ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়: ওসিসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
১০ আগস্ট ২০২০ ১৮:২০ | আপডেট: ১০ আগস্ট ২০২০ ২১:১৬
ঢাকা: ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগে রাজধানীর কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (১০ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমানের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন কোতোয়ালী থানার কাপড় ব্যবসায়ী মো. সোহেল। এরপর আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ শেষে আদেশ পরে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
মামলার অভিযুক্তরা হলেন- কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান, উপপরিদর্শক (এসআই) পবিত্র সরকার, খালেদ শেখ ও মো. শাহিনুর, কনস্টেবল মিজান এবং সোর্স মোতালেব।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ঈদের পরদিন ২ আগস্ট বিকেল চারটা থেকে সাড়ে চারটার দিকে বুড়িগঙ্গা নদী পার হয়ে কোতয়ালী থানার ওয়াইজঘাট এলাকা দিয়ে বসুন্ধরায় মেয়ের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হন মো. সোহেল। পথে পুলিশ তাকে ঘেরাও করে তল্লাশি করে পকেটে থাকা ২ হাজার ৯০০ টাকা নিয়ে নেয়।
তল্লাশি শেষে পুলিশ তাকে চলে যেতে বললে সোহেল টাকা ফেরত চান। তখন পুলিশের সদস্যরা তাকে মারধর করা হয়। পরে লোকজন এসে কি হয়েছে জানতে চাইলে আসামিরা বলে তার পকেটে দুই প্যাকেট ইয়াবা পাওয়া গেছে। এরপর টেনে হেঁচড়ে তাকে থানায় নিয়ে গিয়ে জেএমবির ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি বলে ফাঁসাতে চান পুলিশ সদস্যরা। পরে পরিবারের সদস্যরা থানায় গেলে আসামিরা তাদের কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। না হলে ক্রসফায়ারের হুমকি দেন।
আরও জানা যায়, সোহেলের পরিবারের সদস্যরা রাতেই আসামিদের দুই লাখ টাকা দেন। পরে সকালে আরও এক লাখ টাকা দেন। টাকা দেওয়ার পর সোহেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, মিটফোর্ড হাসপাতালের ভেতরে বসে তিনি মাদক সেবন করছিলেন এবং শিক্ষার্থীদের উত্যক্ত করছিলেন। আবার আসামিরাই তাকে জামিন করিয়ে আনেন।
ওই ঘটনায় ভিকটিম পেনাল কোডের ৪২০/৪০৬/৫০৬/১০৯/৩৪/৩৮৫/৩৮৬/৩৪৭ ধারাসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫(১)(ক)(খ) ধারায় মামলাটি দায়ের করেন।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার বাদী সোহেল মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, “সারারাত থানা লকাপে আটকে রাখে। জেএমবি মামলার ভয় দেখান এসআই খালেদ শেখ। আর এসআই পবিত্র বলেন, ‘টাকা না দিলে ক্রসফায়ারে দেওয়া হবে’। এএসআই শাহীন বলেন, ‘দ্রুত টাকা নিয়ে আসতে বলে না হলে বড় মাদক মামলায় ফেঁসে যাবি’।”
‘টাকা নেওয়ার পর পুলিশ আমার নামে যে মামলা দেয়, সেখানে লেখা হয়েছে, আমাকে তারা সিগারেটের মাধ্যমে মাদক খাওয়া অবস্থায় মিটফোর্ড হাসপাতালের ভেতর থেকে ধরেছেন। অথচ আমাকে ধরল সদরঘাট ওয়াইজ ঘাট এলাকা থেকে। পুলিশ মামলা দিলো আবার পুলিশই আইনজীবী দিয়ে আদালত থেকে ছাড়িয়ে আনলেন’, বলেন মামলার বাদী সোহেল মিয়া।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমানকে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলে তিনি বারবার কল কেটে দেন। আর অভিযুক্ত অন্যদের সাথেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।