ডিপিএল চ্যাম্পিয়ন শেখ জামালকে হারিয়ে উত্তরার চমক
৮ মার্চ ২০১৯ ১৭:৫৮
।। স্পোর্টস ডেস্ক।।
উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাবের কয়টা খেলোয়াড়কে চিনেন? যারা নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট অনুসরণ করেন তারাই খুঁজে দু’একজন পরিচিত খেলোয়াড় পাবেন কি সন্দেহ আছে! জাতীয় দলের সাবেক বা বর্তমান কোনও ক্রিকেটারই নেই এই দলে। উল্টো তারাই ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) ষষ্ঠ আসরের উদ্বোধনী দিনে চমক দিলো। নবাগত উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাব হারিয়ে দিলো শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে!
কে ভেবেছিল এমনটা সম্ভব হবে?
চার দিন আগে এই দলটাই মেতেছিল শিরোপার উল্লাসে! প্রথমবারের মতো আয়োজিত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) টি-টুয়েন্টি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন নুরুল হাসান সোহান-নাসির হোসেনরা। অথচ সপ্তাহ না ঘুরতেই গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেটের ‘ভাগ্যদেবী’ মুখ টিপে হাসলেন তাদের দেখে! ডিপিএলের মূল ওয়ানডে ফরম্যাটের প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী দিনেই অঘটনের শিকার হলো শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব! তাদের হারিয়ে চমক দেখাল নবাগত উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাব। অভিষেকেই বড় জয়ে উল্লাসে ফেটে পড়লো তারা।
শুক্রবার ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে নাটকীয় ম্যাচে শেখ জামালকে মাত্র ৯ রানে হারিয়েছে ‘পুঁচকে’ উত্তরা। ম্যাচের শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২ উইকেট হাতে নিয়ে টি-টুয়েন্টি চ্যাম্পিয়নদের দরকার ছিল ১১ রান। উইকেটে ছিলেন ইলিয়াস সানি এবং সালাহউদ্দিন শাকিল। কিন্তু উত্তরার আসাদুজ্জামান পায়েল ঘরোয়া লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নেমেই করেন বাজিমাত! দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাত্র ১ রান দেন ওই ওভারে। তুলে নেন সানির উইকেটও। ফলে রুদ্ধশ্বাস জয়ে এবারের ২০১৮-১৯ মৌসুম করেছে উত্তরা।
এদিন টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামে উত্তরা। উইকেট ধরে রাখলেও ব্যাটসম্যানরা ঝড় তুলতে না পারায় তাদের সংগ্রহ বড় হয়নি। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৪৯ রানের মাঝারি স্কোর গড়ে দলটি। তাদের পক্ষে হাফসেঞ্চুরি করেন তানজিদ হাসান এবং সজীব হোসেন। তানজিদ দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৪ রান করেন ৭৫ বল খেলে। সজীব ৮৩ বলে ৬১ রানে অপরাজিত থাকেন। এছাড়া আনিসুল ইসলাম ইমন ৪৭ এবং মিনহাজ খান ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন। শেখ জামালের পক্ষে কিপটে বোলিংয়ে ২২ রানে ২ উইকেট নেন স্পিনার তানবীর হায়দার।
জবাবে ৩৫ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারায় শক্তিশালী শেখ জামাল। তবে তৃতীয় উইকেটে ফারদিন হাসানের সঙ্গে তারকা ব্যাটসম্যান নাসিরের ৫৩ রানের জুটিতে চাপ সামলে নেয় দলটি। এরপর চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক নুরুলের সঙ্গে নাসির ৬১ রানের আরেকটি জুটি গড়লে জয়ের কক্ষপথে হাঁটতে শুরু করে শেখ জামাল।
কিন্তু দলীয় ১৪৯ রানে নাসিরের বিদায়ের পর তানবীরও দ্রুত সাজঘরে ফেরেন। তাতে ফের চাপে পড়ে তারা। তবে উইকেটে তখনও একপ্রান্ত আগলে ছিলেন নুরুল। আর হার্ডহিটার জিয়াউর রহমান তার সঙ্গে যোগ দিয়ে জুটি বাঁধলে আবারও জয়ের সুবাস পেতে শুরু করে দলটি।
দলীয় দুইশ পেরোনোর পর নুরুল এবং জিয়া ১৬ রানের ব্যবধানে আউট হলে মহাবিপদে পড়ে শেখ জামাল। এই বিপদ থেকে তারা আর উদ্ধার পায়নি। তাদের পক্ষে নুরুল সর্বোচ্চ ৬৫ বলে ৬৫ রান করেন। এছাড়া ফারদিন ৩৯, নাসির ৪৮ এবং জিয়া করেন ২৭ রান। শেষদিকে সানির ২০ বলে ২৮ রানের ইনিংসটিও গেছে বিফলে। উত্তরার পক্ষে আব্দুর রশিদ ৩ উইকেট নেন ৪৪ রানে। শেষ ওভারের নায়ক পায়েলও পান ৩ উইকেট। তার খরচা ৬৫ রান।
উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাবঃ ২৪৯/৪
শেখ জামালঃ ২৪০/৯
৯ রানে জয়ী উত্তরা
সারাবাংলা/জেএইচ