প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে একশত টেস্ট খেলতে নেমেছেন মুশফিকুর রহিম। দেশের ক্রীড়াঙ্গনের নজর তাই মুশফিকের দিকেই। অভিজ্ঞ ক্রিকেটার নজর সরিয়ে নিতেও দিচ্ছেন না! মাইলফলকের টেস্টে অসাধারণ ব্যাটিং করছেন বাংলাদেশের তারকা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের প্রথম দিনে ৯৯ রানে অপরাজিত মুশফিক। ৪ উইকেটে ২৯২ রান তুলে টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ।
আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক আন্দ্রে বালবার্নির ওপরে বাংলাদেশি সমর্থকদের ক্ষোভ জমতে পারে! দিনের ৯০ ওভারের খেলা যখন শেষ হলো তখন মুশফিক ৯৯ রানে অপরাজিত। ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক আপত্তি না তুললে বাড়তি দুই-এক ওভার খেলা পরিচালনা করাই যেত। যাতে আজই সেঞ্চুরিটা পূর্ণ করার সুযোগ পেয়ে যেতেন মুশফিক। বাংলাদেশের দুই অপরাজিত ব্যাটার সেই আবেদন জানালেও। কিন্তু আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক কিছুতেই তাতে রাজি হননি। ফলে সেখানেই দিনের খেলা শেষ করতে বাধ্য হয়েছেন আম্পায়ার।
একশতম টেস্টে একশর দেখা পেতে মুশফিক এবং বাংলাদেশি সমর্থকদের তাই আগামীকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হচ্ছে। দিন শেষে মুশফিক ৯৯ রানে অপরাজিত। তার সঙ্গে ৪৭ রানে অপরাজিত লিটন দাস।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের শুরুটাও ভালো হয়েছিল।
আগের টেস্টে ওপেনিং জুটিতে রেকর্ড গড়া সাদমান ইসলাম অনিক ও মাহমুদুল হাসান জয়ের ওপেনিং জুটি ছিল ৫২ রানের। মিরপুরের উইকেটে ঘাস দেখা গেছে তবুও একাদশে কোনো জেনুইন পেসার রাখেনি আইরিশরা। ফলে নতুন বলের সুবিধাটা কাজে লাগাতে পারেনি সফরকারীরা।
১৪ ওভারে গিয়ে হঠাৎ যেন মনঃসংযোগ বিচ্ছিন্ন হলো সাদমান ইসলামের! ম্যাকব্রেইনের এলবিডব্লুর ফাঁদে পরেন। ৪৪ বলে ৬ চারে ৩৫ রানে ফেরেন সাদমান। আগের টেস্টে দুর্দান্ত একটা সেঞ্চুরি করা মাহমুদুল হাসান জয় খানিক বাদে অহেতুক শট খেলে ফিরেছেন ৩৪ রান করে। ৮৬ বল খেলে ২ চারে ৩৪ রান করে ফেরেন জয়।
আগের টেস্টে সেঞ্চুরি করা নাজমুল হোসেন শান্ত ছক্কা হাঁকিয়ে রানের খাতা খোলার পরপরই ফিরেছেন। ১১ বলে ৮ রান করে ফেরেন শান্ত। এই সেশনে বাকি সময়ে বিপদ হতে দেননি অভিজ্ঞ মুশফিক-মুমিনুল।
টেস্টের দ্বিতীয় সেশনে মুশফিক-মুমিনুল দারুণ ব্যাটিং করেছেন। বল কিছুটা পুরনো হয়ে যাওয়ার পর সুবিধা করতে পারেননি আইরিশ বোলাররা। খুব বেশি টার্ন আদায় করতে পারেননি আইরিশ স্পিনাররা। মুশফিক-মুমিনুলও করে গেছেন সজাগ ব্যাটিং।
দিনের দ্বিতীয় সেশনে দুজন তোলেন ৯২ রান। সেশন শেষে ১২৫ বল খেলে ৪টি চারের সাহায্যে ৬২ রানে অপরাজিত ছিলেন মুমিনুল। ১০৪টি বল খেলে মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৪৮ রান করে।
মুমিনুল এরপর আর বেশিদূর এগুতে পারেননি। তৃতীয় সেশনের দ্বিতীয় ওভারেই সেই আন্দ্রে ম্যাকব্রেইনের বলে ফিরেছেন মুমিনুল। ম্যাকব্রেইনকে সুইপ খেলতে গিয়ে আন্দ্রে বালবার্নির হাতে ক্যাচ তুলে দেন অভিজ্ঞ ব্যাটার। ফিরেছেন ১২৮ বলে ৬৩ রান করে।
এরপর লিটন দাসকে নিয়ে এগুতে থাকেন শততম টেস্ট খেলতে নামা মুশফিকুর রহিম। দিনের বাকি সময়ে এই জুটি বিচ্ছিন্ন করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। শেষ সময়ে আন্দ্রে বালবার্নি বাড়তি খেলা পরিচালনায় রাজি না হয়ে শুধু মুশফিকের সেঞ্চুরির অপেক্ষাটাই বাড়াতে পারলেন!
মুশফিক ১৮৭ বল খেলে ৫টি চারের সাহায্যে ৯৯ রানে অপরাজিত। ৮৬ বলে ২ চারে ৪৭ রানে অপরাজিত লিটন দাস।