Monday 21 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইমরুল নেই, ইমরুল আছেন


২৩ জানুয়ারি ২০১৯ ২০:৪২
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

সাম্প্রতিক ফর্ম ও কন্ডিশন বিবেচনায় স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজে টাইগার স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছেন ইমরুল কায়েস। তবে আসন্ন এই সিরিজটিতে তিনি না থাকলেও নির্বাচকদের ২০১৯ বিশ্বকাপ ভাবনায় তিনি ঠিকই আছেন। তাকে উপেক্ষা করে ব্ল্যাক ক্যাপসদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে যাকে নেয়া হয়েছে তিনি থাকবেন নির্বাচকদের সতর্ক দৃষ্টিতে। বলা যায় পরীক্ষামূলকভাবেই তাকে নেয়া হয়েছে। ব্যাট হাতে আস্থার প্রতিদান দিতে না পারলে ফিরবেন ইমরুল।

বুধবার (২৩ জানুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সম্মেলন কক্ষে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ঠিক তাই বললেন, ‘বর্তমান ফর্ম ও কন্ডিশন চিন্তা করে তাকে (ইমরুল কায়েস) বাদ দেয়া হয়েছে। তবে, ইমরুল আমাদের বিশ্বকাপের জন্য ৩২ জনের যেই পুল আছে তাদের মধ্যেই আছে। তিন ওয়ানডের জন্য যারা যাচ্ছে তাদেরকেও দেখতে হবে, যারা এখানে থাকবে তাদেরকেও প্রস্তুত করা হবে। কাউকে আড়াল করা হচ্ছে না। সামনে আয়ারল্যান্ড সিরিজ আছে। সাথে সাথে বিশ্বকাপ, সুতরাং প্রতিটা খেলোয়াড়কেই দেখভাল করা হবে।’

বিজ্ঞাপন

যদি এমন হয়, ইমরুলের স্থলাভিষিক্ত যিনি, তিনি নিউজিল্যান্ড সিরিজে দুর্দান্ত করে বসেছেন,তখন কী হবে? যেহেতু ধরেই নেয়া হচ্ছে নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়েই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু। সেহেতু সিরিজে ভালো করায় বিশ্বকাপ স্কোয়াডে তার জায়গাটা অবশ্যম্ভাবী হয়ে যাবে আর বৈশ্বিক আসরে ইমরুলে মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার দেশে বসে থাকবেন!

ইমরুলকে উপেক্ষা করার কারণ জানাতে গিয়ে নান্নু বললেন, ইমরুলের সাম্প্রতিক ফর্ম সন্তোষজনক নয় এবং নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে তিনি যোগ্য নন। এখানে কিছুটা দ্বিমত হওয়ার সুযোগ বোধ হয় আছে। কেননা সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ (নভেম্বর-ডিসেম্বর ২০১৮) সিরিজটি বাদ দিলে তার আগের জিম্বাবুয়ে সিরিজ ও সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপের কথা মনে করলে নিশ্চিতভাবেই তাকে যে কেউ মিথ্যেবাদী আখ্যা দেবেন।

গেল সেপ্টেম্বরে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে বাংলাদেশের ওপেনাররা যখন ধারাবাহিক ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছিলেন টুর্নামেন্টের মাঝপথে দেশ থেকে উড়িয়ে নেয়া হলো ইমরুলকে। গিয়েই আফগানদের বিপক্ষে অপরাজিত ৭২ রানের ইনিংস খেলে মাশরাফিকে জয় উপহার দিলেন। আপনাদের মনে আছে নিশ্চয়ই, এই আফগানদের বিপক্ষে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে হেরে বসেছিল স্টিভ রোডস শিষ্যরা।

যদিও পরের দুই ম্যাচে ইমরুল ব্যর্থ হয়েছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯ রান করার পর এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে করেন মাত্র ২ রান।

এশিয়া কাপের শেষ দুই ম্যাচে ব্যর্থ হলেও প্রবলভাবে ফিরেছেন পরের মাসেই ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত জিম্বাবুয়ে সিরিজে। সফরকারী দলটির বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে ১৪৪, দ্বিতীয়টিতে ৯০ ও শেষটিতে ১১৫ রানের ইনিংস খেলে তাক লাগিয়ে দেন।

তবে এটা ঠিক নভেম্বর-ডিসেম্বরে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ওয়ানডেতে তার ব্যাটে রান দেখা যায়নি। প্রথমটিতে ৪ রান করলেও দ্বিতীয়টিতে ০ রানে ফেরায় তৃতীয় ম্যাচে একাদশেই জায়গা হলো না। তার মানে তো আর এই না তার সাম্প্রতিক ফর্ম খারাপ। সাম্প্রতিক হিসেব করতে গেলে নূন্যতম ছয় মাস বিবেচনায় রাখাটা বোধ হয় যৌক্তিক।

আবার এমনও হতে পারে নান্নু তার বিপিএল পারফরম্যান্স দেখে বাদ দিয়েছেন। যেহেতু চলতি বিপিএলের ৮ ম্যাচ খেলে তার সর্বোচ্চ ৩০ রান। কিন্তু বিপিএল তো টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট। নান্নু নিজেই বলে থাকেন, টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডে এক নয়। আরো মজার বিষয় হলো এই বিবেচনা বোধ থেকেই বিপিএলে রান খরায় থাকা সত্বেও আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারকে নিউজিল্যান্ড সিরিজে নেয়া হলো!

তাহলে ইমরুল কেন নয়? তবে কী কন্ডিশন বিবেচনায়? নান্নু বোধ হয় ভুলে গেছেন, ২০১০ সালে, ক্রাইস্টচার্চে এই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটি (১০১) করেছিলেন ইমরুল!

সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি

ইমরুল কায়েস নিউজিল্যান্ড-বাংলাদেশ