কোটা আন্দোলন, মধ্যবিত্ত ও নতুন সরকারের কর্মসুচি
১৩ আগস্ট ২০২৪ ১৬:৫৩
ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রবর্তনের দাবিটি জোরালো হয়েছে, এই কারনে যে বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে স্বাধীনতা সংগ্রামে বিপুলসংখ্যক মানুষ শহিদ হয়েছিলেন। এখন দেশে বৈষম্য প্রকট, ব্যাপক দুর্নীতির পাশাপাশি রাষ্ট্রের সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও সাধারণ মানুষ বৈষম্যের শিকার। এবারের ছাত্র আন্দোলনের কারণও ছিল সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য দুরীকরন প্রসঙ্গ। ১ জুলাই আন্দোলন শুরু হয় এবং ৫ আগস্ট সরকারের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়। এরপর আন্দোলনকারীরা তাদের পছন্দমতো সরকার গঠনের জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে। যথারীতি ৮ আগষ্ঠ ১৭ সদস্য বিশিষ্ঠ কেয়ার টেকার সরকার শপথ গ্রহন করে যাদের ঘোষিত মুল দায়িত্বের মধ্যে রয়েছে জননিরাপত্তা ও অর্নৈতিক স্থিতিশীলতা।
এখন কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে সংযুক্ত ছাত্রনেতারা বলছেন দেশের সকল অঙ্গে তারা সংস্কার চায় যেমন- ১. গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করার জন্য বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন এবং দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাসহ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করা; ২. রাজনীতিতে তরুণ নেতা ও পেশাজীবীদের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা; ৩. যুবকদের মধ্যে নাগরিক কর্তব্যবোধ গড়ে তোলার জন্য নাগরিক শিক্ষাকে জাতীয় পাঠ্যক্রমে একীভূত করতে হবে; ৪. দুর্নীতিবিরোধী আইন শক্তিশালী করা, সরকারি লেনদেনে স্বচ্ছতা বাড়ানো এবং সরকারি কর্মকর্তাদের জবাবদিহির মাধ্যমে দুর্নীতিকে কার্যকরভাবে মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ; ৫. রাজনৈতিক সংলাপকে উৎসাহিত করতে রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারের মধ্যে সংলাপের জন্য প্ল্যাটফরম স্থাপন বিভাজন দূর করা; ৬. শিক্ষার্থী এবং সুশীল সমাজের উদ্বেগগুলোকে গুরুত্ব দেওয়া; ৬. মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা; ৭. ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের জন্য, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের জন্য রাজনৈতিক, পেশাগত ও নৈতিক সংস্কারকে আরও ভালোভাবে মানিয়ে নিতে বাংলাদেশের রূপান্তরের জন্য বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সংস্কার; ৮. এ সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশে একটি অধিকতর অন্তর্ভুক্তিমূলক, গণতান্ত্রিক ও স্বচ্ছ রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠতে পারে, যা তরুণ নেতৃত্বকে উৎসাহিত করবে।
এই সকল বিষয়গুলো সংস্কার করতে যতদিন সময় লাগবে ততদিন গনতান্ত্রিক প্রকৃয়ায় যেতে অপেক্ষা করতে হবে বলে মনে করেন ছাত্র নেতৃবৃন্দ। কিন্তু জীবন জীবিকার জন্য অথর্নৈতিক কমকান্ড চালিয়ে যেতে হবে এবং নতুন সরকারের কাছে এটি একটি বড় চ্যলেঞ্জ হিসাবে বিবেচিত হওয়া উচিত। কারন কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে দেশের অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে, তা কোনোভাবেই উপেক্ষা করা যায় না। কারও কারও মতে, আন্দোলনের সময় দেশে উৎপাদন এবং অন্যান্য খাতে যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তার পরিমাণ ১ লাখ কোটি টাকা থেকে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এটা পূর্ণাঙ্গ হিসাব নয়। সরকারিভাবে এখনো ক্ষয়ক্ষতির কোনো পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়নি। তবে ক্ষতির পরিমাণ যে ব্যাপক এতে কোনো সন্দেহ নেই। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে দেশের সিংহভাগ খেটে খাওয়া আমজনতা সপ্তাহখানেক কলকারখানা, পরিবহন এবং ইন্টারনেটনির্ভর যোগাযোগ বন্ধ থাকিবার কারণে যেই অচলাবস্থা তৈয়ার হইয়াছিল, উহাতে প্রতিদিন প্রায় ১০ সহস্র কোটি টাকার অর্থনৈতিক ক্ষতির চিত্র উঠিয়া আসিয়াছে বটে, উহার সহিত দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হইবার বিষয়টি অর্থমূল্যে নিরূপণ করা কঠিন।অর্থনীতিবীদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলিয়াছেন, অনানুষ্ঠানিক খাতের বিভিন্ন পেশা ও ক্ষুদ্র ব্যবসার সহিত জড়িত মানুষের জীবিকায় যদ্রূপ ধাক্কা লাগিয়াছে, তদ্রূপ আনুষ্ঠানিক খাতের ক্ষতি আরও বিশাল। ফলত ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তা, উৎপাদক গোষ্ঠী, রপ্তানিকারকসহ অর্থনৈতিক অংশীজন বিপুল ক্ষতির শিকার। বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েক মাস ধরিয়া সংকোচনমূলক যেই মুদ্রানীতি গ্রহণ করিয়া চলিয়াছে, তাহাতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আসে নাই। উপরন্তু বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানে অচলাবস্থা তৈয়ার হইয়াছে। কয়েক দিবস ধরিয়া প্রবাসী আয়ে যেই নিম্নমুখী ধারা দৃশ্যমান, উহাও কম উদ্বেগজনক নহে। বর্মান সরকারের অর্থউপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলিয়াছেন, প্রবাসী আয় ও বিদেশি বিনিয়োগ কমিলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও ডলার পরিস্থিতির উন্নতি হইবে না।
দেশের বাজার বিশ্লেষকসহ অনেক অর্থনীতিবিদ দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছিলেন, নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাপনে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। আমদানিকারক, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী সবাই লাগামহীনভাবে বাজারে সব পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। চাল, পেঁয়াজ, রসুন, আলু, মাছ-মাংস, সবজি ও অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে। মূল্যস্ফীতি, বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো উদ্যোগ সাফল্যের মুখ দেখছে না। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসার পেছনে বাজার ব্যবস্থাপনার দুর্বলতাই দায়ী। এদিকে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ঘিরে অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। বিশেষত ডলার সংকটের এ সময়ে পণ্য আমদানি এখনো পর্যাপ্ত নয়। দেশে রেমিট্যান্সসহ বৈদেশিক মুদ্রার আয় না বাড়লে আমদানি আরও কমতে পারে, যার খেসারত দিতে হবে দেশের নিম্ন ও সীমিত আয়ের সিংহভাগ মানুষকে। জীবন-জীবিকা নির্বাহে কঠিন অবস্থার মুখোমুখি হবে তারা। সরকার এবার নতুন করে দায়িত্বভার নেওয়ার সময় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখতে নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও এক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যায়নি। ফলে নিত্যপণ্যের বাজার সেই আগের মতোই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে। আর যারা এগুলো দেখভাল করার দায়িত্বে, তারা নানা রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যতিব্যস্ত। ফলে বেশ কয়েক বছর ধরেই সাধারণ মানুষ উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে অসহনীয় জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছে। সরকারের (বিবিএস) তথ্যমতে, বিগত অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জরিপে পাওয়া তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশ। বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ৪ কোটি ১০ লাখ পরিবারের ২৬ শতাংশ মৌলিক চাহিদা মেটাতে ঋণ করে চলছে। এসব কারণে বিগত অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরুর দিকে পণ্য পরিবহণ কিছুটা ব্যাহত হলেও পরে ডিজিটাল লেনদেন বন্ধ করে দেওয়ার কারণে দেশীয় পণ্য উৎপাদন ও ব্যবসা-বাণিজ্য স্তিমিত হয়ে যায়। বৈদেশিক বাণিজ্য, বিশেষ করে রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পেও এর ধাক্কা লাগে। অনেক ক্রেতা তাদের আদেশকৃত পণ্য না পাওয়ায় বৈদেশিক বাণিজ্যে নেতিবাচক পরিস্থিতির পাশাপাশি বাজার হারানোর শঙ্কায় আছেন রপ্তানিকারকরা। কৃষি উৎপাদন সচল থাকলেও কৃষিপণ্য পরিবহণে বাধার কারণে এ খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তার প্রধান উপাদান চালের বাজার পরিস্থিতি বছরজুড়েই অস্থির থাকে। সরকারও বিষয়টি অধিক গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে চালের মজুত বাড়ানোর জন্য এর আমদানি একটা সময় উন্মুক্ত রাখে। কিন্তু তারপরও ভরা মৌসুমেও চালের দাম বৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যায়। বর্তমানে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়েও আবার নতুন করে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। মোকাম থেকে চাল পরিবহণের সুযোগ থাকলেও অস্থির সময়ে পরিবহণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ার অজুহাতে দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। একবার চালকল মালিক, আরেকবার করপোরেট ব্যবসায়ীদের দোহাই দিয়েও দাম বাড়ানো হয়। আবার রাজনৈতিক সংকটকালে খোলাবাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) এবং টিসিবির স্বল্পমূল্যে পণ্য বিক্রি কার্যক্রমও সচল থাকে না। ক্যাব থেকে বারবার সংকটকালীন খাদ্য নিরাপত্তা ও জীবনঘনিষ্ঠ এসব সেবা চালু রাখার কথা বলা হলেও সে বিষয়ে অগ্রগতি হয়নি। নগরীর দরিদ্র ও প্রান্তিক আয়ের জনগোষ্ঠী এসব সরকারি কার্যক্রম থেকে কিছুটা উপকৃত হতে পারতেন। আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতায় নিম্ন আয়ের মানুষ, শ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে বেড়ে যায় তাদের জীবন নির্বাহের ব্যয়। ফলে আন্দোলন ঘিরে সংঘাত-সহিংসতার পাশাপাশি তাদের জীবন-জীবিকা নিয়ে উদ্বেগ, অনিশ্চয়তা আর উৎকণ্ঠা বেড়েছে।এভাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতির ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে দেশের প্রান্তিক আয়ের মানুষ, নিম্নমধ্যবিত্ত, এমনকি অনেক মধ্যবিত্তও একসময় দরিদ্রের খাতায় নাম লেখাবেন। সেক্ষেত্রে সরকার গৃহীত মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে, এমন আশা করা যায় না। তবে গৃহীত লক্ষ্যমাত্রা ও নীতিকৌশল সফল করতে কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে অসাধু ও অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের খপ্পর থেকে দেশের ব্যবসা খাতকে উদ্ধার করতে হবে। তাদের অতিমুনাফার কারণে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সরকারের অনেক উদ্যোগ বারবার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দেশে রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতির পাশাপাশি সর্বত্র সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ব্যবসায়ীরা বারবার অর্থনীতিতে সুশাসনের অনুপস্থিতির কথা বলছেন। এটি সুস্থ ধারার রাজনৈতিক পরিবেশের ওপরও অনেকখানি নির্ভরশীল।
এখন নতুন সরকরের কমসুচীর মধ্যে রয়েছে- এক: দেশের সকলস্থরে প্রশাসনিক কাঠামো নতুন করে সাজানো যা হবে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত যা আমরা দেখতে পাচ্ছ মিডিয়ার মাধ্যমে,চাটুকারিতামুক্ত, দখল চাঁদাবাজিমুক্ত ইত্যদি। দুই: রাজনীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন যার ঘোষনা এরি মধ্যে শুরু হয়ে গেছে যা অব্যাহত থাকবে যতদিন না সুস্থ ধারার রাজনীতি প্রতিষ্টিত হয়। যুবসমাজ পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতির অবসান চেয়ে এরি মধ্যে তাদের মতামত ব্যক্ত করেছেন যা গনতন্ত্রের জন্য শুভলক্ষন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকগন; তিন: সরকারের সর্স্থরে কোটা সংস্কারপন্থীরা তাদের পতিনিধিত্ব চায় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো উপদেষ্টাদের সহকারি হিসাবে কাজ করতে যা একটি নতুন দিগন্ত। এরই মধ্যে দেখাযাচ্ছে ট্রেফিক লাইন, বাজার মনিটরিং, সরকারি স্থাপনায় নিরাপত্তা,সংখ্যালঘুদের জানমাল উপাসনালয় রক্ষায় পাহাড়া দেয়া ইত্যাদিতে ছাত্রদের উপস্খিতি লক্ষনীয় যা প্রশংসিয়; চার: ছাত্রসমাজ তাদের আত্মশক্তিতে বলিয়ান হয়ে বিকল্প ধারার রাজনীতিতে অবতিন হতে আভাস পাওয়া যায় যা সমাজ পরিবর্নের জন্য একটি বলিষ্ট পদক্ষেপ বলে বিচিত; পাঁচ: ছাত্র নেতারা মনে করছে প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে উচ্চ শিক্ষিত, প্রশিক্ষিত এবং দক্ষ জনবলের সমাবেশ ঘটাতে হবে। কোটা সুবিধা তাদের জন্য প্রযোজ্য হয় যারা প্রাথমিক যোগ্যতা প্রদর্শন করতে সমর্থ হয়েছেন। অর্থাৎ যারা পরীক্ষায় পাস করেছেন তাদের জন্য। যারা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন কোটা সুবিধা তাদের কোনো উপকারে আসে না।
সবশেষে বলা যায় প্রধান উপদেষ্ঠা বলেছেন আমাদের হাতে যে বিরল সুযোগ এসেছে তা যেন ভুলের কারনে হাতছাড়া না হয় যা ছাত্রনেতাদের মনে রাখতে হবে। নিরপেক্ষ বিশ্লেষকদের মনে একটি শঙ্কা আন্দেলনরত যুবকরা কেহই মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি ,তাহলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তারা কতটুকু উদ্ভাসিত যা তাদের বক্তব্যে তেমন প্রতিফলিত হয়নি। আবার সংহিংসতাকে কেন্দ্র করে অনেক জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রামী ব্যক্তিদের ভাস্কর্য বিনষ্ট করা হয়েছে যা নিয়ে যুবক নেতারা কি ভাবছেন? কোটা সংস্কার নিছক কোন সাধারণ আন্দোলন নয়, এর ব্যপ্তি ও ব্যাপকতা অনেক গভীরের। এই আন্দোলনকে দেশ জাগরণ ও পরিবর্তনের এক আন্দোলন হিসেবেও গণ্য করা যায়। এ আন্দোলনের তাৎপর্যকে বিবেচনায় রেখে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। কোটা সংস্কার ২০২৪ জাতির ইতিহাসে এক মাইলস্টোন। এ সংস্কারে আগামীদিনে আমাদের বোধের এবং বিবেকের সংস্কার আসবে এবং সমাজ সচেতনতা আসবে। আমাদের অধঃপতিত মূল্যবোধকে বিনির্মাণ করতে হবে। হিংসা ও প্রতিহিংসার পরিবর্তে ন্যায়বোধ, ন্যায় পরায়ণতা, মহানুভবতা ও মানবিকতাকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে জাতিকে নৈতিক ও মূল্যবোধের শিক্ষায় উজ্জীবিত হতে হবে দেশের জনগণ এ প্রত্যাশাই করছে।
লেখক: গবেষক ও অর্থনীতিবিদ
সারাবাংলা/এসবিডিই
কোটা আন্দোলন; মধ্যবিত্ত ও নতুন সরকারের কর্মসুচি ড. মিহির কুমার রায় মত-দ্বিমত