অবাকই হয়েছেন মোসাদ্দেক
১৬ এপ্রিল ২০১৯ ১৭:০০
বিশ্বকাপ দল ঘোষণার দুই সপ্তাহ আগেও মোসাদ্দেকের সম্ভাবনা ছিল ক্ষীণ। তার বদলে ইয়াসির আলী চৌধুরী রাব্বি টাইগার স্কোয়াডে জায়গা পাচ্ছেন-এমন খবরই দেশের প্রায় প্রতিটি সংবাদমাধ্যম প্রচার করেছে। কিন্তু সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ১৫ সদস্যের দলে জায়গা করে নিলেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সম্মেলন কক্ষে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন যখন বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দল ঘোষণা করছিলেন তখন মাত্রই ঘুম থেকে উঠেছেন মোসাদ্দেক। উঠেই শুনলেন তিনি স্বপ্নের বিশ্বকাপ দলে ঠাঁই পেয়েছেন।
তাতে বেশ অবাকই হয়েছেন মোসাদ্দেক, ‘ঘুম থেকে ওঠার পর যখন শুনলাম তখন স্বাভাবিকভাবেই অবাক হয়েছি। আমারও একটা ধারণা ছিল হয়তো থাকতেও পারি, নাও থাকতে পারি। শোনার পর অবশ্যই অনেক ভালো লাগছে। এটা আমার জন্য অনেক বড় একটা অর্জন।’
মোসাদ্দেক আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শুরু করেন ২০১৬ সালে। ওই বছর মিরপুরে সফরকারী আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষিক্ত এই অলরাউন্ডার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই বিশ্বকাপের স্বপ্ন বুনে আসছেন। যা এবারই পূরণ হতে যাচ্ছে। বৈশ্বিক আসরে সেরা এগারোতে থাকলে দলকে দারুণ কিছু উপহার দেয়ার প্রত্যয় ঝড়লো তার কণ্ঠে।
মোসাদ্দেক জানালেন, ‘যখন থেকে খেলা শুরু করি তখন থেকেই স্বপ্ন দেখি বিশ্বকাপে খেলব। সব বড় টুর্নামেন্টের দিকেই সবসময় ফোকাস থাকে। আমিও সেইভাবে চিন্তা করেছি যে বিশ্বকাপে খেলব, বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু করব। আমি ১৫ জনের দলে আছি, আমি চেষ্টা করব সুযোগ পেলে ভালো কিছু করার।’
আন্তর্জাতিক ওয়ানডেতে মোসাদ্দেকের সময় মোটেই ভালো যাচ্ছে না। শেষ খেলা ১০ ম্যাচে তার সর্বোচ্চ রান অপরাজিত ২৬, যা করেছিলেন গত এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। তবে অব্যাহত রান খরা থেকে বিশ্বকাপেই বেরিয়ে আসতে চাইছেন এই ব্যাটিং অলরাউন্ডার। আর এক্ষেত্রে তিনি অনুপ্রেরণা নিচ্ছেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে।
২০১৭ সালের ৯ জুন কার্ডিফে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ওভার বল করে মাত্র ১৩ রানের বিনিময়ে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। আর ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি করা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গ দিয়ে ৭ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়ে তবেই মাঠ ছেড়েছিলেন। সেই ইংল্যান্ডেই বসতে যাচ্ছে এবারের বিশ্বকাপের আসর। যেখানে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অনন্য অভিজ্ঞতাই তাকে ভালো কিছু করার হাতছানি দিচ্ছে। মোসাদ্দেক যোগ করেন, ‘এটা (কার্ডিফ ২০১৭) আমার জন্য অনুপ্রেরণার মতো। যেহেতু আমার সেখানে খেলার অভিজ্ঞতা আছে।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টানা রান খরায় থাকা মোসাদ্দেক ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ ছন্দেই আছেন। গত ১০ এপ্রিল বিকেএসপিতে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে শেখ জামালের বিপক্ষে খেললেন অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংস। চারটি ফিফটিও আছে। যা বিশ্বকাপের পথ অনেকটাই প্রশস্ত করেছে আবাহনীর এই দলপতির।
বিশ্বকাপের দল ঘোষণার সময় সে বিষয়টিই মনে করিয়ে দিলেন প্রধান নির্বাচক নান্নু, ‘সৈকত ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলেছে। আমরা একজন অলরাউন্ডার চাচ্ছিলাম যে অফস্পিন করতে পারে। রিয়াদের কাঁধে ইনজুরি আছে। সে বোলিং নাও করতে পারে। সেই কথা চিন্তা করে যাতে ব্যাকআপ স্পিনার রাখা যায় সেজন্য সৈকতকে নিয়েছি।’
সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি