ঢাকা: চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘হাস্যকর’ বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল আলোচনায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘ইতিহাস কথা কয়’ এর ব্যানারে ’২১ আগস্টের চক্রান্তমূলক গ্রেনেড হামলা’ শীর্ষক এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভা আয়োজন করে বিএনপি।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী।
এর আগে, জাতীয় শোক দিবসের এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের লাশ যে নেই, তা খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতারা ভালো করে জানেন।’
আরও পড়ুন: ‘জিয়ার কবরে তার লাশ নেই, সেটা নিয়ে এত নাটক কেন বিএনপির?’
এমন বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকেই আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বিষোদগার করেছেন জিয়াউর রহমান বিরুদ্ধে। তিনি তার মাজার সম্পর্কে কথা বলেছেন, তার একাত্তর সালের যুদ্ধের ভূমিকা নিয়েও কথা বলেছেন। একটা হাস্যকর বক্তব্য তিনি (প্রধানমন্ত্রী) রেখেছেন।’
‘এ বক্তব্য থেকে প্রমাণ হয় যে, এরা কতটা প্রতিহিংসাপরায়ণ। যিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন তার ন্যুনতম স্বীকৃতি দিতেও তারা নারাজ। আজকে এটা ঐতিহাসিকভাবে সত্য, দিবালোকের মতো সত্য যে, জিয়াউর রহমান রণাঙ্গনে থেকেই যুদ্ধ করেছেন, রণাঙ্গনে থেকেই যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন। এটা দিবালোকের মতো সত্য যে, তিনি (জিয়াউর রহমান) যেদিন শাহাদাত বরণ করে সেদিন এদেশের লাখ লাখ তার জন্য কেঁদেছিল এবং মানিক মিয়া এভিনিউতে লাখ লাখ মানুষ তার জানাজায় অংশ গ্রহণ করেছিল। এতে প্রমাণ হয় তিনি কত জনপ্রিয় নেতা ছিলেন’— বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘২১ আগস্ট জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্তের প্রথম সোপান ছিল। প্রকৃতপক্ষে ২১ আগস্ট একটি সুদুরপ্রসারী চক্রান্ত বাংলাদেশকে আবার গণতন্ত্রহীন করার জন্য, বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্নগুলোকে ভেঙে চুরমার করে দেওয়ার জন্য।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২১ আগস্ট এবং ১/১১ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ১/১১ ঘটনার জন ২১ আগস্ট ছিল একটা প্রাথমিক চক্রান্ত। ঝূঁকিটা বড় ছিল। আমরা এই ধরনের দুর্ঘটনার ঘোরতর বিরোধী। বিএনপি সবসময় যে কোনো ধরনের অন্যায়, হত্যা এবং সংঘাতবিরুদ্ধে একটি রাজনৈতিক দল। সেজন্য ওই সময়কার প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন, প্রতিবাদ করেছেন। খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার বাসায় যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু তাকে যেতে দেওয়া হয়নি, বাধা দেওয়া হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমি শুধু বলতে চাই, ২১ আগস্টের পুরো বিষয়টা ছিল একটা রাজনৈতিক বিষয়, প্রতিহিংসার রাজনীতি, চক্রান্তের রাজনীতির বিষয়। বাংলাদেশকে একটা তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করা হবে, বাংলাদেশের মানুষের অধিকারগুলোকে ছিনিয়ে নেওয়া হবে এবং সত্যিকার অর্থেই এ দেশকে একটা নতজানু দেশ হিসেবে পরিণত করা হবে— সেটিই ছিল উদ্দেশ্য, তার একটা অংশ ২১ আগস্ট।’