Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আজকের দিনটি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিবের


২৪ মার্চ ২০১৯ ১১:২০

বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রাণ বলা চলে তাকে। ক্রিকেট বিশ্বে তো পৌঁছে গেছেন অন্য এক উচ্চতায়। প্রতিনিয়ত বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেকে দিয়ে দেশের মান তুলে ধরছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশ ক্রিকেটে সাকিবের অবদান অতুলনীয়। ক্যারিয়ারে নিজেকে জ্বালিয়ে আলো ছড়িয়েছেন দেশের হয়ে। শুধু ক্রিকেটের গণ্ডি বাদ দিলেও তাকে যদি দেশের সেরা তারকা বলা হয়, সম্ভবত ভুল বলা হবে না। অলরাউন্ডার সত্তা বহন করে নিজে দুরন্ত গতিতে তো ছুটে চলেছেনই, দেশকেও করছেন গর্বিত।

বিজ্ঞাপন

বয়স বেড়েছে সাকিবের আল হাসানের, পা রেখেছেন ৩২ বছরে। আজ (২৪ মার্চ) দেশসেরা এই অলরাউন্ডারের জন্মদিন।

শুভ জন্মদিন সাকিব আল হাসান।

সাকিবের জন্ম মাগুরা জেলায়। তার বাবার নাম মাশরুর রেজা। বাবা চাইতেন পড়াশোনার পাশাপাশি ফুটবলার হবে ছেলে। তবে এদেশের ক্রিকেটের সৌভাগ্য সেদিনের ছোট্ট সাকিব বলে লাথি মারার চেয়ে ২২ গজের ক্রিজেই বেশি আনন্দ খুঁজে পেয়েছিলেন। মাগুরার সাকিব এখন জনপ্রিয়-সুপরিচিত ক্রিকেট বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে।

৭৫ নম্বর জার্সিধারী এ ক্রিকেটার তার কৃতিত্বেই জাতীয় দলের বাইরে খেলে চলেছেন আন্তর্জাতিক সব বড় বড় টুর্নামেন্ট। কাউন্টি ক্রিকেটে খেলেছেন। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে খেলেছেন (আজও খেলবেন আইপিএলে, হায়দ্রাবাদের জার্সিতে সাবেক দল কলকাতার বিপক্ষে)। খেলেছেন অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের আয়োজিত ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগেও। তার মতো এত ভিন্ন ভিন্ন দেশের ক্রিকেট লিগে খেলার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের আর কারো নেই।

২০০৬ সালের আগস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক হয় সাকিবের। প্রোফাইলে যোগ করেছেন বামহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ও বামহাতি অর্থোডক্স স্পিনার। সাবিক দলে থাকা মানে একজন পূর্ণ ব্যাটসম্যান ও একজন পূর্ণ বোলারের কাজ একাই করে দেওয়া। এই সাকিবের ক্রিকেটের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) থেকে। ক্রমেই তার খেলার মান আর ধারাবাহিকতা তাকে নিয়ে গেছে অনন্য এক উচ্চতায়। হয়েছেন দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়। জাতীয় দলের টেস্ট আর টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক।

বিজ্ঞাপন

নিজের ছোট্ট ক্যারিয়ারে সাকিব গড়েছেন এমন সব কীর্তি যা তাকে গ্রেটদের সঙ্গে তুলনায় নিয়ে আসে। উইজডেন সাময়িকীর বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন সাকিব। আইপিল, শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট লিগ, বিগব্যাশ, কাউন্ট্রি ক্রিকেট- কী খেলেননি এই ক্রিকেট তারকা। বাংলাদেশি হয়ে এ রকম অর্জন শুধু তার একারই। ছিলেন ওয়ানডের সবচেয়ে বেশি সময় ধরে এক নম্বর অলরাউন্ডার। সঙ্গে টেস্টেরও সেরা অলরাউন্ডারের খেতাব ঝুলিতে পুরেছেন। ২০১১ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্বও দিয়েছিলেন।

ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে ডাক পাওয়ার পর। ভালো পারফরমেন্সের কারণে সেখান থেকে জাতীয় দলের জার্সিতে অভিষেক হয় ২০০৬ সালের ৬ আগস্টে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সূচনা হয় বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একই বছরের নভেম্বরে টি-টোয়েন্টিতে এবং ২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়ে অভিষেক হয় সাকিব আল হাসানের।

জিম্বাবুয়ের হারারে মাঠে ওয়ানডে ম্যাচে অভিষেক হওয়া এ ক্রিকেটার বর্তমানে ১৯৫টি একদিনের ম্যাচ খেলে ৫ হাজার ৫৭৭ রান সংগ্রহ করেছেন। অন্যদিকে বোলিং করে নিয়েছেন ২৪৭ উইকেট। ২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রামে টেস্টে অভিষেক হয় সাকিবের। ক্রিকেটের লংগার ভারসন টেস্টে তারকা এই ক্রিকেটার ৫৫ ম্যাচে ৩ হাজার ৮০৭ রান সংগ্রহ করেছেন। আর বোলিংয়ে নিয়েছেন ২০৫ উইকেট। ৭২ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ১৪৭১ রান করার পাশাপাশি বল হাতে নিয়েছেন ৮৮ উইকেট। আর সব ধরনের টি-টোয়েন্টিতে ২৯৫ ম্যাচ খেলে ৪৭৫৪ রান এবং ৩৪৪ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। বেস্ট বোলিং ফিগার ৬ রানে ৬ উইকেট।

টেস্ট ক্রিকেট খেলা সব দলের বিপক্ষে ৫ উইকেট শিকারের কীর্তিও আছে সাকিবের। দক্ষিণ আফ্রিকার ডেল স্টেইন এবং শ্রীলঙ্কার মুত্তিয়া মুরালিধরন ও রঙ্গনা হেরাথের পর এই কীর্তি গড়েন তিনি। তৃতীয় অলরাউন্ডার হিসেবে টেস্ট ইতিহাসে এক ম্যাচে ব্যাট হাতে সেঞ্চুরি ও বল হাতে ১০ উইকেট শিকারের কীর্তি আছে সাকিবের। সাকিব এই কীর্তি গড়েছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এর আগে ইংল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার স্যার ইয়ান বোথাম ভারতের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েন। ভারতের বিপক্ষে একই রেকর্ড আছে পাকিস্তানের ইমরান খানেরও।

ক্রিকেট ইতিহাসে পঞ্চম ক্রিকেটার হিসেবে ব্যাট হাতে অন্তত ৫ হাজার রান এবং বল হাতে অন্তত ২৫০ এর বেশি উইকেট নেয়ার রেকর্ড আছে সাকিবের। টেস্টে দুই ম্যাচে ১০ উইকেট করে নিয়েছেন বাংলাদেশি এই অলরাউন্ডার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৪ সালে এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০১৭ সালে ১০ উইকেট নেয়ার কীর্তি গড়েন সাকিব। দুটি টেস্টেই জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। টেস্ট ক্রিকেটে ডাবল সেঞ্চুরি ও ম্যাচে ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে পাঁচজনের, তার মধ্যে সাকিব একজন। টেস্টের ইনিংসে ৫ বা তার বেশি উইকেট নিয়েছেন ১৮ বার। ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টির আন্তর্জাতিক ফরম্যাটেও আছে এই কীর্তি। সাকিব বাংলাদেশ দলের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝা যায় পরিসংখ্যান থেকে।

সারাবাংলা/এমআরপি

জন্মদিন সাকিব

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর