Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

খেরসন থেকে রাশিয়ার পিছু হটা, পরাজয় না কৌশল?

মাহমুদুল হাসান শামীম
১৬ নভেম্বর ২০২২ ১৭:২১

খেরসনে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের আশংকা করা হচ্ছিল। কিন্তু একটি গুলি না ছুড়েই খেরসন পুনরুদ্ধার করেছে ইউক্রেনের সেনারা। বিজয়ের পতাকা উড়িয়ে আনন্দ উল্লাস করছে তারা। কিন্তু চিন্তার ভাজ ন্যাটো আর মার্কিন জেনারেলদের কপালে। কোন প্রতিরোধই করেনি রাশিয়া। ইউক্রেন বাহিনী আসছে দেখে তারা সরে গেছে দিনেপর ( ইউক্রেন ভাষায় দিনিয়াপ্রো) নদীর অন্য পাড়ে। তার আগে তারা সরিয়ে নিয়েছে খেরসনের প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার অধিবাসীকে। সরিয়ে নিয়েছে তাদের সব ধরণের সমরাস্ত্র। কোন ধরণের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই এই পশ্চাদপসারণ সম্পন্ন করেছে রুশরা। রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর তরফ থেকে বলা হয়েছে এটি পরিকল্পিত রিট্রিট। সাধারণ মানুষের জীবনহানী ও অপ্রয়োজনীয় ক্ষয়ক্ষতি থেকে রুশ সেনাদের বাচাঁতেই এই পিছিয়ে আসা।

বিজ্ঞাপন

খেরসন সামরিক কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ শহর। এটিতে ইউক্রেন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে রাশিয়ার অন্তর্ভূক্ত করে নেয়া ক্রিমিয়া অঞ্চল হুমকির মুখে পড়বে। বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর রাশিয়ার দখল করা একমাত্র প্রাদেশিক রাজধানী খেরসন। সম্প্রতি দখল, রেফারেন্ডাম ও সাংবিধানিক আইনের মাধ্যমে যে চারটি অঞ্চলকে রাশিয়ার অঙ্গীভূত করা হয়েছে খেরসন তার একটি। মূলত এখন এটি রাশিয়ার অংশ। রাশিয়া কোন ধরণের প্রতিরোধ ছাড়াই সে অংশ ছেড়ে দিয়েছে এটি অবাক করা ব্যাপার। রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে খেরসন থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি সহজ ছিল না। কিন্তু কৌশলগত কারণে এই পদক্ষেপ নিতে হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

অনেকেই খেরসন থেকে রাশিয়ার পশ্চাদপসারণকে ইউক্রেনের রাজনৈতিক ও সামরিক বিজয় এবং রাশিয়ার পরাজয় হিসেবে দেখছেন। কিন্তু মার্কিন সাবেক সামরিক কৌশল বিশেষজ্ঞ স্কট বেনেট বলেছেন -এটি একটি বিচক্ষণ ও চমকপ্রদ সিদ্ধান্ত। সৈন্য প্রত্যাহারের এই পদক্ষেপকে তিনি কৌশলগত সঠিক সিদ্ধান্ত বলে আখ্যায়িত করেছেন।

হঠাৎ করেই রাশিয়া এই সিদ্ধান্ত নেয়নি। সামরিক অভিযানের নতুন অধিনায়ক হিসেবে নিযুক্তির পরই জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিন এই অঞ্চলে স্ট্র্যাটেজিক দূর্বলতা বুঝতে পেরে এই পরিকল্পনার কথা জানান রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী শোইগুকে। পর্যালোচনার পরই খেরসন থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দীর্ঘ দুই মাস ধরে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয়। এ সময় প্রথমে খেরসনের ১ লক্ষ ৮০ হাজার অধিবাসীর মধ্যে সরে যেতে ঐচ্ছুক সবাইকে সরিয়ে নেয়া হয় রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে। তারপরই দিনেপর নদীর ডান তীর থেকে সেনা ও সমরাস্ত্র সরিয়ে বাম তীরে নতুন ডিফেন্স লাইনে সরিয়ে আনা হয়। এজন্য অগ্রসরমান ইউক্রেনীয় সেনাদলগুলোকে খেরসন থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে আটকে রাখা হয়। তাদের দুরপাল্লার কামানগুলো দফায় দফায় ধ্বংস করা হয়। ফলে প্রত্যাহারের কাজটি কোন ধরণের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই শেষ হয়।

খেরসনের যে অংশ থেকে রুশ সেনাদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে সেটি শহরের একটি অংশ। এর কৌশলগত দুর্বলতা হচ্ছে এটি পুরনো ভঙ্গুর কয়েকটি সেতু দ্বারা শহরের বৃহত্তর অংশের সঙ্গে সংযুক্ত। এই সেতুগুলো সহজেই ভেঙ্গে দেয়া যেতো। তাতে ঐ অংশে থাকা রুশ সেনারা মূল অংশ থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতো। অন্যদিকে খেরসনের অন্য প্রান্তের পাশেই ইউক্রেন ও ভাড়াটে সেনাদের অবস্থান। খেরসন অনেক বড় প্রদেশ। ইউক্রেনীয় সেনা নিয়ন্ত্রিত প্রদেশগুলোর মধ্যে এর সীমানা বেশিরভাগই দিনেপার নদী কেন্দ্রিক। ফলে খুব সহজেই সাপ্লাই লাইন থেকে বিচ্ছিন্ন ও ঘেরাওয়ের মধ্যে পড়ে যেতো রুশ সেনা ইউনিটগুলো। এতে হাজার হাজার রুশ সেনার জীবনহানি ঘটত এবং বিপুল সমরাস্ত্র হারাতে হতো।

আরেকটি কৌশলগত দুর্বলতা হচ্ছে কাখোবস্কায়া বাঁধ। এটি ভেঙ্গে দিলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে হাজার হাজার সেনা ও সাধারণ নাগরিকের জীবনহানি ঘটত। ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার মাধ্যমে শহরটিকে নরকপুরিতে পরিণত করা এবং সেতুগুলো ও বাধ ভেঙ্গে দিয়ে রুশবাহিনীকে বিপর্যস্ত করার পরিকল্পনা ছিল কিয়েভের। এজন্য তারা দুরপ্লালার আক্রমণের চেষ্টা করেছিল বাধ, সেতু, শহরে। গোয়েন্দাদের কাছ থেকে আগাম তথ্য পাওয়ার পরই রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সুরোভিকিনের পরিকল্পানায় সায় দেয় এবং দ্রুত বাস্তবায়ন শুরু করে। ভবিষ্যত পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সরিয়ে নেয়া হয় সাধারণ নাগরিকদের। রাশিয়া এটি দখলের জন্য পরে জোরদার আক্রমণ চালাবে। আগে দেখা গেছে রুশ আক্রমণের সময় সাধারণ নাগরিকদের মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নাৎসী এবং ইউক্রেনীয় সেনারা। তারা বিভিন্ন আবাসিক ভবন, স্কুল শপিংমলে অবস্থান নিয়ে রুশদের রক্তক্ষয়ী নগর যুদ্ধে জড়ানোর কৌশল নেয়। আগামীতে রুশ আক্রমণের সময় ইউক্রেনীয় বাহিনী যেন এ সুবিধা না পায় সেজন্যই সরে যেতে ইচ্ছুক নাগরিকদের রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। খেরসন রুশ অধুষ্যিত অঞ্চল। এখানকার সিংহভাগ মানুষই রাশান।

রাশান সেনাবাহিনীকে যে ফাঁদে ফেলতে চেয়েছিল কিয়েভ ও ন্যাটোর জেনারেলরা। তাদের সব পরিকল্পনা ভন্ডুল হয়ে গেছে রাশিয়ার এই পশ্চাদপসারণ কৌশলে। ইউক্রেনই এখন ঐ ফাঁদে পড়েছে। ন্যাটোর অনেক বিশেষজ্ঞই এটি বুঝতে পারছেন। মার্কিন সামরিক বিশ্লেষক এবং সাবেক ইউএস মেরিন কর্পস গোয়েন্দা কর্মকর্তা স্কট রিট বলেছেন খেরসনের কিছু অংশ থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারকে রাশিয়ার পরাজয় হিসেবে দেখা ঠিক নয় বরং এটা ইউক্রেন বিজয়ে রাশিয়ার আরেক ধাপ অতিক্রম। আপাতত মনে হতে পারে এমন সিদ্ধান্তের কোন মূল্য নেই। কিন্তু বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে ইউক্রেন বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সেনাদের প্রয়োজনীয় সাপ্লাই পাঠানো সম্ভব হতো না । ফলে ছোট একটি ভূখন্ড ধরে রাখার জন্য হাজার হাজার সেনার জীবন নষ্ট হতো। সে কারণে কৌশলগতভাবে এটি রাশিয়ার যৌক্তিক সিদ্ধান্ত।

স্কট রিটের এই বিশ্লেষণটি সঠিক বলেই মনে হচ্ছে। এখন নতুন ডিফেন্স লাইনে সমরশক্তি সংহত করবেন সুরোভিকিন। আরো সৈন্য ও সমরাস্ত্রের সমাবেশ ঘটাবেন। শক্তি বাড়াবেন। শীতের জন্য অপেক্ষা করবেন। জ্বালানী,বিদ্যুতে নাকাল হওয়া ইউক্রেনীয় বাহিনীর উপর তখন বিধ্বংসী আক্রমণ শুরু করবেন। সাধারণ নাগরিকহীন শহরে সুরোভিকিন পোড়ামাটি আক্রমন চালাবেন। এরপর যেটি হবে রুশ বাহিনী তখন শুধু খেরসনের ঐ অংশই পুনরুদ্ধার করবে না তারা আরো এগিয়ে নিকোলাইভ প্রদেশটিও দখল করে নিবে। যাতে এবারের মতো অভিষ্যতে ঐ প্রদেশ থেকে শক্তি সঞ্চয় করে আর কোন আক্রমণ যেন চালাতে না পারে ইউক্রেনীয় বাহিনী। খেরসন থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি ইউক্রেনের সেনাদের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাস্ট্র এবং ন্যাটোর ভাড়াটে বাহিনীকে ধ্বংস করতে মস্কোর একটি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার অংশ।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, ‘খেরসন ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে মস্কো অপমানজনক মনে করে না। খেরসন রাশিয়ার অংশ সুতরাং এর অবস্থানের কোন পরিবর্তন হতে পারে না। রাশিয়া সমস্ত খেরসন অঞ্চলকে তার নিজস্ব ভুমি হিসেবে বিবেচনা করে।’

এর মানে পরিস্কার– কৌশলগত কারণে রাশিয়া খেরসন থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করলেও এ অঞ্চলটি তারা আবার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেবে। ইউক্রেনের হাতে ছেড়ে দেবে না। রাশিয়ার এ ধরণের কৌশলগত পশ্চাদপসারণ ও সাফল্যের ঐতিহাসিক নজীর রয়েছে। ১৭০০-১৭২১ সালে সুইডেনের বিরুদ্ধে উত্তরের মহান যুদ্ধ ১৮১২ সালে রাশিয়ায় ফরাসি আক্রমণ এবং ১৯৪১-১৯৪৫সালে নাৎসী জার্মানির বিরুদ্ধে গ্রেট প্যাট্রিয়টিক ওয়ার বা মহান পিতৃভূমি যুদ্ধের সময় একই কৌশলে সাফল্য পেয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। ঐ সময় তারা শত শত কিলোমিটার পর্যন্ত কৌশলগত পশ্চাদপসারণ করেছে। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের কথাই ধরা যাক। হিটলারের রাশিয়া দখলের স্বপ্ন অপারেশন বারবারোসা একই কৌশলে ভন্ডুল করে দিয়েছিলেন স্তালিন। প্রায় ৩০০০ কিলোমিটার জুড়ে ৩৫ লক্ষ জার্মান সেনা, ৬ লক্ষ অশ্বারোহী বাহিনী, ৬ লক্ষ মোটর হেভিকলস, সাড়ে তিন হাজার ট্যাঙ্ক, ২৭০০ যুদ্ধ বিমান,২৩ হাজার কামান, ১৭ হাজার মর্টার নিয়ে জার্মান বাহিনী রাশিয়ায় ঢুকে পড়ার পরও বিচলিত হননি রুশ নেতৃত্ব। নাৎসীদের মস্কোর ১২ কিলোমিটারের কাছাকাছি আসতে দিয়েছিলেন। এই পশ্চাদপসারণের পরই শুরু পাল্টা আক্রমণ। তিন দিক দিয়ে ঘেরাও করে বিশাল জার্মান বাহিনীকে জান বাঁচাতে ব্যস্ত রেখে লেলিনগ্রাদের অন্য পাশ দিয়ে রুশ বাহিনী তখন শুরু করে বার্লিন যাত্রা। পরের ইতিহাস সবার জানা।

এখানেও রুশ বাহিনীর নতুন অধিনায়ক সুরোভিকিন দায়িত্ব নিয়েই ইউক্রেন বাহিনীর যেসব ইউনিট রাশিয়ানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিল বিভিন্ন জায়গায় তিনি তাদের প্রলুব্দ করেন খেরসনের দিকে এগোতে। আগেই বলেছি খেরসন কৌশলগতভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এখানে ছোট ছোট সাফল্য দেখে ন্যাটো জেনারেলরা ইউক্রেনীয় বাহিনীকে এদিকে সমবেত করেন। দিনেপর নদী জুড়ে রুশ বাহিনীর কৌশলগত দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে মুল বাহিনীকে থেকে সহজেই বিচ্ছিন্ন করে রুশ ইউনিটগুলোকে ঘেরাও করে ফেলা। সাপ্লাই লাইন বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে জ্বালানী, খাদ্য ও রসদ সংকটে পড়া রুশ সেনাদের বেকায়দায় ফেলে হত্যা করা। শহর কেন্দ্রিক যুদ্ধে ব্যাপক বেসামরিক প্রাণহানীর মধ্য দিয়ে লুহানেস্ক, ও দনিয়েস্কের রুশ ভাষীদের বার্তা দেয়া—- এগুলো ছিল ইউক্রেনীয় ও ন্যাটো উপদেষ্টাদের পরিকল্পনা। কিন্তু রুশ সেনা প্রত্যাহারে এ তিনটি উদ্দেশ্যই ভেস্তে গেছে। তবে রুশ সেনা প্রত্যাহারের ফলে ইউক্রেন রাজনৈতিক ও সামরিক বিজয় উল্লাসের সুযোগ পেয়েছে। পশ্চিমা বিশ্বের নেতারা ইউক্রেনের সাফল্যে পঞ্চমুখ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও পশ্চিমা বিশ্বকে বলতে পারছেন – দেখো তোমাদের দেয়া সাহায্য বিফলে যায় নি। আরো সাহায্য দাও আমরা ইউক্রেন থেকে রুশদের তাড়িয়ে দেবো।

কিন্তু সামরিক কৌশলে দারুণ বিচক্ষণ জেনারেল সুরোভিকিন সিরিয়ায় যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিলেন সেটি এবার চালাবেন খেরসনে। বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ায় খেরসনে তার বিধ্বংসী আক্রমণ চালাতে বাড়তি সুবিধা দিবে। মানববিহীন ড্রোন আক্রমণে এবার তিনি কচু কাটা করবেন ইউক্রেন ও তাদের ভাড়াটিয়া সেনাদের। এমনটিই ভাবছেন অনেক পশ্চিমা সমরবিদ। আর কি আছে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু ও রুশ বাহিনীর অধিনায়ক জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনের মাথায় শীত শুরু পরই তা হয়তো বুঝা যাবে।

লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

খেরসন থেকে রাশিয়ার পিছু হটা- পরাজয় না কৌশল? মত-দ্বিমত মাহমুদুল হাসান শামীম

বিজ্ঞাপন

বরিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৩১

বাঘায় কৃষককে গলা কেটে হত্যা
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৪৩

আরো

সম্পর্কিত খবর