Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সারাবাংলা জয় করুক পাঠকের হৃদয়

এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া
৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:১২

অগণিত পাঠকের হৃদয়ে সথান করে অর্ধযগে পদার্পন কলো অনলাইন নিউজপোর্টাল সারাবাংলা। অল্প সময়ে পাঠকপ্রিয় নিউজপোর্টাল হিসাবে সমাজ উন্নয়নেও ভূমিকা রেখেছে সারাবাংলা। অনুসন্ধানী সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রেও গণমাধ্যম হিসেবে পাঠকের মনে জায়গা করে নিয়েছে। তারা দেশ ও দশের কথা বলে, মাটি ও মানুষের কথা বলে। সততা ও বস্তুনিষ্ঠতার সঙ্গে কাজ করে পাঠকের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনে সমর্থ হয়েছে।

গণতন্ত্র বা সমাজতন্ত্র যাই হোক না কেন আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় নাগরিকের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক কাঠামো ক্রমাগত যুক্তিযুক্ত ও মানবিক করার অব্যাহত প্রচেষ্টার মাঝেই রয়েছে সভ্যতার উৎকর্ষ সাধণে মানুষের চিরকালীন আকাঙ্ক্ষা। যে আকাঙ্ক্ষা পূরণে গণমাধ্যম একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু।

বিজ্ঞাপন

সংস্কৃতি ও সভ্যতার বিকাশে গণমাধ্যম নতুন যুগের সূচনা ঘটিয়ে থাকে। মানুষের ভাবনা, চিন্তা, ধর্ম, রাজনীতি, আদর্শের বাহন হচ্ছে গণমাধ্যম। ‘মুক্তচিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা’ শব্দ দুটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে গণমাধ্যমের কল্যাণে। গণমাধ্যম আধুনিক সমাজের একটি অপরিহার্য অংশ। যেকোনো জ্ঞানভিত্তিক গণতান্ত্রিক সমাজে গণমাধ্যম তথ্য ও জনগণের মতামত, বিশ্বাস গঠন ও পরিবর্তনে তাত্পর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিটি গণমাধ্যমের নিজস্ব নীতিমালা আছে, আছে সম্পাদকীয় আদর্শ বা সিদ্ধান্ত।

ঔপনিবেশিক শাসনামল এমনকি বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি স্বাধীন হওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত গণমাধ্যমের ভূমিকা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ কথাও সত্য যে, সরকার বা সরকারবিরোধী মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা বা জনমত সংগঠনে গণমাধ্যম প্রচ্ছন্ন বা প্রবল ভূমিকা অনেক ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ। আর এসকল কারণেই গণমাধ্যম অনেক সময়ই শাসকগোষ্টির আক্রমনের শিকার হয়েছে বার বার।

বিজ্ঞাপন

এ দেশের ইতিহাসে গণমাধ্যম আক্রমনের শিকার হবার দৃষ্টান্ত বিরল নয় বা শুধু মুক্তিযুদ্ধের সময়ই তা সীমাবদ্ধ ছিল না। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত সকল শাসনামলেই গণমাধ্যম ও গণমাধ্যম কর্মীরা আক্রমনের শিকার হয়েছে শাসকগোষ্টির।

বিভিন্ন গবেষণায় জানা গেছে, যে যে সময় ক্ষমতা থাকে ঐ ক্ষমতাসীনরা সবসময়ই স্বাধীন গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে নেতিবাচক। কিন্তু এই কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, গণমাধ্যম সব সময় সরকারের সমালোচনায় ব্যস্ত থাকে তা নয় অনেক সময় সুবিধা বাদী শ্রেণী সরকারকে ভুল তথ্য দিয়ে সরকারের একটি মহলকে হাত করে সুবিধা আদায়ে চেষ্টা করে পক্ষান্তরে রাষ্ট্রের ও জনগণের ক্ষতি করে সেই তথ্য সবার আগে গণমাধ্যম সরকারকে অবহিত করে সঠিক ভাবে রাষ্ট্র পরিচালনায় ও ভবিষ্যৎ করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দেয়। সরকারকে ভুল-ত্রুটি সম্পর্কে আত্মসচেতন করে তুলে। গণমাধ্যম সরকার ও জনগণের মধ্যে সেতুর কাজ করে থাকে। গণমাধ্যম ছাড়া কোনোভাবেই জানা সম্ভব নয় তাহলো সরকার কি করছে, আর জনগণ কি ভাবছে।

সমাজ প্রতিনিয়ত পরিবর্তনশীল। কিন্তু সকল সমাজ একসাথে একইভাবে পরিবর্তিত হয়না। পরবর্তনশীল সমাজগুলির পরিবর্তনের চিত্র ও ধারা তুলে ধরে গণমাধ্যমগুলি। এইভাবে সমাজের বিভিন্ন অংশের পরিবর্তন সম্পর্কে জ্ঞাত হয়ে অন্যান্য অংশের সমাজের পরিবর্তনের সূত্রপাত হয়।

ড্যানিয়েল লার্নার গণমাধ্যমকে সমাজ পরিবর্তনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হিসেবে চিহ্নিত করেন। গণমাধ্যম সমাজস্থ ব্যক্তিবর্গের মধ্যে তথ্যের সরবরাহের বৃদ্ধি ঘটায়। তথ্যের মাধ্যমে মানুষের মানসিক গতিশীলতা বৃদ্ধি পায়। এর ফলে সমাজের পরিবর্তনের ধারা অব্যাহত থাকে। গণমাধ্যমই সমাজে প্রচলিত বিভিন্ন সমস্যা সম্পর্কে মানুষকে অবহিত করে। এই সকল সমস্যা সম্পর্কে অবহিত হয়ে জনসমাজে সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরী হয়। এইভাবে প্রত্যেকটি সমস্যা তার সমাধানের পথ খুঁজে পায়। প্রতিটি সমস্যার সমাধান সমাজে সুদূরপ্রসারী পরিবর্তন ঘটায়।

অন্যদিকে বর্তমানযুগে গণমাধ্যমগুলি বহুজাতিক সংস্থাগুলির কাছে বাণিজ্যিক কারণে চুক্তিবদ্ধ। ফলে গণমাধ্যমগুলি সংবাদের মোড়কে পণ্যের প্রচার করে। এইরূপ পণ্য প্রভাবিত সংবাদ জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটায়। সমাজের মানুষগুলোর মাঝে পণ্য ক্রয়ের একপ্রকার উন্মাদ চাহিদা সৃষ্টি করে। ফলে গণমাধ্যমও সমাজে এক অস্থির পরিস্থিতির জন্ম দিয়ে থাকে।

গণমাধ্যম যত সমাজে ক্ষমতার নিয়ামক হয়ে উঠতে থাকে, দেশ ও জনগণের ওপর এর প্রভাবের ধরন তত বদলে যেতে থাকে। ‘ওয়াচডগের’ পরিবর্তে গণমাধ্যম বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে থাকে, গণমাধ্যম নিজেরাই ইস্যু তৈরি করে, সেই ইস্যুর পক্ষে বা বিপক্ষে নেতিবাচক প্রচারণা চালায় বা চালানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়। সমাজে প্রযুক্তিগত উত্কর্ষ যত বেড়েছে, গণমাধ্যম যত মানুষের কাছাকাছি পৌঁছাতে পেরেছে, তার একচ্ছত্র আধিপত্য তত বেড়েছে। এই ক্ষমতার বিস্তার মানুষের মনোজগতে, আচরণে পরিবর্তন আনছে।

আধুনিক সময়ে গণমাধ্যমগুলি বেশ কিছু ক্ষেত্রে নেতিবাচক সামাজিক পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। এজন্য প্রয়োজন মানুষের সচেতনতা। বিকৃত, পণ্য প্রভাবিত, ষড়যন্ত্রমূলক, অতিরঞ্জিত- সংবাদ সমাজ ও রাষ্ট্রে নানা নেতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসে। এই সকল সংবাদের কুপ্রভাব থেকে নেতিবাচক সামাজিক পরিবর্তন প্রতিরোধ করার বিষয়টিকেও আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। তবে এটি সত্য যে, কিছু নেতিবাচক দিক বাদ দিলে সামাজিক পরিবর্তনে গণমাধ্যমগুলি যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে- সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।

গণতান্ত্রিক সমাজে স্বতঃসিদ্ধ বিশ্বাসটি এমন যে মিডিয়া স্বাধীন এবং সত্য উদ্ঘাটনে ও তা রিপোর্ট করার প্রতি দায়িত্বশীল। ক্ষমতাশালী গোষ্ঠীগুলো যেভাবে দেখাতে চায়, মিডিয়া কেবল সেভাবেই বাস্তবতাকে প্রতিফলিত করে না। শুধু তথ্য, বিনোদন ও শিক্ষা দিয়েই নয়; বরং এই তিনটি কাজের মাধ্যমে বলীয়ান হয়ে গণমাধ্যম এখন মানুষের মতামতকে নিয়ন্ত্রণ করছে।

তাৎক্ষণিক সংবাদ পরিবেশন ও বস্তুনিষ্ঠতার এ পরীক্ষায় সারাবাংলা উত্তীর্ণ। স্থূলদৃষ্টিতে যা ধরা পড়ে, তা হল- বিদ্যমান রাজনীতি ও আদর্শগত বিভাজনের ধারায় বিভক্ত ভিন্ন মেরুতে অবস্থানরত মানুষের আস্থাকে ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে সারাবাংলা।

সমকালীন বিশ্বব্যবস্থা, ভূ-রাজনীতি, জটিল আর্থ-সামাজিক অবস্থা ; সর্বোপরি, প্রযুক্তির জয়োৎসবের এ যুগে একটি মানসম্পন্ন গণমাধ্যম টিকে থাকা যথেষ্ট গৌরবের, সম্মানের, সাফল্যের। প্রত্যাশা থাকবে- সারাবাংলা তার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য, অনন্য অর্জন ও নৈতিক উৎকর্ষ নিয়ে এগিয়ে যাবে অনন্তের পথে কালের স্রোত বেয়ে; গণমানুষের আস্থা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে। শুভ কামনা সারাবাংলা।

লেখক: মহাসচিব, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ও আহ্বায়ক, জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন

সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি

এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া মত-দ্বিমত সারাবাংলা জয় করুক পাঠকের হৃদয়

বিজ্ঞাপন

খুলনায় যুবকের পেটে মিলল ইয়াবা
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর