বিজ্ঞাপন

বইমেলা— প্রকাশকরা চান ১ মাস, একাডেমি চায় ১৪ দিন

February 1, 2022 | 9:35 pm

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় অমর একুশে গ্রন্থমেলার এবারের আয়োজন ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে আগেই। ফেব্রুয়ারির শুরুতে দাঁড়িয়ে বাংলা একাডেমি মাসের বাকি ১৪ দিনে ইতি টানতে চায় এই বইমেলার। তবে প্রকাশকদের প্রস্তাব, মেলা চলুক এক মাস ধরেই— ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাংলা একাডেমিতে প্রকাশকদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে একাডেমির মহাপরিচালক নুরুল হুদা সারাবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

নুরুল হুদা বলেন, ‘বইমেলা আয়োজনের চেষ্টা চলছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হতে পারে মেলা। আবার প্রকাশকরা বলছেন, মেলা যেন ১৭ মার্চ পর্যন্ত করা হয়।’

আরও পড়ুন- বইমেলা পেছাল ২ সপ্তাহ

বিজ্ঞাপন

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, আমরা একাডেমির অবস্থান এবং প্রকাশকদের প্রস্তাবের কথা সরকারকে জানাব। সরকার যে সিদ্ধান্ত দেবে, সে অনুযায়ী মেলা হবে।

মহাপরিচালক মেলা আয়োজনে সরকারি সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে থাকার কথা বললেও বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সহসভাপতি ও প্রকাশনা সংস্থা অন্যপ্রকাশের কর্ণধার মাজহারুল ইসলাম জানাচ্ছেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্তই থাকবে অমর একুশে গ্রন্থমেলার আয়োজন।

একাডেমির মহাপরিচালকের সঙ্গে সভা শেষে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মাজহারুল ইসলাম লিখেন, ‘এ বছর অমর একুশে বইমেলা ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলা একাডেমির সঙ্গে দুই প্রকাশক সমিতির নেতাদের সভায় এই প্রস্তাব গৃহীত হয়।’

বিজ্ঞাপন

দুই প্রকাশক সমিতি বলতে মাজহারুল ইসলাম বলেছেন বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির কথা। এই দুই সমিতির নেতারা মঙ্গলবার দুপুরে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই তারা ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত বইমেলা আয়োজন করতে চান বলে জানান। মাজহারুল ইসলাম ওই বৈঠকে তাদের প্রস্তাবনা গৃহীত হওয়ার কথা জানালেও অবশ্য একাডেমি সেটি নিশ্চিত করছে না।

আরও পড়ুন-

গত বছর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা সম্প্রসারণের পর থেকে মেলার আয়তনও ক্রমশ বেড়েছে। বইমেলায় অংশ নেয় ৪১০টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান, ইউনিট ছিল ৭২৩টি, প্যাভিলিয়ন ছিল ৩৪টি। শিশু চত্বরের আয়তনও বেড়েছিল।

এবারের মেলায় পরিসরগত কোনো পরিবর্তন আছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে একাডেমির মহাপরিচালক নূরুল হুদা সারাবাংলাকে বলেন, ‘সরকারি সিদ্ধান্ত আসার পর এ বিষয়ে বলতে পারব। এখনই এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।’

বিজ্ঞাপন

এর আগে, গত ১৬ জানুয়ারি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানায়, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে বইমেলা হবে না। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে মেলা দুই সপ্তাহ পেছানোর কথা জানানো হয় ওই সময়। তবে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় মেলার মতো আয়োজন না হলেই ভালো।

গত বছরও করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ফেব্রুয়ারিতে বইমেলা আয়োজন করতে পারেনি বাংলা একাডেমি। পরে মেলা শুরু হয় ১৮ মার্চ। বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলছিল এই বইমেলা। পরে সরকার দ্বিতীয় দফায় বিধিনিষেধ জারি করলে মেলার সময়সীমা কমিয়ে বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা করা হয়। পরে আবার মেলা চালানো হয় দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। শেষ পর্যন্ত ১২ এপ্রিল মেলা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

অনেকটা ‘খর্বকায়’ আয়োজনের বইমেলা নিয়ে প্রকাশকরা গত বছর মোটেও সন্তুষ্ট হতে পারেননি। অনেক প্রকাশক মেলায় তাদের স্টল তৈরির খরচও তুলতে পারেননি বলেও জানান। তাদের হিসাব বলছে, গোটা বইমেলায় বিক্রি হয় মাত্র চার কোটি টাকার বই। এতে প্রকাশকদের ক্ষতি হয় আনুমানিক ৯৬ কোটি টাকার।

ফাইল ছবি

সারাবাংলা/আরআইআর/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন