মাশরাফিদের বিশ্বকাপ পরীক্ষা শুরু
৬ মে ২০১৯ ২২:০০
‘মর্নিং শোজ দ্য ডে’-বাংলায় তরজমা করলে এর অর্থ দাঁড়ায় … সকাল দেখে দিন বোঝা যায়। আয়ারল্যান্ড সফরে প্রস্তুতি ম্যাচে টিম বাংলাদেশ স্বাগতিক ‘এ’ দল বা কেতাবি নামধারী আয়ারল্যান্ড উলভসের কাছে ৮৮ রানে হেরে যে সকালটি দেখালো তাতে রাজ্যের মেঘ। প্রশ্নবিদ্ধ টাইগারদের পারফম্যান্সও। পুঁচকে দলের বিপক্ষেই এই অবস্থা! না জানি মূল লড়াইয়ে কী হবে?
ওয়েস্ট ইন্ডিজের দাপুটে পারফরম্যান্সে সেই মেঘ যেন আরো ঘনিভূত হলো। ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচেই স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হুঙ্কার ছেড়েছে ক্যারিবিয়রা। ১৯৬ রানের বড় জয় তো আছেই, আছে ওপেনিং জুটিতে শাই হোপ-জন ক্যাম্পবেলের বিশ্বরেকর্ড। তাদের হাত ধরে ক্রিকেট বিশ্ব প্রথমবারের মতো দেখেছে ওয়ানডেতে দুই ওপেনারের দেড়শ ছোঁয়া ইনিংস।
কাজেই বলার অপেক্ষাই থাকছে না, মূল লড়াইয়ে আরো সতর্ক ও আটঘাট বেধেই মাশরাফিদের নামতে হবে। মঙ্গলবার (৭ মে) ডাবলিনে নিজেদের প্রথম ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল পৌনে চারটায়, প্রতিপক্ষ আইরিশদের উড়িয়ে দেওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এটাও কিন্তু ঠিক, প্রতিটি সকালই দিনের সঠিক জানান দেয় না। সকালে কালো মেঘে আচ্ছন্ন কোনো দিনের শেষটা ঝকঝকে রোদেও শেষ হয়। তো মেঘাচ্ছন্ন সকালটিকে ঝলমলে রোদে পরিণত করতে হলে মাশরাফিদের কী কী করতে হবে? মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন।
প্রথম কাজ; প্রস্তুতি ম্যাচের ভুলগুলো শুধরে উঠতে হবে। যেমন বোলারদের পারফরম্যান্স ক্ষুরধার হতে হবে এবং ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডারকে একটি শক্ত ভীত গড়ে দিতে হবে। যা প্রস্তুতি ম্যাচে কিছুটা অনুপস্থিত ছিল। ব্যাটিংয়ে তামিম-লিটন শুরুটা ভালো করলেও তা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারেননি। তাতে ইনিংস বড় করার চাপ গিয়ে পড়েছে পরের ব্যাটসম্যানদের ওপর। যেখানে একমাত্র সাকিব ছাড়া আর কেউই উইকেটে থিতু হতে পারেননি। ফলাফলও হয়েছে অনুমিত।
বোলিংয়ের অবস্থাও তথৈবচ। দলীয় ৩৩ রানে উলভসদের প্রথম উইকেটের পতনের পর দলীয় ৭৯ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট পড়েছে। আর তৃতীয় উইকেট পড়ে দলীয় ২০৩ রানে। তাতে ক্ষতিও যা হবার হয়েছে। ৩০৮ রানের চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় স্বাগতিক দলটি।
কাজেই আক্রমণটি হতে হবে দ্বিমুখী। টস জিতে বা হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বড় সংগ্রহ পাওয়া দলটির বোলারদের বোলিং তোপেও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট এনে দিয়ে জয়ের পথটি সুগম করতে হবে। প্রকারান্তরে আগে বোলিংয়ে নামলে কী করতে হবে সেই শিক্ষাটি নিশ্চয়ই প্রথম ম্যাচ থেকেই তারা পেয়ে গেছেন।
ব্যাটিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম মোকাবেলায় দলের গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার হয়ে উঠতে পারেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য কিংবা লিটন দাস। উদ্ধোধনী জুটিতে তামিম একপ্রান্তু ধরে খেললে এবং অপর প্রান্তে তাদের দুজনের একজন বোলারদের ওপর স্টিম রোলার চালালে শুরুটা নিঃসন্দেহে অসাধারণ পাবে স্টিভ রোডস শিষ্যরা। তিনে নামা লিটন/সৌম্য, চারে নামা সাকিব, পরের অর্ডারে মুশফিক, মাহমুদউল্লাহ ও সাব্বির রহমান সন্দেহাতীতভাবেই বাংলাদেশকে একটি বড় সংগ্রহের পথ দেখাবে।
আর মাশরাফির সিম বোলিংয়ের সঙ্গে মোস্তাফিজের কাটার ভেলকি, সাকিব-মিরাজের টার্নিং ও রুবেল হোসেনের গতিময় বল ক্যারিবিয়দের ব্যাটিং ইনিংস তাসের ঘরে পরিণত করতেই পারে।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাব্বির রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা, মোস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন।
বলা হচ্ছিল আয়ারল্যান্ডের এই ত্রিদেশীয় সিরিজ দিয়েই বিশ্বকাপের মূল প্রস্তুতিটা সেরে নেবে বাংলাদেশ। ওখানকার কন্ডিশন ও উইকেট ইংল্যান্ডের অনুরূপ বলে এই সিরিজটিকেই টেস্ট কেইস হিসেবে নিয়েছে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্ট। কেননা এখানে ব্যাটে-বলে স্বাগতিক আইরিশ ও আরেক সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে যে পারফর্ম করবে তার একটা নির্জাস বয়ে নিয়ে যাবে বিশ্বযুদ্ধের মঞ্চে।
নির্জাসটি ভালো হলে তো কথাই নেই। আত্মবিশ্বাসে টগবগে টাইগারদের বিশ্ব মঞ্চে দেখা যাবে। যার শুরুটা হচ্ছে কয়েক ঘণ্টা পরই। আর যদি ভালো না হয়? সেটা না হয় ভবিষ্যতের হাতেই ছেড়ে দেওয়া যাক।
সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি
** যেখানে সাকিব-মাশরাফিদের ওপর আস্থা হাবিবুলের
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ টাইগার ত্রিদেশীয় সিরিজ বাংলাদেশ বিশ্বকাপ মাশরাফি