বাংলাদেশে আমেরিকার ভূমিকা এবং ‘ভুল ঔষধ’
৩ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:৩৪
বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীন, এবং ভারত প্রভৃতি বিশ্বের বৃহৎ শক্তিবর্গ সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিল। বিষয়টি বি.জেড.খসরুর (২০১০) গবেষণা গ্রন্থ “মিথ্স এন্ড ফ্যাক্টস: বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার; হাউ ইন্ডিয়া, ইউএস, চায়না, এন্ড দ্য ইউএসএসআর শেপ্ড দ্য আউটকাম” -এ তুলে ধরা হয়েছে। এই বইয়ের এক জায়গায় খসরু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কে বলছেন “ইউএস ফিয়াস্কো ইন ইস্ট পাকিস্তান: রাইট ডায়াগনসিস, রঙ মেডিসিন” অর্থাৎ “পূর্ব পাকিস্তানে মার্কিন ভরাডুবি: সঠিক রোগ নির্ণয়, ভুল ঔষধ”। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার ৫১ বছর পেরিয়ে ৫২ বছরেও পদার্পণের সময় বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাথে সভা করার উদাহরণও একইভাবে আমেরিকার দেওয়া ‘ভুল ঔষধ’ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড, জেল হত্যা, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, পাকিস্তানের নিকট বাংলাদেশের ন্যায্য পাওনা ফিরিয়ে আনা, জেনারেল জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বিনা বিচারে সেনা সদস্যদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা, কর্নেল তাহের হত্যাকান্ড প্রভৃতিকে আমেরিকা মানবাধিকার সংক্রান্ত ইস্যু হিসাবে গণ্য করে না। কেন? কারণ কী? মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এ ধরনের কর্মকান্ড ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।
২০২২ সাল পেরিয়ে আমরা এখন ২০২৩ সালের প্রথম মাস অতিক্রম করছি। কিন্তু ২০২২ সালের অথবা তার ৫১ বছর আগে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং পাকিস্তান সরকার কর্তৃক পরিচালিত বাঙালিদের ওপর ‘গণহত্যা’, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যা, জেলখানায় চার জাতীয় নেতা হত্যা প্রভৃতি আমাদের চেতনায় সদা জাগ্রত।
পিটার হাসের তৎপরতা সম্পর্কে যে প্রতিক্রিয়া হয়েছে গত ১৮ এপ্রিল ২০২২ তারিখে আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতার জন্য মার্কিন রাষ্ট্রদূত অ্যাট-লার্জ রাশাদ হুসেন ঢাকায় থাকাকালে দেওয়া বক্তব্য সম্পর্কে এ ধরনের কোনো প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায় নাই। বরঞ্চ সরকারসহ পর্যবেক্ষকমহল হুসেনের বক্তব্যটিকে বেশ ভালোভাবেই নিয়েছে। রাষ্ট্রদূত হুসেন জানিয়েছিলেন, তিনি এবং তার পরিবার ভারতের বিহার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন। এ সময় হুসেন বলেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত হওয়ার কারণে আজ আমি এখানে আসতে পেরেছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান সকল নাগরিকের জন্য সমান অধিকার এবং সুযোগের নিশ্চয়তা দেয়।” বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য সমান অধিকারের বিধান সংবিধানে সংযোজিত করেছিলেন। নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষায় আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছেন।
১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালিরা গণহত্যা, লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ প্রভৃতির শিকার হলেও পর্যবেক্ষকদের মতে ‘নিক্সন প্রশাসনের একমাত্র ফোকাস ছিল, চীন!’ নিক্সন কেন ইয়াহিয়া খানের পক্ষে ছিলেন, তার সাথে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক ব্যতীত, তার একটি কারণ ছিল যে জেনারেল ইয়াহিয়া ছিলেন চীনের সাথে তার (কিসিঞ্জারের) বাহক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণের ভিত্তি স্থাপনে ইয়াহিয়া খান কার্যকরী গো-বিটুইন হয়ে উঠেছিলেন। কিসিঞ্জার মনে করেছিলেন, বেইজিং সতর্কতার সাথে দেখবে ওয়াশিংটন তার মিত্রকে কতটা বিশ্বস্ততার সাথে সমর্থন করছে। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হলে দেখা যায় পাকিস্তানের প্রতি মার্কিন সদয় এবং বন্ধুত্বপূর্ণ নীতি রাতারাতি বদলে গিয়েছে। এর পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্র দ্রুত ভারতকে একটি আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে স্বীকৃতি দেয় এবং সম্মান করতে শুরু করে। যদিও যুদ্ধের আগেই এটা স্পষ্ট করে দিয়েছিল যে, তারা (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) “পাকিস্তানকে কষ্ট দিয়ে!” স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করবে না। একই সাথে এটিও লক্ষণীয় যে পাকিস্তানী সেনাবহিনী ও তাদের দোসর জামায়াত-ই-ইসলামের সদস্য রাজাকার, আল বদর, আল শাম্স ও শান্তি কমিটির দ্বারা বাঙালিদের বিরুদ্ধে পরিচালিত গণহত্যায় তাদের দোষ লুকানোর চেষ্টা করেছিল তৎকালীন মার্কিন সরকার। এজন্য ‘দুর্বৃত্ত নেতার পরিবর্তে’ ‘আইন মান্যকারী রাষ্ট্রনায়ক’ এর ছদ্মাবরণে নিজেদের একটি চকচকে ভাবমূর্তি উপস্থাপনের চেষ্টা করেছিল মার্কিন সরকার। ক্রিশ্চিয়ানা স্পেন্সের মতো একজন কেমব্রিজ পন্ডিত যুক্তি দিয়েছেন, ‘শুধুমাত্র নিক্সন এবং কিসিঞ্জারই নয়, তাদের বিভিন্ন সহযোগী ও সমর্থকদের মধ্যেও সেই আবরণে কারসাজি ও প্রতারণার মাত্রা দুর্বহ; তাদের সেই অপরাধ এবং কপটতাকে ঢেকে চকচকে রাখার চেষ্টা করার জন্য যে উচ্চাভিলাষিতা প্রয়োজন তা ছিল বেশ চমকপ্রদ।’
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালিদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর আক্রমণের নেতৃত্বে ছিলেন জেনারেল টিক্কা খান, যিনি অপারেশন সার্চলাইটের স্থপতি ছিলেন এবং তার কর্মের জন্য বাঙালিরা তাকে ‘বাংলার কসাই’ নাম দিয়েছিল। ২৭ মার্চ ১৯৭১ তারিখে, তিনি ঘোষণা করেছিলেন- ‘আমি এই সংখ্যাগরিষ্ঠকে সংখ্যালঘুতে পরিণত করব।’ উল্লেখ্য, সে সময় সমগ্র পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৬ শতাংশ ছিল বাঙালি। টিক্কা খান তখন আরও দাবি করেছিলেন যে তিনি ৪৮ ঘন্টার মধ্যে চার মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করবেন এবং এইভাবে বাংলা সমস্যার একটি ‘চূড়ান্ত সমাধান’ হবে। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে পশ্চিম পাকিস্তানী সরকারের আদেশ মানতে অস্বীকার করার জন্য শাস্তি দেওয়ার লক্ষ্যে বাঙালি গণহত্যার পরিকল্পনা করেছিল। এ সময় এশিয়া টাইমস প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের একটি বিবৃতি প্রকাশ করে ‘তাদের মধ্যে ত্রিশ লাখকে হত্যা করো এবং বাকিরা আমাদের হাত থেকে খাবে।’
ফলস্বরূপ, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ইতিহাসের সবচেয়ে নিষ্ঠুর গণহত্যার শিকারে পরিণত হয়েছিল। পশ্চিম পাকিস্তানের সৈন্যরা গোপনে পূর্ব পাকিস্তানের দিকে অগ্রসর হয়েছিল এবং ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় তাদের অভিযান শুরু করেছিল। একই রাতে শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেফতারের আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। স্বাধীনতার এই ঘোষণা ইপিআর এর একটি ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে প্রেরণ করা হয়েছিল। ট্রান্সমিটার যদিও ঘোষণাটি ২৫ মার্চ করা হয়েছিল, তবে এটি মধ্যরাতের পরে সংঘটিত হয়েছিল এবং তারপর থেকে ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হিসাবে পালিত হয়। বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ সালে মুজিবনগরে গঠিত হয় এবং নির্বাসিত সরকার হিসাবে কলকাতায় স্থানান্তরিত হয়।
বাঙালি জাতির জন্য গর্বের একটি তারিখ এবং বাঙালি জাতির একটি গৌরবময় ভাষণের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এসেছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে এবং আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগে। তা হচ্ছে ২১ ফেব্রুয়ারি এবং ৭মার্চের ভাষণ। ১৯৯৬ সালে যখন জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করেছিল তখন ১৯৫২ সালে বাঙালিদের মাতৃভাষা আন্দোলনে আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৯৯ সালে, জাতিসংঘের শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ২১শে ফেব্রুয়ারিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করে। এভাবে বাঙালি জাতি গর্ব করতে পারে এমন ঘটনা বলার মত আরও অনেক অনেক ইতিহাস আওয়ামী লীগ সরকারের আছে।
আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা সম্পন্ন বর্তমান বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ২০১৭ সালের ১১ মার্চে পাসকৃত ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের আহ্বান জানিয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ২০১৮ সালে ‘ইউরোপিয়ান ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ’ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ গণহত্যা সম্পর্কে একটি ‘বিবেকবান’ গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি সংস্থা ‘জেনোসাইড ওয়াচ’, লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর প্রিভেনশন অব জেনোসাইড ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ গণহত্যার স্বীকৃতি দেয়ার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে। মার্কিন প্রতিনিধি সভায় স্টিভ চ্যাবট এবং রো খান্না ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ গণহত্যাকে স্বীকৃতি দেওয়ার একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল। লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন এবং জেনোসাইড ওয়াচ এই প্রস্তাবটিকে সমর্থন করেছে। আশা করা হয়েছে আরও সংগঠন ১৯৭১ সালের বাংলাদেশে গণহত্যাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টিকে সমর্থন করবে। যদিও কয়েকটি মার্কিন বেসরকারি সংগঠন অতিসম্প্রতি ১৯৭১ সালে পাকিস্তান কর্তৃক বাংলাদেশে পরিচালিত গণহত্যা স্বীকার করেছে, কিন্তু সে দেশের সরকার এখনও বাংলাদেশের ১৯৭১ এর গণহত্যাকে স্বীকৃতি দেয় নাই।
১৯৭১ সালে সংঘটিত মহান মুক্তিযুদ্ধে ‘একটি ফুলকে’ বাঁচাতে জনগণের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের মাতৃভূমির স্বাধীনতার স্বপ্নের বিরুদ্ধে এদেশেরই ক্ষুদ্র অথচ তাৎপর্যপূর্ণ একটি অংশ মাতৃভূমির স্বাধীনতার বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকের ভূমিকায় অবতীর্ন হয়েছিল। বলা বাহুল্য, এই ক্ষুদ্র অংশটি ধর্মীয় ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরাচারী শাসকদের সমর্থনপুষ্ট ছিল। শুধু তাই নয়, বিশ্বের বৃহৎ শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অফিসিয়াল সমর্থন ছিল তৎকালীন বাংলাদেশের জনগণের এই ক্ষুদ্র অংশের প্রতি। এই সাথে চিনের সমর্থনও তারা তখন পেয়েছে। অপরপক্ষে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তখন সক্রিয়ভাবে সমর্থন এবং সবরকম সাহায্য সহযোগিতা করেছে প্রতিবেশী গণতান্ত্রিক ভারত এবং তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গেছে ১৯৯০ সালে। এখন নিরাপত্তা পরিষদে সোভিয়েত ইউনিয়নের স্থায়ী আসনটি রুশ ফেডারেশনের।
গত ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ঢাকা শহরের শাহীনবাগে অবস্থিত একজন বিএনপি নেতার বাড়িতে তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের সাথে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের পূর্বনির্ধারিত সভা চলার সময় ‘মায়ের কান্না’ নামের একটি সংগঠনের সদস্যরা বাড়ির সামনে অবস্থান নেন এবং ১৯৭৭ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়াউর রহমানের শাসনামলে কোর্ট মার্শালের শিকার স্বজনদের বিচার দাবি করেন।
দৃশ্যতঃ মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের সভাটি বিক্ষোভকারীদের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়েছিল, হাস যে ভবনে অবস্থান করছিলেন সেখানে ‘মায়ের কান্নার’ সদস্যরা প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে, হাস নির্ধারিত সময়ের আগেই মিটিং শেষ করতে বাধ্য হওয়ায় কিছুটা ক্ষুব্ধতার সাথে স্থান ত্যাগ করেছিলেন। মার্কিন রাষ্ট্রদূত অনুষ্ঠানস্থল থেকে বের হওয়ার সময় অন্যান্য বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রদূতের গাড়ি ঘেরাও করেন। হাস অবিলম্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সাথে এই ঘটনায় তার উদ্বেগ জানাতে ফোন করেন। এ ঘটনার পর মঙ্গলবার ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ রুশ দূতাবাস স্থানীয় রাজনৈতিক ইস্যুতে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে।
বিবৃতিতে, রাশিয়া দূতাবাস বলেছে যে রাশিয়া অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে বাংলাদেশের মতো দেশ ‘যারা বহিরাগত শক্তির নেতৃত্ব অনুসরণ না করে তাদের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থের জন্য তাদের বৈদেশিক এবং অভ্যন্তরীণ নীতি গঠন করে, তারা একই পদ্ধতি গ্রহণ করে’। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের তৎপরতা কী বাংলাদেশে চলমান যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার বন্ধ, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ভাঙচুর ও জাতির পিতার ছবি অবমাননাকারীদের এবং দন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের পক্ষে থাকার ষড়যন্ত্রের প্রমাণ বহন করে।
লেখক: পরিচালক, সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ, ঢাকা; সাবেক ডিন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ এবং সাবেক চেয়ারম্যান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি
অরুণ কুমার গোস্বামী বাংলাদেশে আমেরিকার ভূমিকা এবং ‘ভুল ঔষধ’ মত-দ্বিমত