নখ কামড়ানো উত্তেজনা, রোমাঞ্চ, অনিশ্চয়তায় ভরপুর- কী ছিল না ম্যাচে! ওয়ানডে ক্রিকেটের বিরল ‘সুপার ওভার’ও দেখা গেল বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে। উত্তেজনা শেষে শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে হেরেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের হয়ে মোস্তাফিজুর রহমান করেন সুপার ওভার। সুপার ওভারে ১১ রান তুলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরে ১ বলেই ৫ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ! ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সুপার করতে আসা স্পিনার আকিল হোসেন নো বল করেন। পরের ৫ বলে করতে হতো ৬ রান। কিন্তু সৌম্য সরকার ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়ে ফিরলে তালগোল পাকিয়ে শেষ পর্যন্ত ৯ রানের বেশি তুলতে পারেনি বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই ম্যাচটা জিতলেই সিরিজ জয় নিশ্চিত হতো বাংলাদেশের। একটা সময় জয়ের একদম কাছাকাছিই চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। পরে ম্যাচ ঘুরে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের দিকে। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিল ৫ রান। রুদ্ধম্বাস ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত টাই হয়েছে।
শেষ বলে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিল ৩ রান। কিন্তু সাইফ হাসানের করা বলে ক্যাচ উঠলে ক্যাচ মিস করেন উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই অপরাজিত ব্যাটার দৌড়ে ২ রান নেন। ম্যাচ টাই হয়ে যায়।
পরে সুপার ওভারে হেরেছে বাংলাদেশ। এই হারে তিন ম্যাচের সিরিজটা এখন ১-১ ব্যবধানে সমতা। সিরিজের প্রথম ম্যাচ জিতেছিল বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২১৩ রানের পুঁজি নিয়ে বোলিং করতে নেমে ১৩৩ রানেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সপ্তম উইকেট তুলে নেয় বাংলাদেশ। সেই সময় বাংলাদেশের স্পিনাররা যেমন দাপুটে বোলিং করছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল সহজ জয় অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য।
কিন্তু লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে শেই হোপ দারুণ প্রতিরোধ গড়েন। হোপ ওয়েস্ট ইন্ডিজকে জয়ের কাছাকাছিই নিয়ে গিয়েছিলেন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের দরকার ছিল ৫ রান। বাংলাদেশের পার্ট টাইম বোলার সাইফ হাসানের শেষ ওভার থেকে ৫ রান নিতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৪ রান রান তুললে ম্যাচ টাই হয়ে যায়।
ম্যাচে ২১৩ রানের পুঁজি নিয়ে বোলিং করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট পেয়েছে বাংলাদেশ। নাসুম আহমেদের বলে ইনিংসের তৃতীয় বলেই ফেরেন ব্রেন্ডন কিং।
এরপর হাল ধরেন আলিক অ্যাথানেজ ও কেসি কার্টি। রিশাদ হোসেন দারুণ এক ডেলিভারিতে অ্যাথানেজকে (২৮) ফেরালে এই জুটি ভাঙে। ক্যারিবিয়ানদের দলীয় ৮২ রানের মাথায় সেই রিশাদই এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলেন কেসি কার্টিকে। এরপর পরপর উইকেট তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চাপে ফেলে দেয় বাংলাদেশের স্পিনাররা।
৮২ থেকে ১৩৩ এই ৫১ রানের ব্যবধানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পাঁচটি উইকেট তুলে নেয় মেহেদি হাসান মিরাজের বাংলাদেশ। এরপর থেকে হোপের প্রতিরোধ। জাস্টিন গ্রাভিসকে (২৬) নিয়ে সপ্তম উইকেটে তোলেন ৪৪ রান। তবে শেষ দিকে তালগোল পাকিয়ে ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংস থেমে যায় ২১৩ রানে।
বাংলাদেশের হয়ে রিশাদ হোসেন ৩ উইকেট নিয়েছেন। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন নাসুম আহমেদ ও তানভীর ইসলাম।
এর আগে সৌম্য সরকারের ৪৫ ও অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজের ৩২ রানে ২১৩ রান তোলে বাংলাদেশ। শেষ দিকে রিশাদ হোসেন ১৪ বলে ৩৯ রান করে বাংলাদেশকে দুইশর ওপারে নিয়েছেন।