দুদিন আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২০৫ রান তুলেও হেরেছিল বাংলাদেশ। সেটাকে বলা হচ্ছিল দুর্ঘটনা। তাহলে আজ যেটা ঘটলা সেটা কি? যোজন যোজন পিছিয়ে থাকা দলটির হয়ে আজ আবারও হারল বাংলাদেশ।
যাতে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জিতল আরব আমিরাত। টেস্ট খেলুড়ে দেশের বিপক্ষে এই প্রথম সিরিজ জয়ের গৌরব অর্জন করল আরব আমিরাত।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ দলের দুর্দশা অনেক দিনের। কিন্তু তাই বলে আরব আমিরাতের মতো নবীন দলের বিপক্ষে সিরিজ হারতে হবে! এমন ভাবনা হয়ত ভাবেনি কেউই।
আগে ব্যাটিং করতে নেমে শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ১৬২ রানে থেমেছে। আগের দুই ম্যাচে বাংলাদেশি বোলারদের কাচুকাটা করা অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিম আজ শুরুতেই ফিরেছেন। তবে আজ বাংলাদেশকে কাঁদিয়েছেন আলিশান শারুফা ও আসিফ খান। ৫ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটের জয় নিশ্চিত করেছে আরব আমিরাত। তিন ম্যাচের সিরিজটা ২-১ ব্যবধান জিতল আরব আমিরাত।
বুধবার (২১ মে) শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ১৬২ রানের জবাব দিতে নেমে আজও শুরুতে ঝড় তুলতে চেয়েছেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। তবে আজকের ঝড়টা বড় হয়নি। শরিফুল ইসলামের বলে ফিরেছেন ৬ বলে ৯ রান করে। অপর ওপেনার মোহাম্মদ জোহাইবকেও ২৩ বলে ২৩) আজ দ্রুত তুলে নিয়েছেন রিশাদ হোসেন। দুই ওপেনারকে হারিয়ের গতি কমেছিল আরব আমিরাতে। তবে আসিফ খান সব হিসেব মিলিয়ে দিয়েছেন।
নিজের প্রথম ৯ বলে ৫ রান করা আসিফ ১৬তম ওভারে রিশাদ হোসেনকে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে নিজের উপস্থিতির জানান দেন সেই সঙ্গে ম্যাচ আরব আমিরাতের দিকেও ঝুঁকে নেন। বাকি সময়ে আরও বেশি ভয়ঙ্কর ছিলেন আসিফ। তাকে থামাতে পারেনি বাংলাদেশের বোলিং ডিপার্টমেন্ট।
দলের ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত হওয়ার সময় ২৬ বলে ৪১ রান করে নটআউট ছিলেন আসিফ খান। এই ৪১ রানের মধ্যে ৩০ রানই ছক্কা হাঁকিয়ে তুলেছেন। ছক্কা মেরেছেন ৫টি! তিনে নেমে আলিশান শারাফু আজ খুবই কার্যকারী একটা ইনিংস খেলেছেন। প্রথম দিকে আমিরাত দ্রুত উইকেট হারালে শারাফু ক্রিজে পরে থাকতে চেয়েছেন। পরে সেটা হওয়ার পর তিনিও বাংলাদেশি বোলারদর কচুকাটা করেন।
৪৭ বলে ৫টি চার ৩টি ছয়ে ৬৮ রানে অপরাজিত ছিলেন শারাফুল। বাংলাদেশের হয় একটি করে উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন ও তানজিম হাসান সাকিব।

টসে হেরে আগে ব্যাট করেছে বাংলাদেশ
এর আগে টস জিতে বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিং করার আমন্ত্রণ জানায় স্বাগতিকরা। তানজিদ হাসান তামিম একপ্রান্ত থেকে বেশ ভালো ব্যাটিং করছিলেন। কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে টপাটপ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। আরব আমিরাতের বোলারদের বোলিং খুব আহামরি ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশি ব্যাটাররা একের পর এক বাজে শটে উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছেন।
পারভেজ হোসেন ইমনের পর তাওহিদ হৃদয়, শেখ মাহেদিও দুই অঙ্কের কোটা ছোয়ার আগেই ফিরলে ৩১ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অধিনায়ক লিটন দাস আজ ১০ বলে ১৪ রান করে আউট। দারুণ খেলতে থাকা তানজিম হাসান তামিম ১৮ বলে ৪টি করে চার-ছয়ে ৪০ রান করে যখন ফিরলেন ৫৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
বিপদে পড়া বাংলাদেশের হয়ে হাল ধরতে পারেননি শামীম হোসেন পাটোয়ারী (৯) ও রিশাদ হোসেনও (০)। তবে জাকির আলী অনিক একপ্রান্ত আগলে রেখে ক্রিজে পরে থাকতে চেয়েছেন। শেষের ব্যাটারদের নিয়ে দলকে অনেকটা টেনেছেন জাকের। দলের নবম ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে ৩৪ বল খেলে ১ চার, তিন ছয়ে ৪১ রান করেন।
এরপর শেষ উইকেটে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন দুই পেসার শরিফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ। হাসান মাত্র ১৫ বল খেলে ৩ চারে ২৬ রান করেন। ৭ বলে ১৫ রান করেছেন শরিফুল। ২০ ওভারে শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে ১৬২ রানে থেমেছে বাংলাদেশ।