২৮২ রানে অলআউট জিম্বাবুয়ে
৪ নভেম্বর ২০১৮ ১১:১৭ | আপডেট: ৪ নভেম্বর ২০১৮ ১১:৫৩
।। স্পোর্টস ডেস্ক ।।
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচের দ্বিতীয় দিন মাঠে নেমেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ এবং সফরকারী জিম্বাবুয়ে। প্রথম দিন শেষে জিম্বাবুয়ে ৯১ ওভার ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে তোলে ২৩৬ রান। দ্বিতীয় দিন প্রথম সেশনে গুটিয়ে যাওয়ার আগে জিম্বাবুয়ে তোলে ২৮২ রান। স্পিনার তাইজুল ইসলাম একাই ৬টি উইকেট তুলে নেন। নাজমুল ইসলাম অপু দুটি উইকেট পান। একটি করে উইকেট তুলে নেন আবু জায়েদ রাহি এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। প্রথম ইনিংসে উইকেট শূন্য থাকেন আরিফুল হক এবং মেহেদি হাসান মিরাজ।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক হ্যামিলটন মাসাকাদজা। সফরকারীদের হয়ে ওপেনিংয়ে নামেন অধিনায়ক হ্যামিলটন মাসাকাদজা এবং ব্রায়ান চারি। ইনিংসের ১১তম ওভারে তাইজুলের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ব্রায়ান চারি। বিদায়ের আগে তিনি করেন ৩১ বলে ১৩ রান। দলীয় ৩৫ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। দলীয় ৪৭ রানের মাথায় আবারো আঘাত হানেন তাইজুল। ব্যক্তিগত ৬ রানে শর্টে দাঁড়ানো নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ব্রেন্ডন টেইলর। প্রথম দিনের প্রথম সেশনে ৩১ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ে দুই উইকেট হারিয়ে তোলে ৮৫ রান।
দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই আঘাত হানেন আবু জায়েদ রাহি। ওপেনার হ্যামিলটন মাসাকাদজাকে এলবির ফাঁদে ফেলে ফিরিয়ে দেন এই ডানহাতি পেসার। দলীয় ৮৫ রানের মাথায় জিম্বাবুয়ে তাদের তৃতীয় উইকেট হারায়। মাসাকাদজা দুটি ছক্কা আর চারটি বাউন্ডারিতে ১০৫ বলে ৫২ রান করে বিদায় নেন। ৪৮তম ওভারে নিজের অভিষেক উইকেট তুলে নেন নাজমুল ইসলাম অপু। ৫২ বলে ১৯ রান করা সিকান্দার রাজাকে সরাসরি বোল্ড করেন এই স্পিনার। দলীয় ১২৯ রানের মাথায় সফরকারীরা চতুর্থ উইকেট হারায়। এরপর জিম্বাবুয়েকে চেপে ধরে টাইগাররা। টানা ৬ ওভার মেডেন পান নাজমুল অপু এবং মেহেদি মিরাজ। দ্বিতীয় সেশন শেষে ৬২ ওভারে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪৯/৪।
এরপর জুটি গড়েন শেন উইলিয়ামস এবং পিটার মুর। ইনিংসের ৭৭তম ওভারে উইলিয়ামসকে ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশের দলপতি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মিরাজের হাতে ধরা পড়ার আগে উইলিয়ামস ১৭৩ বলে ৯টি বাউন্ডারিতে করেন ৮৮ রান। দলীয় ২০১ রানের মাথায় জিম্বাবুয়ে পঞ্চম উইকেট হারায়।
দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে আঘাত হানেন তাইজুল। ফিরিয়ে দেন ২৮ রান করা রেগিস চাকাভাকে। দলীয় ২৬১ রানের মাথায় সফরকারীরা ষষ্ঠ উইকেট হারায়। দলীয় ২৬৯ রানের মাথায় সপ্তম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। তাইজুল এবার ফিরিয়ে দেন ব্যক্তিগত ৪ রান করা ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে। উইকেটের পেছনে মুশফিকের গ্লাভসবন্দি হন তিনি। এরপর শিকারে যোগ দেন নাজমুল অপু। ৩ রান করা ব্রেন্ডন মাভুতাকে এলবির ফাঁদে ফেলেন তিনি। টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থবারের মতো পাঁচ উইকেট তুলে নিতে এরপর তাইজুল ফিরিয়ে দেন কাইল জারভিসকে (৪)। পরের বলেই তাইজুল ফিরিয়ে দেন তেন্দাই চাতারাকে। পিটার মুর ৬৩ রান করে অপরাজিত থাকেন।
এই ম্যাচের মধ্যদিয়ে টেস্টে অভিষেক হয় মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান আরিফুল হক এবং স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুর। এদিকে, অভিষেক হয়েছে জিম্বাবুয়ের বেন্ডন মাভুতার। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করছে গাজী টিভি। র্যাবিটহোলবিডি তে ক্লিক করেও ম্যাচটি সরাসরি দেখা যাচ্ছে।
ওয়ানডের মতো টেস্টেও বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি জয় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সবশেষ ১৩ ওয়ানডেতে জিতেছে বাংলাদেশ। টানা পঞ্চম টেস্ট জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে তারা। এখন পর্যন্ত যে সাতটি ভেন্যুতে টেস্ট হয়েছে বাংলাদেশে, তার প্রতিটিতেই প্রথম ম্যাচে হেরেছে স্বাগতিকরা। সিলেটে প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে অবশ্য গত ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি। সাকিব-তামিম না থাকলেও বাংলাদেশই ফেবারিট। শনিবার (৩ নভেম্বর) অষ্টম ভেন্যু হিসেবে শুরু করলো সিলেট।
ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসির সবশেষ প্রকাশিত র্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ রয়েছে ৯ নম্বরে আর জিম্বাবুয়ে রয়েছে ১০ নম্বরে। টাইগারদের রেটিং ৬৭ আর জিম্বাবুয়ের ২। এই সিরিজের আগে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে খেলেছে ১৪টি টেস্ট ম্যাচ। যেখানে জয়ের পাল্লায় এগিয়ে জিম্বাবুয়ে, বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতেছে ৬টি ম্যাচ। আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছে ৫টি ম্যাচ। বাকি তিনটি ম্যাচ ড্র হয়।
বাংলাদেশ একাদশ: মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, মুমিনুল হক, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, আরিফুল হক, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহি এবং নাজমুল ইসলাম অপু।
জিম্বাবুয়ে একাদশ: হ্যামিলটন মাসাকাদজা (অধিনায়ক), ব্রায়ান চারি, ব্রেন্ডন টেইলর, শেন উইলিয়ামস, সিকান্দার রাজা, পিটার মুর, রেগিস চাকাভা, ব্রেন্ডন মাভুতা, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, কাইল জারভিস এবং তেন্দাই চাতারা।
সারাবাংলা/এমআরপি