বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ কোথায়?
১৪ আগস্ট ২০২০ ১৩:৪৩
‘আমি স্পষ্ট ভাষায় বলে দিতে চাই যে, বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে। আর তার কোন বিশেষ কোনো ধরর্মের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হবে না। রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।’
১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে স্বদেশে ফেরার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রথম ভাষণেই খুব স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন যে, বাঙালি জাতীয়তাবাদের ওপর তৈরি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভিত্তি কোন নির্দিষ্ট ধর্ম বা ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে না। বরং প্রত্যেক ধর্মের মানুষের নিজ নিজ ধর্ম পালনের সমান অধিকার থাকবে, প্রত্যেকের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে, এবং মতামতের স্বাধীনতা থাকবে। রাষ্ট্র কখনই কোন নির্দিষ্ট ধর্মের বা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করবে না, বরং প্রত্যেক ধর্মের ধর্মাবলম্বীদের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাই রাষ্ট্রের কাজ হবে। ধর্ম-বর্ণ-মত নির্বিশেষে সব নাগরিকের মাঝে ন্যায়পূর্ণ সুশাসন কায়েম ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় নিখুঁত নিরপেক্ষতা অবলম্বনের জন্য রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ হওয়ার কোন বিকল্প নেই।
রাষ্ট্র নিজ নাগরিকদের যে কোনো ধর্ম গ্রহণ-বর্জন বা লালন পালন- এসব বিষয়ে কোনরূপ হস্তক্ষেপ বা পক্ষপাতিত্ব না করে পূর্ণ নিরপেক্ষতা অবলম্বন করবে।এর ফলে প্রত্যেক নাগরিক তার ধর্মীয় স্বাধীনতা পাচ্ছে কিনা, নিসংকোচে মুক্ত-স্বাধীন পরিবেশে তার ধর্ম পালন করার এবং না পালন করার অধিকার নিশ্চিত হচ্ছে কিনা সেটি পরিষ্কার হবে। আস্তিক-নাস্তিক, মুসলিম-অমুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ অথবা খ্রিস্টান বা যেকোন ধর্মাবলম্বীর সবার অধিকার এদেশে হবে সমান। যে মুহুর্তে রাষ্ট্র ধর্মনিরপেক্ষ হতে পারবে, তখনই কেবল রাষ্ট্র জনগণের জন্য অসাম্প্রদায়িকতা নিশ্চিত করতে পারবে। এক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আরেক সম্প্রদায়ের বিশেষত ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উসকানি প্রদান অথবা পরিকল্পিত আক্রমণ সংগঠিত হয় তখনই, যখন রাষ্ট্র কোন বিশেষ ধর্ম বা সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের পক্ষপাতিত্ব করে, রাষ্ট্রীয় নানা নীতির মাধ্যমে ক্রমাগত কোন বিশেষ ধর্মাবলম্বীদের সকল প্রকার সুবিধা ও অন্যায় পক্ষাবলম্বনের মাধ্যমে বাকি সকল ধর্ম-বর্ণ, মত ও পথের অনুসারীদের প্রতি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ বৈষম্য তৈরি করা হয় এবং এটি দিন দিন বাড়তেই থাকে। এর ফলে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ ডালপালা মেলে ছড়ানোর সুযোগ পায়, যা ধীরে ধীরে পুরো রাষ্ট্র ব্যবস্থাকেই উগ্র ধর্মান্ধ ও জঙ্গিবাদী করে তোলে।
সেজন্যই বঙ্গবন্ধু তার স্বপ্নের সোনার বাংলায় যে কোন মূল্যে অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মনিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে জাতীয় মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতা যুক্ত হয়েছিল, যা পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে নির্মূল করবার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালানো হয়েছে। এই বাংলার হাজার বছরের পুরনো সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর সকল ধর্মের মানুষের ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সহাবস্থানের ঐতিহ্যের শক্তিতে একাত্তরে উগ্র ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাভূত করে যে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল, হিন্দু-মুসলিম-খ্রিস্টান-বৌদ্ধসহ সব সম্প্রদায়ের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে যে বাংলাদেশের জন্ম দিয়েছিলেন, যে সাম্প্রদায়িকতা, উগ্র ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করে শেষ পর্যন্ত নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন, সেই বাংলাদেশকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। জাতির জনকের রক্তের উপর দাঁড়িয়ে সেই পুরনো শকুনের দল পরাজিত পাকিস্তানী উগ্র ধর্মান্ধ শক্তি পাল্টে ফেলতে চেয়েছিল এই রাষ্ট্রের খোলনলচে। ফলে সব ধর্ম ও নানা মত-পথের লোকদের জন্য সমান নাগরিক ও সাংবিধানিক অধিকার আর পুরপুরি নিশ্চিত করা যায়নি। বরং সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম যোগ করে ধর্মনিরপেক্ষতার মূল ভিত্তিটা অনেকটাই অর্থহীন করে ফেলা হয়েছে, যার ফলশ্রুতিতে পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বেড়েছে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উপর সাম্প্রদায়িক আক্রমণ ও উগ্র ধর্মান্ধতা।
সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশকে উদার অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ একটা রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধু কতটা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন, তার একটা ছোট্ট প্রমাণ পাওয়া যায় ১৯৭৩ সালে জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে। একাত্তরে ধর্মের নামে লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষের উপর গণহত্যা ও নির্বিচারে গণধর্ষণ চালানোর পরেও পাকিস্তানকেই সত্যিকারের মুসলিম দেশ হিসেবে গণ্য করা আরব রাষ্ট্রগুলো তখনও পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি। অবশ্য একাত্তরে বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানের ভয়ংকরতম যুদ্ধাপরাধ চালাবার সময়েও তারা ইসলাম রক্ষার অজুহাতে সর্বাত্মকভাবে পাকিস্তানের পক্ষেই ছিল। তাদের চোখে বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের মুসলমানেরা কখনো সহীহ মুসলমান হয়ে উঠতে পারেনি, বরং হিন্দুপ্রধান ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসেবেই বিবেচিত হয়ে এসেছে। ফলে তখনও পর্যন্ত বাংলাদেশের মুসলমানেরা পবিত্র হজ পালনের জন্য সৌদি আরব যাবার অনুমতি পায়নি।
জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু আলজেরিয়ার রাজধানী আলজিয়ার্সে। সারা বিশ্বের কাছে তখন তিনি আত্মমর্যাদাসম্পন্ন এবং সাম্রাজ্যবাদবিরোধী মুক্তিসংগ্রামের মহানায়ক। তার সঙ্গে দেখা করতে ছুটে এসেছিলেন একই সম্মেলনে অংশ নেয়া কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো। এ সম্মেলনে বৈঠক হয় লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি ও সৌদি বাদশাহ ফয়সালের সঙ্গে। তারা বঙ্গবন্ধুকে শর্ত দেন, বাংলাদেশকে ‘ইসলামিক রিপাবলিক’ ঘোষণা করলে তারা স্বীকৃতিসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেবেন। গাদ্দাফি বঙ্গবন্ধুর কাছে জানতে চান, বাংলাদেশ তাদের কাছে কী চায়? বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘আমরা চাই লিবিয়ার স্বীকৃতি। স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতি লিবিয়ার স্বীকৃতি।’ গাদ্দাফি জানান, এর জন্য বাংলাদেশের নাম বদলিয়ে ইসলামিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশ করতে হবে। বঙ্গবন্ধু পাল্টা জবাব দেন, ‘এটা সম্ভব নয়। কারণ বাংলাদেশ সবার দেশ। মুসলমান, অমুসলমান সবারই দেশ।’
বঙ্গবন্ধু তার সকল ধর্মের জনগণের প্রতি কতটা নিবেদিত ছিলেন এবং অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ চেতনা সমুন্নত রাখতে কতটা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন, তা বোঝা যায় সৌদি বাদশাহ ফয়সালের সঙ্গে তার কথোপকথনেঃ
বাদশাহ ফয়সাল: আপনারা কিংডম অব সৌদি আরাবিয়ার কাছ থেকে কী চাইছেন?
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: বাংলাদেশের পরহেজগার মুসলমানরা পবিত্র কাবা শরিফে নামাজ আদায়ের অধিকার চাইছে। এক্সেলেন্সি, আপনিই বলুন সেখানে তো কোনো শর্ত থাকতে পারে না? আপনি হচ্ছেন পবিত্র কাবা শরিফের হেফাজতকারী। এখানে দুনিয়ার সব মুসলমানের নামাজ আদায়ের হক আছে। … আমরা আপনার কাছে ভ্রাতৃসুলভ সমান ব্যবহার প্রত্যাশা করছি।
বাদশাহ ফয়সাল: এসব তো রাজনৈতিক কথাবার্তা হল না। এক্সেলেন্সি, বলুন আপনারা কিংডম অব সৌদি আরাবিয়ার কাছ থেকে কী চাইছেন আসলে?
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: এক্সেলেন্সি, আপনি জানেন, ইন্দোনেশিয়ার পর বাংলাদেশ হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যার দেশ। তাই আমি জানতে চাইছি কেন সৌদি আরব আজ পর্যন্ত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিচ্ছে না?
বাদশাহ ফয়সাল ]: আমি করুণাময় আল্লাহ ছাড়া আর কারও কাছে জবাবদিহি করি না। তবু আপনি একজন মুসলমান তাই বলছি, সৌদি আরবের স্বীকৃতি পেতে হলে বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন করে ‘ইসলামিক রিপাবলিক’ করতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: বাংলাদেশের জন্য এটি প্রযোজ্য হতে পারে না। বিশ্বের দ্বিতীয় মুসলিম জনসংখ্যার দেশ হলেও এখানে ১ কোটির উপর অমুসলিম রয়েছে। সবাই একসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে; নির্যাতিত হয়েছে। তাছাড়া এক্সেলেন্সি, সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে পরম করুণাময় আল্লাহ তো শুধু ‘আল মুসলিমিন’ না, তিনি রাব্বুল আলামিন। সবার স্রষ্টা। ক্ষমা করবেন, আপনাদের দেশে নাম তো ‘ইসলামিক রিপাবলিক অব সৌদি আরাবিয়া’ নয়। বরং মরহুম বাদশাহ ইবনে সৌদের সম্মানে ‘কিংডম অব সৌদি আরাবিয়া’। কই আমরা কেউ তো এ নামে আপত্তি করিনি।
২৩ জুন ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক আদর্শের অধিকতর প্রতিফলন ঘটানোর উদ্দেশ্যে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’-এ পরবর্তিত হয়ে যাওয়ার পেছনে অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করা বঙ্গবন্ধু ছিলেন পাকিস্তানী ভাবধারার উগ্র ধর্মান্ধ রাজনৈতিক শক্তির প্রধানতম শত্রু। সেজন্যই পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের খবরটা জুলফিকার আলী ভুট্টোর কাছে পৌঁছাবার পর নতুন প্রেসিডেন্ট খন্দকার মোশতাক আহমেদের সরকারকে সবার আগে স্বীকৃতি দেয় পাকিস্তান। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর সাথে সাথে অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের কবর রচিত হয়ে যাবার খুশিতে স্বীকৃতির সাথে সাথে মোশতাক সরকারকে বিশেষ উপহারও পাঠায় পাকিস্তান। বিশেষ মিশন সফল হলে যেমন উপহার দেয় কর্তৃপক্ষ। ৫০ হাজার টন চাল, প্রচুর থানকাপড় এবং অন্যান্য উপহার সামগ্রী নিয়ে ‘ইসলামিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশে’ এর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেওয়ার প্রস্তুতি নেয় পাকিস্তানি জাহাজ সাফিনা-ই-ইসমাইল।
পাকিস্তানের এমন বাঁধহারা খুশির অবশ্য কারণও ছিল। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে শেষ করে দিয়ে বাংলাদেশের সুন্নতে খাতনাটাও সেরে ফেলে খুনির দল। রক্তাক্ত সে ভোরে ইথারে ভেসে আসে:
আমি মেজর ডালিম বলছি। স্বৈরাচারি শেখ মুজিবকে হত্যা করা হয়েছে। জননেতা খন্দকার মোশতাক আহমদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করেছে। দেশে সামরিক আইন জারি করা হয়েছে এবং সারাদেশে কারফিউ জারি করা হয়েছে। বাংলাদেশ এখন থেকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র।
অর্থাৎ খুনীর দলের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল ৩০ লাখ শহীদের রক্তের উপর দাঁড়ানো বাংলাদেশকে আবারও উগ্র ধর্মান্ধ শকুনের ভাগাড় পাকিস্তানে পরিণত করা। পঁচাত্তরের পরের বাংলাদেশকে দেখলে, টানা ২১ বছর নানাভাবে উগ্র সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রাষ্ট্রক্ষমতা আঁকড়ে ধরে থাকা পর্যবেক্ষণ করলে খুনীদের মূল উদ্দেশ্য বুঝতে একটুও কষ্ট হয় না। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর সাথে সাথে সেই যে সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল, আজও বাংলাদেশ সঠিক রাস্তায় ফিরতে পারেনি, দুর্ভাগ্যজনকভাবে ধর্ম-বর্ণ-মত নির্বিশেষে রাষ্ট্র সকল জনগণের হয়নি। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনের উদ্বোধনী ভাষণে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু খুব গুরুত্বপুর্ণ কিছু কথা বলেছিলেন। কথাগুলো আজও সমানভাবে প্রয়োজনীয়, অনুসরণীয়:
‘রাজনীতিতে যারা সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে, যারা সাম্প্রদায়িক, তারা হীন, নিচ, তাদের অন্তর ছোট। যে মানুষকে ভালোবাসে সে কোনো দিন সাম্প্রদায়িক হতে পারে না। আপনারা যারা এখানে মুসলমান আছেন তারা জানেন যে, খোদা যিনি আছেন তিনি রাব্বুল আলামিন। রাব্বুল মুসলিমিন নন। হিন্দু হোক, খ্রিস্টান হোক, মুসলমান হোক, বৌদ্ধ হোক সব মানুষ তার কাছে সমান। সেজন্যই একমুখে সোশ্যালিজম ও প্রগতির কথা এবং আরেক মুখে সাম্প্রদায়িকতা পাশাপাশি চলতে পারে না। একটা হচ্ছে পশ্চিম। যারা এ বাংলার মাটিতে সাম্প্রদায়িকতা করতে চায়, তাদের সম্পর্কে সাবধান হয়ে যাও। আওয়ামী লীগের কর্মীরা, তোমরা কোনো দিন সাম্প্রদায়িকতাকে পছন্দ করো নাই। তোমরা জীবনভর তার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছ। তোমাদের জীবন থাকতে যেন বাংলার মাটিতে আর কেউ সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপন না করতে পারে।’
জাতির জনকের সেই দিকনির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশকে তার সঠিক গন্তব্যে, উদার অসাম্প্রদায়িক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে পরিণত করবার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নাগরিকেরা কোথায়?
উগ্র ধর্মান্ধতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশ সাম্প্রদায়িক আক্রমণ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি