আগে ব্যাটিং করে ২০১ রানের পাহাড়সম টার্গেট দাঁড় করিয়েছিল স্বাগতিক পাকিস্তান। পরে জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশের তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম শুরুটা করেছিলেন উড়ন্ত। ভালো ব্যাটিং করছিলেন লিটন দাসও। কিন্তু দুজনের কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। অন্যদের মধ্য থেকে এক জাকের আলি ছাড়া দাঁড়াতে পারলেন না কেউ। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় ব্যবধানেই হেরেছে বাংলাদেশ।
তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে ৩৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। শেষ দিকে জাকের আলি কিছু রান করলেও সেটা কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো পাকিস্তানের দুইশোর্ধ্ব রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়েছে তাতে শুরুর সময়টা বাদ দিলে কখনোই মনে হয়নি বাংলাদেশ ম্যাচ জিততে পারে!
বৃহস্পতিবার (২৮ মে) লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের ২০১ রানের জবাব দিতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তরুণ ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন আজ ফিরেছন ৪ রান করে। তবে অপরপ্রান্তে তানজিদ হাসান তামিম যেভাবে চালাচ্ছিলেন তাতে সেই ধাক্কাটা মনেই হচ্ছিল না। অবশ্য আরও একবার ইনিংস বড় করতে না পারার দুঃখ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে তামিমকে।
ইনিংসের চতুর্থ ওভারে তামিম ১৭ বলে ২ চার ৩ ছয়ে ৩১ রান করে যখন ফিরলেন তখন দলের রান ৩৭! এরপর তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে দলকে টানছিলেন অধিনায়ক লিটন দাস। হৃদয় অবশ্য টি-টোয়েন্টি ধাচের ব্যাটিং করতে পারেননি। তবে লিটন সেট হওয়ার পর দারুণ খেলছিলেন।
দলের একশ পার হওয়ার পরেই মাত্র ২ রানের ব্যবধানে এই দুজন ফিরলে ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। লিটন ৩০ বলে ১টি চার ৩টি ছয়ে ৪৮ রান করে ফিরেছেন। হৃদয় ১৭ রান করতে বল খেলেছেন ২২টি। এরপর এক জাকের আলি ছাড়া কেউ দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশের হয়ে। জাকের একপ্রান্ত আগলে রেখে ২১ বলে ১ চার ৩ ছয়ে ৩৬ রানের যে ইনিংসটা খেললেন সেটা কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছে।
১৯.২ ওভারে ১৬৪ রানে গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের হয়ে অভিজ্ঞ পেসার হাসান আলি ৩০ রান খরচায় ৫ উইকেট নিয়েছেন। ২ উইকেট নিয়েছেন শাদাব খান।
এর আগে ব্যাটিং করতে নেমে বড় স্কোর গড়েছে পাকিস্তান। বাংলাদেশকে প্রথমে বোলিং করার আমন্ত্রণ জানায় পাকিস্তান। শুরুটা রঙিন ছিল বাংলাদেশের। ইনিংসের প্রথম ওভারে শেখ মাহেদির স্পিনে ক্যাচ তুলে দেন সাইম আইয়ূব। দ্বিতীয় ওভারে শরিফুল ইসলামের বলে এলবিডব্লিউ ফর্মে থাকা ফখর জামান।
পরপর দুই ওভারে দুই ওপেনারকে হারিয়ে পাকিস্তান চাপেই পরে যায়। তবে সেই চাপ কাটিয়ে তুলতে দেরি করেননি অধিনায়ক সালমান আলি আগা ও মোহাম্মদ হারিস। তৃতীয় উইকেটে দারুণ একটা পারর্টনারশিপ করেছেন দুজন। মোহাম্মদ হারিস ১৮ বলে ৩১ রান করে ফিরলে এই জুটি ভাঙে।
এরপর তরুণ হাসান নাওয়াজকে নিয়ে দলকে টানছিলেন সালমান আলি। দুজনেই দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। সালমান আলি ৩৪ বলে ৮টি চার ১টি ছয়ে ৫৬ রান করে ফিরলে এই জুটি ভাঙে। তরুণ হাসান নাওয়াজ ফিরেছেন ২২ বলে ৪৪ রান করে। এই দুজন ফেরার পর বাকি সময়ে ঝড় তুলেছেন শাদাব খান।
শুরুতে রান তুলতে পারছিলেন না। রিশাদ হোসেনকে দুই ছক্কা এক চার হাঁকিয়ে হাত খোলেন। ইনিংসের এক বল বাকি থাকতে আউট হওয়ার আগে ২৫ বলে ৫টি চার ২টি ছক্কায় ৪৮ রান করেন শাদাব। ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২০১ রানে থেমেছে পাকিস্তান।
বাংলাদেশের হয়ে ৩২ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম। একটি করে উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদ, মেহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, শামীম পাটোয়ারী ও তানজিদ হাসান সাকিব।