Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কুশলের মতো শেষ উইকেটে জিতিয়েছেন যারা


১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৬:৪৭

।। সুমিত্র নাথ, নিউজরুম এডিটর ।।

দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় তুলে সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। তবে নিঃসন্দেহে এই ম্যাচ জয়ের কৃতিত্বটা দিতে হবে কুশল পেরেরাকেই। কারণ একদিক থেকে হাল ধরে রেখে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে নিয়ে গেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

ডারবানে শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) প্রোটিয়াদের দেওয়া ৩০৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ২২৬ রানেই ৯টি উইকেট হারায় লঙ্কানরা। তাতেই হয়তো অনেকে ভেবে নিয়েছিলেন এই ম্যাচ হারতে বসেছে লঙ্কানরা। তবে শেষ উইকেটে বিশ্ব ফার্নান্দোকে সঙ্গে করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কুশল। তার ব্যাটেই হারের কাছে যাওয়া ম্যাচটি ১ উইকেটের জয় পেয়েছে চান্ডিকা হাথুরুসিংয়ের শিষ্যরা।

কুশল খেলেন ১৫৩ রানের অপরাজিত ইনিংস। ৩০৯ মিনিট ক্রিজে থেকে ২০০ বল মোকাবেলা করেন তিনি। শেষ উইকেটে ৭৮ রানের জুটিতে কুশলকে সঙ্গ দেয়া ফার্নান্দো করেন ২৭ বলে ৬ রান।

প্রোটিয়াদের বিপক্ষে দারুণ এই জয়ের পর কুশল নিজেই বলেছেন, ক্যারিয়ারের সেরা টেস্ট খেলে ফেললেন তিনি, ‘শ্রীলঙ্কার হয়ে সেরা টেস্ট ম্যাচটাই খেলেছি।’

টেস্টে শেষ উইকেটে তাক লাগানো এমন জয় এনে দিয়েছেন অনেকেই।

চলুন দেখে নেওয়া যাক টেস্টে শেষ উইকেটে কুশলের মতো এমন তাক লাগানো জয় এনে দিয়েছেন কারা :

ইনজামাম-উল-হক বনাম অস্ট্রেলিয়া (করাচি, ১৯৯৪) :

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৯৯৪ সালের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করাচি টেস্টে ১ উইকেটের জয় পেয়েছিল পাকিস্তান।

সেই ম্যাচে ৩৪১ রানের টার্গেটে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ২৫৮ রানে ৯ উইকেট হারায় স্বাগতিক পাকিস্তান। তবে অজি বোলারদের বিপক্ষে বেশ প্রতিরোধ গড়ে মুশতাক আহমেদকে সঙ্গে করে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন ইমজামাম-উল-হক।

বিজ্ঞাপন

১৫৫ মিনিট ক্রিজে থেকে ৮৯ বল মোকাবেলা করে ৫৮ রানের ইনিংস খেলে দলকে জেতান ইনজামাম। তাকে সঙ্গ দেওয়া মুশতাক খেলেন ৩০ বলে ২০ রানের অপরাজিত ইনিংস।

ঘরের মাঠে অজিদের বিপক্ষে দুই ম্যাচের সেই সিরিজটি ১-০ তে জিতে নিয়েছিল স্বাগতিক পাকিস্তানই।

ব্রায়ান লারা বনাম অস্ট্রেলিয়া (বার্বাডোজ, ১৯৯৯) :

পাকিস্তানের পর টেস্টে অস্ট্রেলিয়াকে ১ উইকেটে হারের স্বাদ দিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজও। আর সেই কীর্তিটা ছিল কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার।

১৯৯৯ সালের মার্চে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৩০৮ রানের টার্গেটে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে একাই ১৫৩ রানের ইনিংস খেলেন লারা।

দলীয় ২৪৮ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর নবম উইকেটে লারাকে সঙ্গ দেন স্যার কার্টলি এমব্রোস। তবে ১২ রান করে এমব্রোস ফেরেন দলীয় ৩০২ রানে। তাতে শেষ উইকেটে কোর্টনি ওয়ালশকে সঙ্গে করে দলকে জয় এনে দেন লারা।

১৫৩ রানের ইনিংসটি খেলতে ২৫৬ বল মোকাবেলা করেন লারা। আর ক্রিজে ছিলেন ৩৫৫ মিনিট। তবে শেষ উইকেটে তাকে সঙ্গ দেওয়া ওয়ালশ কোনো রান করলেও ৫টি বল মোকাবেলা করেন।

সেই ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটা আসে লারার হাতেই। আর চার ম্যাচের সেই টেস্ট সিরিজটি শেষ হয় ২-২ সমতায় থেকেই।

জিমি অ্যাডামস বনাম পাকিস্তান (অ্যান্টিগা, ২০০০) :

পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০০০ সালের মে’তে তিন ম্যাচ টেস্ট সিরিজের শেষ টেস্টে ১ উইকেটের দারুণ জয় পেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আর ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল স্বাগতিক উইন্ডিজরাই। স্বাগতিকদের সিরিজ জেতা সেই ম্যাচ জিতিয়েছিলেন জিমি অ্যাডামস।

সেই ম্যাচে পাকিস্তানের দেওয়া ২১৬ রানের সহজ টার্গেটই পেয়েছিল উইন্ডিজরা। তবে পাকিস্তানি বোলারদের তোপে পড়ে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে উইন্ডিজরা। ওয়াসিম আকরাম আর মুশতাক আহমেদদের তোপে পড়ে ১৯৭ রানে ৯ উইকেট হারায় উইন্ডিজরা। তবে শেষ দিকের পাঁচ ব্যাটসম্যান দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগে সাজঘরে ফিরলেও চতুর্থ উইকেটে ব্যাট হাতে নামা অ্যাডামস দলের হাল ধরেন।

বিজ্ঞাপন

শেষ পর্যন্ত ৩৩৪ মিনিট ক্রিজে থেকে ২১২ বল মোকাবেলা করে ৪৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেই সেদিন দলকে জয়ের বন্দরে দিয়ে যান অ্যাডামস। শেষ উইকেটে তাকে সঙ্গ দেন ২৪ বলে ৪ রান করা কোর্টনি ওয়ালশ।

ইনজামাম-উল-হক বনাম বাংলাদেশ (মুলতান, ২০০৩) :

শেষ উইকেটে হারের স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশও। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে মুলতানে সেবার টাইগারদের একাই নিরাশ করেছিলেন ইনজামাম-উল-হক।

খালেদ মাহমুদ সুজনের নেতৃত্বে সেদিন জয়ের সুযোগ ছিল বাংলাদেশের। খালেদ মাদমুদ সুজন, মোহাম্মদ রফিকদের বলে সেদিন বিধ্বস্ত হচ্ছিল পাকিস্তান ব্যাটসম্যানরা। তবে অন্য ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে সেদিন ইনজামাম একাই খেলেন ১৩৮ রানের অপরাজিত ইনিংস। ৩১৭ মিনিট ক্রিজে থেকে এই ব্যাটসম্যান সেদিন মোকাবেলা করেন ২৩২ বল। তার একার কাছেই সেদিন হারতে হয়েছিল টাইগারদের।

ভিভিএস লক্ষণ বনাম অস্ট্রেলিয়া (মোহালি, ২০১০) :

মোহালিতে ২০১০ সালের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে শেষ উইকেটে দুর্দান্ত এক জয় এনে দিয়েছিলেন ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান ভিভিএস লক্ষণ।

সেই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ২১৬ রানে টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ১২৪ রানেই ৮ উইকেট হারায় ভারত। তবে একদিক থেকে দলের হাল ধরেছিলেন লক্ষণ। তাকে নবম উইকেটে সঙ্গ দেন ইশান্ত শর্মা। দুজন মিলে দলকে নিয়ে যান জয়ের খুব কাছেই।

তবে দলীয় ২০৫ রানে ইশান্ত ৩১ রানে ফেরার পর জয়ের আশা হারায় ভারত। কিন্তু শেষ উইকেটে প্রজ্ঞান ওঝাকে সঙ্গে করে দলকে জয় এনে দেন লক্ষণ। ১৮২ মিনিট ক্রিজে থেকে শেষ পর্যন্ত ৭৯ বলে ৭৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন লক্ষণ। তার সঙ্গে অপরাজিত থাকা ওঝা করেন ৫ রান।

সারাবাংলা/এসএন

ইনজামাম-উল-হক কুশল পেরেরা জিমি অ্যাডামস টেস্ট ব্রায়ান লারা ভিভিএস লক্ষণ শেষ উইকেটে জয় স্পোর্টস স্পেশাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর