৫৬০টি মডেল মসজিদ, ইসলামের ইতিহাসে অনন্য নজীর
১৮ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:৪৯
ইসলামের ইতিহাসে এমন নজীর আর নেই। বিশ্বে কোন সরকার দেশজুড়ে ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণ করেছে এমন ঘটনা নেই। এর আগে কোনো মুসলিম শাসক বা সরকার প্রধান একসঙ্গে এতগুলো মসজিদ নির্মাণ করেননি। ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের কাজ চলছে জোরশোরে। এরই মধ্যে ১০০টি মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ২০২১ সালের ১০ জুন প্রথম ৫০টি মসজিদ উদ্বোধনের পর দ্বিতীয় ধাপে ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি আরও ৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফেব্রুয়ারিতে উদ্বোধন করবেন আরও ৫০টি।
ইসলামের বিকাশমান যুগে মসজিদে শুধু নামাজই পড়া হতো না। ইসলামি গবেষণা, সংস্কৃতি ও জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো মসজিদকে। এটি ছিল ইসলামি ঐতিহ্য। সে অনুযায়ীই সরকার তৈরি করছে এই মডেল মসজিদগুলো। একই সঙ্গে এগুলো মসজিদ এবং ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।
ইসলামি মূল্যবোধ সম্পর্কে সচেতনতা, এর বিকাশ ও প্রসারের লক্ষ্যেই এই মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে। ইসলামের অপব্যাখ্যা করে কিভাবে অন্যায়, অবিচার ও অপরাধকে জায়েজ করার চেষ্টা করা হয় তা দেখা গেছে ১৯৭১ সালে। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠি, হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দালালরা ইসলামের অপব্যাখ্যা করে মহান মুক্তিযুদ্ধকে ইসলামবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রচারণা চালিয়েছিল। হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরতা, নারকীয় হত্যাযজ্ঞ, নারীদের সম্ভ্রমহানী, পাশবিক নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ- লুন্ঠন ইত্যাদি নির্মম অপকর্মকে ইসলামের নামে সমর্থন দিয়ে, সহযোগিতা করে পবিত্র ইসলামকে বিতর্কিত করেছিল। সাম্প্রতিক সময়ে আমরা দেখেছি, ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে প্ররোচিত করে নিরীহ ধর্মপ্রাণ মানুষকে জঙ্গীবাদের দিকে উদ্ধুদ্ধ করার চেষ্টা।
মুক্তিযুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশে শান্তির ধর্ম ইসলামের শাশ্বত চেতনা, প্রকৃত রুপ জনগণের সামনে তুলে ধরতে বহুমুখী উদ্যোগ নেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও সুষম বিকাশের জন্য ইসলামের শ্বাশত শিক্ষা, ভ্রাতৃত্ববোধ, পরমতসহিষ্ণুতা ও ন্যায়বোধের মত ইসলামের মৌলিক বৈশিষ্ঠ ও গুনাবলীর প্রচার ও প্রসার দরকার। সেই সঙ্গে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনে ইসলামি মূল্যবোধ ও নৈতিকতার বাস্তবায়ন এবং প্রাতিষ্ঠানিক রূপায়নও প্রয়োজন। এ জন্য একই প্ল্যাটফর্মে ইসলামের প্রকৃত ইতিহাস, দর্শন, আইন, সংস্কৃতি ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ব্যাপক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠা করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন অ্যাক্ট, ১৯৭৫-এর মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর সুদূর প্রসারী চিন্তার প্রতিফলন রয়েছে।
পিতার এই দর্শনে অনুপ্রাণিত হয়েই দেশজুড়ে একটি শক্তিশালী ইসলামিক সাংগঠনিক অবকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে দলের নির্বাচনী ইশতেহারে দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় তিনি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেন।
২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল একনেকের সভায় প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রথমে এর অনুমিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ হাজার ৬২ কোটি। পরে কমিয়ে আনা হয় ৮ হাজার ৭২২ কোটি টাকায়। সৌদি সরকারকে এতে অর্থায়ন করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। প্রথমে রাজী হলেও পরে তারা সরে দাঁড়ায়। তখন সরকার পদ্মা সেতুর মতোই নিজস্ব আর্থায়নে এই মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেয়। পরবর্তীতে এর ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৯ হাজার ৫৫৯ কোটি এবং প্রকল্পের মেয়াদ ঠিক করা হয় ২০২৪ সাল। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এই মসজিদগুলির নির্মাণ কাজ শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের ৫ এপ্রিল তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নয়টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।
মডেল মসজিদ প্রকল্পের উদ্দেশ্য
১. বঙ্গবন্ধু প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশন অ্যাক্ট, ১৯৭৫-এর বাস্তবায়ন। দেশজুড়ে শক্তিশালি ইসলামি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা।
২. পুরুষ-নারী মুসল্লিদের জন্য নামাজ, ধর্মীয় শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দ্বীনি দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উন্নততর ভৌত সুবিধা সৃষ্টি করা।
৩. সারাদেশে ইসলামি ভ্রাতৃত্ব, সাম্য ও ইসলামের প্রকৃত মূল্যবোধের প্রচার ও দীক্ষাদানের মাধ্যমে সমতা ভিত্তিক ও অসাম্প্রদায়িক সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা।
৪. জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ এবং সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম ও এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
৫. ইসলামিক জ্ঞান ও সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে ইসলামি মূল্যবোধের পরিচর্যা, বিকাশ ও প্রসারের মাধ্যমে সততা ও ন্যায়বিচারের প্রতি মানুষের আনুগত্যের সমর্থন সৃষ্টি করা।
তিনটি ক্যটাগরির মসজিদ
প্রথমে ৪৩ শতাংশ জমিতে নির্মাণের পরিকল্পনা নেয়া হলেও পরবর্তিতে সরকারি ও বেসরকারি মালিকাধীন জায়গায় সংশোধিত নকশা অনুযায়ী ৪০ শতাংশ জমিতে একই স্থাপত্যশৈলীতে জেলা পর্যায়ে চারতলা, উপজেলায় তিনতলা এবং উপকূলীয় এলাকায় চারতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
এ ক্যাটাগরি: ৬৪টি জেলা শহরে এবং ৫ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬৯টি মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে এই ক্যাটাগরিতে। প্রতিটি মসজিদ চারতলা। এই ক্যটাগরির মসজিদগুলিতে শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও লিফট থাকছে। প্রতি তলার আয়তন ২ হাজার ৩৬০ দশমিক ০৯ বর্গমিটার। একসঙ্গে ১ হাজার ২০০ মুসল্লি নামাজ পড়তে পারবেন। প্রতিটি মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ১৫ কোটি ৬১ লাখ ৮১ হাজার টাকা।
বি ক্যাটাগরি: উপজেলা পর্যায়ে ৩ তলা বিশিষ্ট ৪৭৫টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে এই ক্যটাগরিতে । এগুলোর প্রতি তলার আয়তন ১ হাজার ৬৮০ দশমিক ১৪ বর্গমিটার। একসঙ্গে ৯০০ মুসল্লি প্রতিটি মসজিদে নামাজ পড়তে পারবেন। প্রতিটির নির্মাণ ব্যয় ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
সি ক্যাটাগরি: উপকূলীয় এলাকায় ১৬টি মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে এই ক্যাটাগরিতে। প্রত্যেকটি চারতলা। এগুলোর প্রতি তলার আয়তন হচ্ছে ২ হাজার ৫২ দশমিক ১২ বর্গমিটার। একসঙ্গে ৯০০ মুসল্লি প্রতিটি মসজিদে নামাজ পড়তে পারবেন। দুর্যোগের সময় এগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এ জন্য নিচতলা ফাঁকা থাকবে। একেকটি মসজিদের নির্মাণ ব্যয় ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৮২ হাজার টাকা।
অবকাঠামোগত সুবিধা
১. নারী-পুরুষের পৃথক ওজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা
২. প্রতিবন্ধী মুসল্লিদের টয়লেটসহ নামাজের পৃথক ব্যবস্থা
৩. ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র
৪. ইসলামিক লাইব্রেরি
৫. অটিজম কর্নার
৬. ইমাম ট্রেনিং সেন্টার
৭. ইসলামিক গবেষণা ও দ্বীনি দাওয়া কার্যক্রম
৮. হেফজখানা
৯. শিশু ও গণশিক্ষার ব্যবস্থা
১০. দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আবাসন ও অতিথিশালা
১১. মরদেহ গোসল ও কফিন বহনের ব্যবস্থা
১২. হজ্জ যাত্রীদের নিবন্ধনসহ প্রশিক্ষণ
১৩. ইমামদের প্রশিক্ষণ
১৪. ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ
১৫.সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিস ]
১৬. গাড়ি পার্কিং
মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের কার্যক্রম
১. মসজিদগুলো থেকে প্রতি বছর ১৪ হাজার হাফেজ তৈরি হবে।
২. ইসলামি নানা বিষয়সহ প্রতিবছর এক লাখ ৬৮ হাজার শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ পাবে।
৩. এসব মসজিদে সারাদেশে প্রতিদিন একসঙ্গে চার লাখ ৯৪ হাজার ২০০ জন পুরুষ ও ৩১ হাজার ৪০০ জন নারী নামাজ আদায় করতে পারবেন।
৪. লাইব্রেরিতে প্রতিদিন ৩৪ হাজার পাঠক এক সঙ্গে কোরআন ও ইসলামিক বই পড়তে পারবেন।
৫. ইসলামিক বিষয়ে গবেষণার সুযোগ পাবেন ৬ হাজার ৮০০ জন।
৬. ৫৬ হাজার মুসল্লি সব সময় দোয়া, মোনাজাতসহ তসবিহ পড়তে পারবেন।
৭. দুই হাজার ২৪০ জন দেশি-বিদেশি অতিথির আবাসন ব্যবস্থা থাকবে।
৮. পবিত্র হজ পালনের জন্য কেন্দ্রগুলোতে ডিজিটাল নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকবে।
৯. উপকূলীয় এলাকার মসজিদগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
১০. মডেল মসজিদগুলোতে দ্বীনি দাওয়া কার্যক্রম ও ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার পাশাপাশি মাদক, সন্ত্রাস, যৌতুক, নারীর প্রতি সহিংসতাসহ বিভিন্ন সামাজিক ব্যাধি রোধে সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
ইমাম -মুয়াজ্জিন-খাদেম
মসজিদগুলো পরিচালনার জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিটি মসজিদে একজন পেশ ইমাম, একজন মুয়াজ্জিন, দুজন খাদেম ও দুজন নিরাপত্তা প্রহরী দায়িত্ব পালন করবেন।
পেশ ইমামের যোগ্যতা হবে ২য় শ্রেণিতে কামিল ডিগ্রি অথবা দাওয়ায়ে হাদিস পাস। এছাড়া কোনও প্রতিষ্ঠানে খতিব, মুফতি, মুহাদ্দিস হিসেবে পাঁচ বছর কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কোরআনে হাফেজ এবং ক্বিরাতে দক্ষরা অগ্রাধিকার পাবেন। আরবিতে কথা বলা, খুতবা উপস্থাপন, ইসলামের ওপর গবেষণাধর্মী প্রকাশনা বিবেচিত হবে অতিরিক্ত যোগ্যতা হিসেবে। ইমামরা নবম গ্রেডে বেতনভাতা ও সুবিধাদি পাবেন।
মুয়াজ্জিনরা হবেন ২য় শ্রেণিতে আলিম ডিগ্রি অথবা সমমানের কওমি শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন স্বীকৃত বোর্ড বা প্রতিষ্ঠানের সনদধারী। মুয়াজ্জিন হিসেবে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে তিন বছরের। মুয়াজ্জিনরা ১৪তম গ্রেডে বেতন ভাতা ও সুবিধাদি পাবেন।
খাদেমরা হবেন ২য় শ্রেণিতে আলিম ডিগ্রি অথবা সমমানের কওমি শিক্ষাগত যোগ্যতাসম্পন্ন স্বীকৃত বোর্ড বা প্রতিষ্ঠানের সনদধারী। এক বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে তাদের। খাদেমরা ১৬তম গ্রেডে বেতনভাতা ও সুবিধাদি পাবেন।
পরিচালনা কমিটি
মসজিদ পরিচালনা নীতিমালা অনুযায়ী উপজেলা মডেল মসজিদ পরিচালনা কমিটি হবে ১২ সদস্যের। সভাপতি হবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। প্রধান উপদেষ্টা হবেন স্থানীয় সংসদ সদস্য। উপদেষ্টা হবেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। কমিটির সদস্য হবেন, মেয়র (পৌরসভার ক্ষেত্রে), উপজেলা প্রকৌশলী, থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি), সভাপতি মনোনীত স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসলিম ব্যক্তিত্ব, চেয়ারম্যান (উপজেলা পরিষদ), সভাপতি মনোনীত স্থানীয় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ/মুহতামিম, মডেল মসজিদের ইমাম, মসজিদ সরকারি প্রতিষ্ঠানের জমিতে হলে সংশ্লিষ্ট দফতরের মনোনীত প্রতিনিধি, ব্যক্তি জমিদাতা হলে তিনি বা তার প্রতিনিধি। মসজিদ কমিটির সদস্য সচিব হবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজর/সহকারী পরিচালক।
জেলা মসজিদ পরিচালনা কমিটি হবে ৯ সদস্যের। সভাপতি হবেন জেলা প্রশাসক। স্থানীয় সংসদ সদস্য হবেন উপদেষ্টা। সদস্য হবেন- পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌরসভা মেয়র, গণপূর্ত অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী, সভাপতি মনোনীত স্থানীয় ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি, সভাপতি মনোনীত স্থানীয় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ/মুহতামিম, মডেল মসজিদের ইমাম প্রমুখ।
সিটি করপোরেশন এলাকার মডেল মসজিদ পরিচালনা কমিটি হবে ৬ সদস্যের। সভাপতি হবেন জেলা প্রশাসক। সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের মেয়র হবেন উপদেষ্টা। সদস্য হবেন, উপ-পুলিশ কমিশনার, গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মনোনীত স্থানীয় অফিসের কর্মকর্তা, সভাপতি মনোনীত স্থানীয় ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি, সভাপতি মনোনীত স্থানীয় মাদ্রাসার অধ্যক্ষ/মুহতামিম প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় ধাপের ৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করে বলেছেন- জনগণ ইসলামী মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি সম্পর্কে প্রকৃত জ্ঞান লাভ করবে এই মডেল মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলো থেকে। ফলে ধর্মের নামে বিভ্রান্তি দূর করতে এই মসজিদগুলো সহায়তা করবে। ইসলামের ধর্মের দোহাই দিয়ে কেউ মানুষকে সহজে বিপথে নিতে পারবে না। প্রকৃত ইসলাম সম্পর্কে মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি হবে। এতে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও নারী নির্যাতন বন্ধে এই মসজিদ ও ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলো ব্যাপক অবদান রাখবে।
ইসলামের ইতিহাসে কোন দেশের কোন মুসলিম শাসক যে উদ্যোগ নেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে উদ্যোগ নিয়েছেন। দেশজুড়ে তৈরি হচ্ছে মসজিদ ও ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। নিজ দেশের অর্থে বাস্তবায়ন হচ্ছে এই মহাপ্রকল্প। দেশে ইসলামি মূল্যবোধের চর্চা, বিকাশ, প্রচার ও প্রসারে এই মসজিদগুলো সুদুরপ্রসারী অসামান্য অবদান রাখবে। তবে কঠোর নজর রাখতে হবে এই মসজিদগুলোকে কোন ধর্মান্ধ, মৌলবাদীগোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দল যেন তাদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহার করতে না পারে।
লেখক : জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, সংবাদ বিশ্লেষক
সারাবাংলা/এজেডএস/এসবিডিই