ওয়ানডের যত টাই ম্যাচ
২৬ অক্টোবর ২০১৮ ১১:১৬
।। মুশফিক পিয়াল, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর ।।
সবশেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে আর ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চট্টগ্রামে স্বাগতিক বাংলাদেশ ৭ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে জিম্বাবুয়েকে। আজ নামবে সিরিজের তৃতীয় বা শেষ ম্যাচে। ওদিকে বিশাখাপত্তমে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে আগের ম্যাচেই ড্র করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেটি নিয়ে ওয়ানডেতে ৩৭টি ম্যাচ হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর ড্র (টাই) হলো। ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ দশবার ড্র করেছে ক্যারিবীয়ানরা।
আগে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিক ভারত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ৩২১ রান। জবাবে, নির্ধারিত ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ভারতের সমান ৩২১ রান তোলে কারিবীয়ানরা। ভারতের দলপতি বিরাট কোহলি ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ১০ হাজার রান পূর্ণ করার পাশাপাশি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭টি ওয়ানডে সেঞ্চুরি হাঁকান। তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১২৯ বলে ১৩টি চার আর ৪টি ছক্কায় কোহলি ১৫৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। আম্বাতি রাইডু দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৩ রান করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের শাই হোপ তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৩৪ বলে ১০টি চার আর ৩টি ছক্কায় ১২৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। এটি ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। শিমরন হেটমেয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৪ রান করেন।
১৯৮৪ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ওয়ানডেতে প্রথম টাই (ড্র) ম্যাচ হয়েছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আগে ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে করেছিল ২২২ রান। জবাবে, ৯ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া করেছিল ক্যারিবীয়ানদের সমান ২২২ রান। এরপর ১৯৮৯ সালে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া, ১৯৯১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-পাকিস্তান, ভারত-ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান, ১৯৯৩ সালে পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত-জিম্বাবুয়ে, ১৯৯৪ সালে পাকিস্তান-নিউজিল্যান্ড, ১৯৯৫ সালে পাকিস্তান-জিম্বাবুয়ে, ১৯৯৬ সালে শ্রীলঙ্কা-নিউজিল্যান্ড ম্যাচ ড্র হয়।
১৯৯৭ এবং ১৯৯৯ সালে ছয়টি ম্যাচ ড্র হয়। ১৯৯৭ সালে জিম্বাবুয়ে-ভারত, নিউজিল্যান্ড-ইংল্যান্ড আর নিউজিল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে ম্যাচ টাই হয়। ১৯৯৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকা আর পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা ম্যাচ ড্র হয়। এর মধ্যে অস্ট্রেলিয়া-দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচটি ছিল বিশ্বকাপের ম্যাচ। ২০০০ সালেও তাদের একটি ম্যাচ ড্র হয়েছিল। মজার ব্যাপার হলো পরের টাইড ম্যাচটিও এই দুই দলের, সেটি ছিল ২০০২ সালে। ২০০৩ সালে বিশ্বকাপের ম্যাচে ড্র করেছিল শ্রীলঙ্কা-দক্ষিণ আফ্রিকা। আর ২০০৫ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ড্র করেছিল চোকার খ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকা। ড্র হওয়া টানা চারটি ম্যাচে অংশ নেওয়া দল প্রোটিয়ারা।
২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ড, ২০০৭ সালে আয়ারল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে, ২০০৮ সালে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড, ২০১১ সালে ভারত-ইংল্যান্ড এবং একই বছর আবারো ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ ড্র হয়। ২০১২ সালে শ্রীলঙ্কা-ভারত আর অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ ড্র হয়। ২০১৩ সালে সর্বোচ্চ চারটি ম্যাচ ড্র হয়েছিল। এর মধ্যে আছে পাকিস্তান-আয়ারল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড-নেদারল্যান্ডস আর পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজের ম্যাচ। ২০১৪ সালে ভারতের বিপক্ষে ড্র করেছিল নিউজিল্যান্ড। ২০১৬ সালে দুটি ম্যাচ ড্র হয়েছিল, যার একটি শ্রীলঙ্কা-ইংল্যান্ড অন্যটি জিম্বাবুয়ে-ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
চলতি বছর তিনটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। ১২ মার্চ জিম্বাবুয়ে ড্র করেছিল স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। কিছুদিন আগে শেষ হওয়া এশিয়া কাপের পর ২৪ অক্টোবর হওয়া বিশাখাপত্তমের ম্যাচও ড্র হয়েছে। শেষ ড্র ম্যাচ দুটিতেই রয়েছে ভারতের নাম। এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ড্র করে ভারত। আর গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জিততে পারেনি টিম ইন্ডিয়া।
ওয়ানডেতে দুটি ম্যাচের ফলকে একটু অন্যরকম লাগে। দুটি ম্যাচেই ছিল পাকিস্তান। ১৯৮৭ সালের ২০ মার্চ ভারতের প্রতিপক্ষ ছিল তারা। আর ১৯৮৮ সালের ১৪ অক্টোবর পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ ছিল অস্ট্রেলিয়া। হায়দ্রাবাদে পাকিস্তানের বিপক্ষে আগে ব্যাট করে ভারত ৪৪ ওভারের সেই ম্যাচে ৬ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ২১২ রান। ৪৪ ওভারে ২১৩ রানের টার্গেটে নেমে পাকিস্তান সব ওভার খেলে ৭ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ভারতের সমান ২১২ রান। কম উইকেট হারানোর ফলে ভারতকে জয়ী ঘোষণা করা হয়। ১৯৮৮ সালে লাহোরে অস্ট্রেলিয়া নির্ধারিত ৪৫ ওভারে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ২২৯ রান। জবাবে পাকিস্তান নির্ধারিত ৪৫ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে তোলে অজিদের সমান ২২৯ রান। কম উইকেট হারানোয় পাকিস্তানকে জয়ী ঘোষণা করা হয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সর্বোচ্চ দশবার ম্যাচ ড্র করেছিল। অস্ট্রেলিয়া আর ভারত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ বার ম্যাচ ড্রর স্বাদ পায়। ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ৮ বার করে ম্যাচ ড্র করেছিল। এছাড়া, জিম্বাবুয়ে ৭ বার ম্যাচ ড্র করেছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড ৬ বার, শ্রীলঙ্কা ৫ বার, আয়ারল্যান্ড ৩ বার আর স্কটল্যান্ড-নেদারল্যান্ডস একবার করে ম্যাচ ড্র করেছিল।
সারাবাংলা/এমআরপি