রোহিঙ্গা সংকটে ত্রান ও কূটনৈতিক তৎপরতার সমান্তরাল পদক্ষেপ
৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:১৫
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নিপীড়নের মুখে ও বর্বর হত্যাযজ্ঞ থেকে প্রাণ বাঁচাতে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। নির্মম এই বর্বরতায় বিশ্ব মানবতা হতবাক হয়ে গিয়েছিল। ২০১৭ সালে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর ২০১৮ সাল থেকে ২৫ আগস্ট দিনটিকে রোহিঙ্গারা গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। এ দিনে তারা ক্যাম্পের ভেতরে নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে। ২০১৯ সালের ২৫ অগাস্ট আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যানিটির চেয়ারম্যান মাস্টার মুহিবুল্লাহ’র নেতৃত্বে ক্যাম্পে প্রথম বড় ধরনের সমাবেশ হয়। প্রত্যাবাসন বিরোধী মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার সন্ত্রাসীরা পরবর্তীতে তাকে হত্যা করে। এ বছর ২৫ আগস্ট ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১৩-১৪টি স্থানে ‘হোপ ইজ হোম’ ক্যাম্পেইন পালন করে রোহিঙ্গারা। তারা মিয়ানমারে টেকসই প্রত্যাবাসনের জন্য জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর বাস্তব পদক্ষেপ নেয়ার দাবী তুলে ধরে। পোস্টার, প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে ২৫ অগাস্টকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে চিহ্নিত করে রোহিঙ্গারা হত্যাকাণ্ডের বিচারের ও মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার দাবি তুলে ধরে।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস এর সভাপতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানায়। রোহিঙ্গারা জানায় যে তারা আর বাংলাদেশের বোঝা হয়ে থাকতে চায় না। ‘সেফজোন’ পেলে তারা এখনই মিয়ানমারে ফিরে যেতে চায়। রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা, চলাচলের স্বাধীনতাসহ নিজ গ্রামে যেতে দিলে তারা নিজেরাই মিয়ানমারে চলে যাবে বলে জানায়। শিক্ষা এবং কর্মসংস্থানের সীমিত সুযোগ ও সহিংসতার ঝুঁকি নিয়ে রোহিঙ্গারা এখনো রাষ্ট্রহীন অবস্থায় আছে। রোহিঙ্গারা মনে করে যে, নাগরিকত্ব, জাতিগত পরিচয়, জায়গা-জমি ও গণহত্যার বিচারের নিশ্চয়তা না পেলে তারা মিয়ানমারে গিয়ে আবারও সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পড়বে।
বাংলাদেশের ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নানা ধরনের উদ্যোগের পরও এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারেনি। কূটনৈতিক ও আইনি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি মিয়ানমারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলোচনার পরও সংকট সমাধানে কোন অগ্রগতি হয়নি। রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের নতুন সরকারের সহযোগিতা চায় এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পক্ষে। রোহিঙ্গারা বিশ্বাস করে যে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে তাদের স্বপক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায় সহজ হবে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের মধ্যস্থতায় গত সাত বছরে নেওয়া তিন দফা উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় নেয়ার পর নভেম্বর মাসে চীনের মধ্যস্থতায় মিয়ানমারে সরকারের সাথে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার ভিত্তিতে ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এরপর ২০১৯ সালের আগস্টে চীনের উদ্যোগে আরেকটি প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা নেওয়া হয়, কিন্তু নাগরিকত্বের বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় যেতে চায়নি। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শাসনক্ষমতা দখল করার পর, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন–সংক্রান্ত আলোচনা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়।
২০২৩ সালের এপ্রিলে চীনের তরফ থেকে তৃতীয় দফার উদ্যোগ নেওয়া হয়। চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীনের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয় এবং মে মাসে চীনের উদ্যোগে মিয়ানমার প্রত্যাবাসনের সম্ভাব্যতা যাচাই ও পাইলট প্রকল্প হাতে নেয়। এ উদ্যোগের পর কয়েক দফায় রোহিঙ্গাসহ উভয় দেশের প্রতিনিধিরা প্রত্যাবাসনের সম্ভাব্যতা যাচাই করে। মিয়ানমারে ফেরার জন্য নির্বাচিত রোহিঙ্গাদেরকে ক্যাম্পগুলোয় একত্রিত করা হয়। কিন্তু আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার জান্তা সরকারের সঙ্গে চলমান যুদ্ধে প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া থেমে যায়। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত নয় বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। চলমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বর্তমানে থেমে আছে। রোহিঙ্গা ইস্যুটি এখন দীর্ঘমেয়াদি সংকটে পরিণত হয়েছে।
রাখাইন রাজ্যের চলমান পরিস্থিতিতে ৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর থেকে পালিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার জন্য নাফ নদের তীরে একত্র হয়েছিল, সেখানে তাদের লক্ষ্য করে ড্রোন বোমা ও গোলা নিক্ষেপ করা হয় এতে কমপক্ষে ২০০ রোহিঙ্গা নিহত ও ৩০০ জন আহত হয়। এ ঘটনার জন্য আরাকান আর্মিকে দায়ী করা হচ্ছে। জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গোয়েন লুইস সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহযোগিতার কথা জানিয়েছে। ২৫ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস উপস্থাপিত রোহিঙ্গাদের প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিকে ইউএনএইচসিআর স্বাগত জানিয়েছে। রোহিঙ্গা সংকটের সাত বছর পূর্তিতে ইউএনএইচসিআর দাতাদেশ, আন্তর্জাতিক ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে রোহিঙ্গা কার্যক্রমে তাদের অর্থায়ন বাড়ানোর আহ্বান জানায়। অর্থায়নের অনিশ্চয়তার কারনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ এবং জীবন রক্ষাকারী কার্যক্রম ছাড়া অন্যান্য অনেক জরুরী কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ চলছে। রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকাসহ রাজ্যের বিস্তীর্ণ অংশ আরাকান আর্মিদের দখলে রয়েছে। রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সেনাবাহিনীর মধ্যে চলমান যুদ্ধে দুই পক্ষই রোহিঙ্গাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে । রোহিঙ্গারা জানায় যে, মিয়ানমারে তাদের উপর প্রথম গণহত্যা চালায় সামরিক জান্তা, আর বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্বিতীয়বার গণহত্যা চালাচ্ছে আরাকান আর্মি। ইতোমধ্যে দ্বিতীয় দফায় গণহত্যায় তিন হাজারের বেশী রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। ওইসব এলাকার অনেক রোহিঙ্গাকে বাস্তুচ্যুত করা হয় এবং অনেক বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়। রাখাইন রাজ্যকে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী শূন্য করতে তাদের এই কৌশল বলে অনেকে মনে করে।
সম্প্রতি প্রায় ৮ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে জানা যায়। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান যে, মন্ত্রিপরিষদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে এবং এটা কিভাবে ঠেকানো যায় সে বিষয়ে চেষ্টা করতে হবে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর চলমান হত্যা ও সহিংসতা বন্ধে স্থায়ী সমাধানের কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আন্তর্জাতিক মহলের কঠোর হস্তক্ষেপ জরুরি।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে পালানোর সময় কয়েক’শ বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক প্রধান ফলকার টুর্ক। তিনি নিষ্ঠুরতার শিকার রোহিঙ্গা ও অন্যান্য বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় এগিয়ে এসে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা আসিয়ান ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব বলে উল্লেখ করেন। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র মে মাসে জেনেভায় রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় এবং নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের বিষয়ে জাতিসংঘের দৃঢ় অবস্থানের কথা জানায়।
প্রত্যাবাসন বিলম্ব হওয়ায় দিন দিন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাস ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়ে চলেছে। রোহিঙ্গারা নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে এবং তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করা না গেলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গারা আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, অস্ত্র ও মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়ছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানোর প্রত্যাশা স্থানীয় সচেতন মহলের।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিনিয়ত বাড়ছে জনসংখ্যা। প্রতিবছর অন্তত ৩০ হাজার শিশুর জন্ম হচ্ছে ক্যাম্পে। রোহিঙ্গারা বাল্যবিয়ে ও জন্মনিয়ন্ত্রণ নিয়ে তারা সচেতন নয়। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিদিন ৯০টির বেশি শিশু জন্ম নিচ্ছে। বাল্য বিয়ে ও জন্মনিয়ন্ত্রণ বিষয়ে সচেতন করতে ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩৫টি এনজিও’র সাড়ে ৩ হাজার কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করছে। এরফলে এখন অনেকই জন্মনিয়ন্ত্রণে আগ্রহী হচ্ছে। রোহিঙ্গা জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও ত্রান সহায়তা কমে যাওয়ায় দেশি বিদেশি এনজিও সংস্থাগুলোতে নানা সংকট দেখা দিয়েছে এবং এই সংকট দিন দিন প্রকট হচ্ছে। আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলো ত্রাণ সহায়তা নিশ্চিত করতে তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকদের মতে, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বহুমুখী কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জরুরি। নানা কূটনৈতিক জটিলতায় আটকে আছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যক্রম শুরু করা নতুন সরকারের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে সংশ্লিষ্ট বিশ্লেষকরা। নতুন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং বিশেষ টহল অব্যাহত রেখেছে।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের উদ্যোগে নেয়া পাইলট প্রকল্পের কাজ চলমান রাখতে হবে। রোহিঙ্গাদেরকে প্রেষণা প্রদানের মাধ্যমে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার আগ্রহ অব্যাহত রাখতে হবে। আন্তর্জাতিক মহলের তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গাদের জন্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদেরকে আত্মবিশ্বাসী ও আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার মাধ্যমে আত্ননির্ভরশীল করে ত্রান সহায়তার উপর চাপ এবং অপরাধ প্রবণতা কমিয়ে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত করতে হবে। এ সংকট মোকাবিলায় ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রাখতে নতুন দাতাগোষ্ঠীর সন্ধান করতে হবে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহল এ বিষয়ে অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে।
মিয়ানমার ও রাখাইন রাজ্যে যুদ্ধ বন্ধ ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক দেশগুলোকে দ্রুত কার্যকরী উদ্যোগ নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের জন্য রাখাইন রাজ্যে নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার বিষয়টি ভেবে দেখতে হবে। জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দাতা দেশগুলোর সহায়তায় রোহিঙ্গাদের রাখাইনে গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে আরাকান আর্মি, রাখাইনের রাজনৈতিক দল ও স্থানীয় রাখাইনদের নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের বিষয়টি নিয়ে এন ইউ জি , আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সরকারের সাথে সমন্বয়ের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রাখতে হবে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ক্যাম্পের জনঘনত্ব কমাতে হবে। ভাসানচরে কিছু রোহিঙ্গা স্থানান্তর করলে এই সমস্যা কিছুটা কমবে, এজন্য প্রয়োজনীয় সহায়তার ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বি জি বি ও কোস্ট গার্ডের তৎপরতা চলমান রাখতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদী রোহিঙ্গা সংকট এখন জটিলতার আবর্তে রয়েছে। বাংলাদেশ এই সমস্যায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত। সংকট মোকাবেলায় পর্যাপ্ত ত্রান সহায়তা নিশ্চিতে পাশাপাশি অন্যান্য সমস্যা সমাধানে সকল পক্ষকে একত্রে বহুমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে। বাংলাদেশ সরকারকে যে কোন পরিস্থিতিতে চলমান রোহিঙ্গা সমস্যাকে অগ্রাধিকার তালিকায় রেখে সংশ্লিষ্ট সকলের সহায়তায় সংকট সমাধানের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
লেখক: এন ডি সি, এ এফ ডব্লিউ সি, পি এস সি, এম ফিল (অব.), মিয়ানমার ও রোহিঙ্গা বিষয়ক গবেষক
ব্রি. জে. হাসান মো. শামসুদ্দীন (অব.) মত-দ্বিমত রোহিঙ্গা সংকট: ত্রান সহায়তা ও কূটনৈতিক তৎপরতার পাশাপাশি বহুমুখী পদক্ষেপ