বাংলাদেশের ডাকের অপেক্ষায় রিয়াসাত
১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২৩:২৪
।। স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: ২০১৩ সালে জাতীয় দলের ডাকে সাড়া দিয়ে অনুশীলন করেছিলেন তিনি। ইনজুরি ছিটকে দিয়েছিল লাল-সবুজ বাহিনী থেকে। এরপর ২০১৫ সালে এসে ফের জাতীয় দলে অনুপ্রবেশ। সেবার দেশের জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু অভিষেক হলো তার। কি এক অদৃশ্য কারণে বাংলাদেশের ফুটবলে ‘নির্বাসিত’ ফুটবলার তিনি।
এতক্ষণে বুঝে ফেলার কথা ফুটবলারটি রিয়াসাত ইসলাম খাতন। এখন ইউরোপের এক শীর্ষ পর্যায়ে নিজেকে প্রমাণ করে চলছেন। কিছুদিন আগে গত মাসের ১৮ তারিখ ইউরোপের সর্বোচ্চ লিগগুলোর একটিতে অভিষেক হয়েছে রিয়াসাতের। দেশ-বিদেশ থেকে হাজারো শুভেচ্ছাবার্তায় ভেসে যাচ্ছেন তিনি। আর ঢাকায় জন্ম নেয়া এই ফুটবলার অপেক্ষায় আছেন একটি ডাকের। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ডাকের।
https://www.facebook.com/photo.php?fbid=2198196236875383&set=a.261973123831047&type=3&theater
সাফ ফুটবল থেকে বাংলাদেশের বিদায়ে কেঁদে উঠেছে তার হৃদয়ও। দেশের স্ট্রাইকারের অভাবে দিনে রিয়াসাত আছেন ওয়েলশে। সারাবাংলার প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপচারিতায় উঠে আসলো রিয়াসাতের আশা-দু:খ-ভবিষ্যত চিন্তা।
২৮ বছর বয়সী নোয়াখালির এই ফুটবলার এখন ওয়েলশ প্রিমিয়ার লিগে লানলিনি টাউন এফসির হয়ে খেলছেন। গেল মাস আগস্টের ১৮ তারিখ দলটির হয়ে অভিষেক ম্যাচ খেলেছেন। সেদিন অবশ্য এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ ফুটবল দল কাতারকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো দ্বিতীয় রাউন্ডে পা রেখেছিল। আর অন্যদিকে দেশের দ্বিতীয় ফুটবলার হিসেবে ইউরোপের সর্বোচ্চ লিগে নাম লেখান রিয়াসাত।
ফুটবলে হাতেখড়ি:
‘আমি ঢাকা তে জন্মগ্রহণ করেছি। আমি ৫ বছর বয়সে জার্মানি চলে যাই। ১৪ বছর বয়সে আমি একটি লোকাল ক্লাব এফসি ফ্রেইবার্গারের হয়ে খেলা শুরু করি। তারপর বুন্দেসলিগার দল এসসি ফ্রেইবার্গ আমাকে বলে তাদের হয়ে খেলার জন্য আমি শেখানে অনূর্ধ্ব-১৬ ও অনূর্ধ্ব-১৭ খেলেছি। তারপর আমি কিছু ৪র্থ ও ৫ম স্তরের টিমের হয়েও খেলেছি। ’-রিয়াসাত জানান।
ওজিল-মুলারদের সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা আছে রিয়াসাতের। এর আগে ফিলিপাইনের সর্বোচ্চ লিগে খেলা এই ফুটবলার ওয়েলশ লিগেও নিজের অভিষেক রাঙ্গিয়েছেন জয় দিয়ে।
বাংলাদেশের ফুটবলে রিয়াসাত:
সাত বছর আগে (২০১৩ সাল) জাতীয় ফুটবল দলে ঢাক পান রিয়াসাত। অনুশীলন ক্যাম্পে যোগ দিলেও চোটের কারণে স্কোয়াড থেকে ছিটকে পড়েন। দুবছর পর (২০১৫ সাল) সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে একটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে লাল-সুবজদের স্কোয়াডেও জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। তৎকালীন ডাচ কোচ লোডভিক ডি ক্রইফের অধীনে মূল স্কোয়াডে জায়গা করে নিলেও জার্সিটা গায়ে জড়াতে পারেননি।
এর পরে কি এক অদৃশ্য কারণে স্কোয়াডে থাকা হলো না রিয়াসাতের। দু:খ বুকে জড়িয়ে আবার পাড়ি জমান জার্মানিতে।
আশা-ভবিষ্যত চিন্তা:
ক্রোশ-ক্রোশ দূর থেকে রিয়াসাত এখনও স্বপ্ন দেখেন লাল-সবুজ জার্সিতে মাঠ কাপাবেন। অপেক্ষায় আছেন একটা কলের। যোগাযোগের। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন থেকে যদি তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় তাহলে ফের ফিরতে পারেন দেশের মাটিতে। খেলতে চান দেশের স্থানীয় ক্লাবেও। ঘরোয়া ক্লাবগুলো নিয়ে খুব একটা পরিচিত না থাকলেও নিজ এলাকার ক্লাবে যোগ দিতে চান। রিয়াসাতের ভাষায়, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন যদি চায় তাহলে আসবো। ওখানকার নোয়াখালীতে কোন ক্লাব থাকলে সেখানে যোগ দিতে চাই। দেশের মাটিতেই খেলতে চাই।’
আর সেই কলটি তার কাছে না গেলে ওয়েলশ বা জার্মানিতেই ফুটবল ক্যারিয়ার গড়তে চান তিনি। আরও বড় ক্লাবে যেতে চান। নিজেকে আরও বড় জায়গায় দেখতে চান। ইউরোপের আরও বড় বড় ক্লাবে খেলতে চান।
সারাবাংলা/জেএইচ
আরও পড়ুন
ইউরোপের মাঠ মাতাচ্ছেন ঢাকার ‘পোলা’