দিচ্ছে, এদিকে করোনায় লকডাউনে কারখানা খোলা বা বন্ধ রাখার জীবন-মরণ সমীকরণ। এরপর জমানো টাকা থেকে বেতন ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ হয়তো দুই তিন মাস চালানো গেলো, তারপর কী হবে? ব্যাংকের দায় মাথায় আছে, আছে অদূর ভবিষ্যতে অর্থ সমাগম (Cash inflow) চালু না থাকার সমূহ সম্ভাবনা।

সেই উদ্যোক্তার জুতোয় পা গলিয়ে চিন্তা করি তার জায়গায় আমি থাকলে কিভাবে সিদ্ধান্ত নিতাম। তার হয়তো ঢাকায় তিনটি অ্যাপার্টমেন্ট কিংবা একটি প্লট আছে, এর কোনটি বিক্রি করে সে আরও ছয় মাস পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার নামে কর্মীদের চাকরিতে রাখবে? অথবা ব্যাংক থেকে আরও ঋণ নিয়ে মাথার ওপর দায় বাড়িয়ে ‘ওয়েট এন্ড সি’ কৌশলে যাবে? যেখানে ভবিষ্যৎ খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়। নাকি ঝুঁকি ও ক্ষতি যথাসম্ভব হ্রাস করে দ্রুত শ্রমিক ছাঁটাই শুরু করবে?

ভেবে পাই না আসলে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। তবে এটুকু জানি যে কোনো উদ্যোক্তা অদূর ভবিষ্যতের ব্যবসার সম্ভাবনা হিসাব-নিকাশ করে ক্ষতি ন্যূনতম মাত্রায় নামিয়ে আনার কৌশলই নেবেন। ব্যবসা ব্যবস্থাপনায় লোকসানের মুখে ব্যবসা চালানোর খরচ ও ক্ষতি কমানোর শুরুর দিকের ধাপই হল শ্রমিক-কর্মচারী ছাঁটাই করে ব্যয় সংকোচন। ব্যাপারটা আমরা যারা চাকরিজীবী তাদের কাছে অমানবিক মনে হতে পারে, কিন্ত ‘অ-ব্যবসায়িক’ নয়। চলমান মন্দার মতো পরিস্থিতিতে একেবারে অনৈতিকও যে নয় তা নিয়েও বিতর্ক হতে পারে।

তাই সরকার যতই প্রণোদনা দিক, চলমান ও আসন্ন মন্দায় চাকরি ছাঁটাই একটি অনিবার্য ঘটনা। যা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন খাতে কমবেশি ঘটছে। শুধু পোশাক শিল্পখাত নিয়েই তুমুল আলোচনা সমালোচনা চলছে, কিন্ত অনেক সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানেও ছাঁটাই আসন্ন।

কিছু উদাহরণ দেই। যেমন ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট ইত্যাদি বড় শহরে তিন থেকে পাঁচ তারকা মানের হোটেলগুলোতে হাজার হাজার কর্মী আছেন যারা দৈনিক মজুরি চুক্তিতে কাজ করে থাকেন। কাজ থাকলে আয় থাকে না হলে নয়। এছাড়া মেট্রোপলিটন শহরগুলোর বড় মাঝারি রেস্টুরেন্ট ও ক্যাফেগুলোতে অসংখ্য কর্মী নিয়োজিত। এরা বর্তমানে বেকার। অদূর ভবিষ্যতেও তাদের অনেকেরই কাজে ফেরার সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা সীমিত, কারণ এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবসা আগের অবস্থায় কবে ফিরবে তা অনিশ্চিত। তেমনই আরও কিছু খাত বিকশিত হচ্ছিল দেশে-  যেমন ইমিগ্রেশন ও বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির পরামর্শক প্রতিষ্ঠান, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ট্রাভেল অপারেটর সংস্থাসমূহ, স্থানীয় এভিয়েশন খাত ইত্যাদি। আগামী অন্তত এক থেকে দুই মৌসুম তাদের ব্যবসায় বড় ধ্বস নামার সম্ভাবনা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে যারা চাকরিরত অনেকেরই তখন চাকরি হারাতে হবে।

চাকরি ছাঁটাই এর ধাক্কা দ্রুত লাগতে পারে আমাদের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াও। পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা নিয়ে যথেষ্ট শোরগোল হলেও গত ঈদে সিংহভাগ গণমাধ্যমকর্মীই যে পুরো বেতন-ভাতা পাননি তা আমাদের মনোযোগের আড়ালেই থেকে গেছে। দেশের অধিকাংশ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম অনেক বছর যাবতই মুনাফা করতে অক্ষম। উদ্যোক্তা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত ভর্তুকি দিয়ে তাদের এই সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রেখেছিল নানা কৌশলগত কারণে। সামনে যদি সেই উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল ব্যবসায় বড় আকারে সংকোচন ঘটে তখন দীর্ঘমেয়াদে আর গণমাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে যাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। সেবাখাতের এমন অনেক ক্ষেত্রেই আমরা অদূর ভবিষ্যতে কর্মী ছাঁটাই দেখতে পাব, যদি বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির অচলাবস্থা আরও দীর্ঘায়িত হয়।

এখানে আমাদের মেনে নিতে হবে যে, অপ্রিয় হলেও বাস্তবে যেকোনো বড় মন্দার প্রথম ধাক্কাই হল কর্মী ছাঁটাই, ফলাফলে বেকারত্ব। এজন্য উদ্যোক্তাদের শত্রু ভাবার দরকার নেই। উদ্যোক্তারা কেউ ইচ্ছা করে প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার আকার ও কর্মীবাহিনী সংকুচিত করতে চান না। নিতান্ত বাধ্য হয়েই সেটা করে থাকেন। এই আর্থ-সামাজিক দুর্যোগে তারাও সবাই কমবেশি বহুমাত্রিক বিপদে আছেন, আমাদের অন্য সবার মতই।

অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবিলা: আমরা কী সঠিক পথে আছি?

সরকারের নীতিনির্ধারক ও আমাদের অধিকাংশ অর্থনীতি বিশ্লেষকদের (কয়েকজন ব্যতিক্রম বাদে) মতামত শুনে বোধ হচ্ছে যে, শুরু থেকেই তারা যে ভুলটি করছেন তা হলো- এই মন্দা যে গত শতকের ‘গ্রেট ডিপ্রেশন’ অথবা ২০০৮ এর বৈশ্বিক আর্থিক মন্দা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এই চিহ্নিতকরণটি করতে পারছেন না। এই মন্দা আগেরগুলোর মতো বিশ্বের মূল পুঁজিবাজারের কেন্দ্রে তৈরি বুদবুদ এর ফলে আর্থিক খাতের পতন থেকে আগত নয়। এটি বৈশ্বিক ও স্থানীয় সাপ্লাই চেইনের চলমান লেনদেনে বিঘ্ন ঘটা থেকে সৃষ্টি, একটি মহামারির ফলাফল। যেখানে ক্রেতা বাজারে যেতে পারছে না, ফলে বিক্রেতার বেচা-বিক্রি নেই, চক্রাকারে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদে সবার ব্যবসায় ক্ষতি, চাকরি ছাঁটাই, আর্থিক খাতে মন্দা ইত্যাদি ঘটছে। এটি থেকে উত্তরণের উপায় বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতার নিয়মিত লেনদেনকে আগের পর্যায়ে ফিরিয়ে আনা, কিন্ত অদূর ভবিষ্যতে অন্তত ভ্যাকসিন আবিষ্কার ও তার বিস্তৃত প্রয়োগের আগে তা হচ্ছে না।

এমতাবস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, কানাডা, জাপানের মতো বড় অর্থনীতিগুলো তাদের পুঁজিবাজার, মুদ্রাবাজার ও আর্থিক খাতকে ভরসা দিতে এবং স্বল্প আয়ের মানুষকে লকডাউনে ঘরে টিকে থাকার মতো টাকার জোগান দিতে নানা প্রণোদনা প্যাকেজ দিল। বাংলাদেশও তার অনেক কিছুই অনুসরণ করল, বেশ কিছুটা তাড়াহুড়ো করেই। যদিও আমাদের পুঁজিবাজার বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে খুবই ক্ষীণভাবে সংযুক্ত, যা প্রায় গুরুত্বহীন। তাই সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে গরিব মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা ছাড়া বাকি উদ্যোগগুলোর অধিকাংশই আরও কিছুটা সময় নিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে অধিক কার্যকর কৌশলে নেওয়া যেত।

প্রণোদনার অধিকাংশ প্যাকেজই ব্যাংকিং খাত নির্ভর স্বল্প সুদের ঋণ। যার সারমর্ম অনেকটা এরকম- ‘ব্যাংকের কাছে টাকা আছে, তাদের কাছে যাও, তারা যদি তোমাকে বিশ্বাস করে ঋণ দেয় ও তুমি ঠিকঠাক ফেরত দাও তাহলে আমরা সুদের ভর্তুকি ব্যাংককে দেব’। এই কৌশলে ব্যাংকের তার গ্রাহকের ওপর সরল বিশ্বাসের চক্রে আপাতত সরকারকে নিজের পকেট থেকে তেমন কিছুই দ্রুত ছাড় করতে হচ্ছে না। আসলে ছাড় করার মতন টাকাও নেই, সরকার নিজেই ব্যস্ত ব্যাংকিং খাত থেকে রেকর্ড ধারকর্জে। এছাড়াও বহুজাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের কাছেও হাত পাততে হচ্ছে। এদিকে রাজস্ব আদায়ও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশ কম, যা এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক।

কিন্ত ব্যাংকিং খাত নির্ভর স্বল্প সুদের ঋণভিত্তিক প্রণোদনার সীমাবদ্ধতা হলো ব্যাংক যাদের বিশ্বাস করে তারা ছাড়া অন্য কেউ এই সহায়তা পাবে না। বিশেষত মাঝারি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের একটি বড় অংশ এর বাইরে থাকবে। আবার গত কয়েক অর্থবছর থেকেই খেলাপি ঋণ ও অন্যান্য সুশাসনের অভাবজনিত কাঠামোগত কারণে রুগ্ন ব্যাংকিং খাতের নিজের স্বাস্থ্যই ছিল ঝুঁকিপূর্ণ। সেই ব্যাংকিং খাতকে দ্রুত সমগ্র অর্থনীতির স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের গুরুদায়িত্ব বড় আকারে কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া নিরাপদ কিনা সেই ভাবনাও বিবেচ্য বটে।

তবে যে প্রশ্নটি আমার মনে সবচেয়ে বেশি ঘুরপাক খাচ্ছে তা হলো- এই আকালের দিনে ঋণ প্রবাহ দ্রুতগতিতে বাড়ানোর যৌক্তিকতা কী? একজন ব্যবসায়ীর আয় যখন বিপন্ন এবং অদূর ভবিষ্যতে তার ব্যবসা সংকুচিত হয়ে যাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা তখন সে কেন ঋণ নেবে, বিশেষত রপ্তানি খাতের প্রতিষ্ঠানসমূহ?

এমন তো নয় যে আমরা উদ্যোক্তাদের ঋণ বাড়ালে তারা উৎপাদন বাড়িয়ে অধিক পণ্য তৈরি করলেই বিদেশি ক্রেতারা প্রস্তুত হয়ে আছে তা কিনতে। সমগ্র বিশ্বে সম্ভাব্য ব্যবসা ও আয় সংকোচনের এই সময়ে গত শতকের মহামন্দার ওষুধ হিসেবে প্রমাণিত কেইনসীয় সূত্র কত দ্রুত আমাদের সুফল এনে দেবে তা আবারও ভেবে দেখা জরুরি। কারণ আগেই বলেছি, এই মন্দা আর্থিক বাজার থেকে উদ্ভূত নয়, বৈশ্বিক ও স্থানীয় সাপ্লাই চেইনের গতি রুদ্ধ হয়ে যাওয়া থেকে সৃষ্ট।

এই অনিশ্চয়তায় অধিকাংশ উদ্যোক্তা ‘সস্তায় পাচ্ছি বলেই নিয়ে নিলাম’ এই ভেবে ঋণ নেবেন না বোধ হয়। কারণ অদূর ভবিষ্যতে যেসব খাতে ব্যবসা আগের অবস্থায় ফিরে যাবার সম্ভাবনা সীমিত সে সকল খাতের উদ্যোক্তারা ঋণের বোঝা বাড়ানোর চেয়ে ব্যয় ও ক্ষতি হ্রাসের পথেই যাবেন। যার প্রথম ধাপই হবে কর্মী ছাঁটাই। যাদের চলমান অর্ডার ও কার্যক্রম টিকিয়ে রাখতে জরুরি ভিত্তিতে টাকা দরকার শুধু তারাই এই প্রণোদনার ঋণ নেবে, যদিও সেটাও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।

আর নিতে পারে সুযোগসন্ধানীরা, যাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন। আমাদের ব্যাংকিং খাতের সাম্প্রতিক বছরগুলোর কর্পোরেট সুশাসনের নজির দেখলে অভিজ্ঞ ও সম্ভাব্য ঋণখেলাপিদের এই সস্তা ঋণ নেওয়া থেকে বিরত রাখার আশা দুরাশাই মনে হয়। তাই কয়েক মাস পরই হয়তো দেখা যাবে এই ক্রান্তিকালেও তারা অনেকে এলসি খুলবে যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য, ক্যাপিটাল বিনিয়োগের নামে। কাগজে কলমে দেখানো হবে ব্যবসা বাড়ানো হচ্ছে, আদতে হবে টাকা পাচার। সস্তা ঋণ দিয়ে দীর্ঘমেয়াদে অনাদায়ী থাকলে ব্যাংক বিপদে পড়বে। একারণেই সম্ভবত ঝুঁকি এড়াতে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ক্রেডিট গ্যারান্টি চাইছে। কিন্ত যে আর্থিক বাজারে সুশাসনের অভাব প্রকট সেখানে বেসরকারি ব্যাংকের ঝুঁকি কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাঁধে তুলে নিলে ব্যাপক নৈরাজ্যের সম্ভাবনা আছে। আবার এই আশ্বাস না পেলে ব্যাংকিং খাত দ্রুত ঋণ প্রদানে কতটুকু আগ্রহ দেখাবে তাও প্রশ্ন, যা সরকারের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের আশাকে শ্লথ করে দেবে। এই দ্বৈত টানাপড়েনের দ্রুত সমাধান দুরূহ।

এই দ্রুত সমাধানের প্রচেষ্টায় সরকার সস্তায় ঋণ দিয়ে ব্যবসায়ীদের বাঁচিয়ে রেখে কর্মী ছাঁটাই ঠেকানোর যে নীতি নিয়েছেন তাতে সুফলের চেয়ে হিতে বিপরীত হয়ে উল্টো আমাদের ব্যাংকিং খাত আরও রুগ্ন হয়ে পড়ার আশংকা আছে। দ্রুত অর্থনীতির স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের এই চেষ্টাটাই বিপদজনক হয়ে উঠতে পারে, কারণ এটি আর্থিক খাত বা মুদ্রাবাজার থেকে সৃষ্ট সংকট নয়, মূল অর্থনীতিতে ক্রেতা ও বিক্রেতা লেনদেন করতে না পারার ফলে বৈশ্বিক ও স্থানীয় সাপ্লাই চেইনের বিঘ্নজনিত মন্দা। এর দ্রুত সমাধানের কোন টোটকা নেই।

তাহলে কী হবে? উত্তর হলো- বেকারত্ব বাড়বে, অর্থনীতি শ্লথ হবে। আর চলমান অচলাবস্থা কতদিন স্থায়ী হয় ও তা সাপ্লাই চেইনে কী কী স্থায়ী প্যারাডিম শিফট নিয়ে আসে তা দেখার জন্য আমাদের আপাতত অপেক্ষা করা ছাড়া গতি নেই। এটি অনেকটা আইসিইউতে থাকা মরণাপন্ন রোগীর মতো অবস্থা, ঘণ্টায় ঘণ্টায় যার অবস্থা পরিবর্তন হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে অর্থনীতিবিদদের যেকোনো অলৌকিক ভবিষ্যদ্বাণীর প্রবণতা থেকে আত্মসংবরণ জরুরি। আর চিকিৎসক হিসেবে সরকারের উচিত হবে দ্রুত রোগ সারিয়ে তোলার যেকোনো ‘মহৌষধ’ প্রয়োগের প্রবণতা থেকে বিরত থাকা।

এই মন্দা খুব দ্রুত সারবে না। তাই অনেক অপ্রিয় পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার জন্য আমাদের প্রস্তত থাকতে হবে। সেই বাস্তবতা মেনে নিয়ে নীতি নির্ধারণই হবে বিচক্ষণ কৌশল।

লেখক: উন্নয়ন গবেষক

করোনা করোনাভাইরাস


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর