বিশ্বকাপে ব্যাট-বলে সমান তালে লড়বে যারা (সাকিব)
২০ মে ২০১৯ ১৫:৩৬
আরেকটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ ঘনিয়ে আসছে। প্রস্তুতি চলছে সর্বোচ্চ গতিতে। ঘোষিত হয়েছে সব দলের বিশ্বকাপ স্কোয়াড। আর সব দলের সেনা সদস্যদের মধ্যে আছেন কিছু সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ যোদ্ধা। যাদের কাছ থেকে পৃথকভাবে কেবল ব্যাটিং কিংবা বোলিংয়ের মনোমুগ্ধকর পারফম্যান্স ক্রিকেট বিশ্ব আশা করে না। তাদের কাছ থেকে উভয় ক্ষেত্রেই সমান পারফরম্যান্স আশা করে ক্রিকেটপ্রেমীরা।
ক্রিকেট বিশ্ব তাদের উভয় ক্ষেত্রে পারদর্শীতার জন্য অলরাউন্ডার বলে সম্বোধন করে। বাংলাদেশের এবারের বিশ্বকাপ দলে আছেন সাকিব আল হাসান। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে যার কাছ থেকে ব্যাটিং-বোলিং উভয় ক্ষেত্রে সমান পারফম্যান্স আশা করে।
টাইগারদের স্কোয়াডের সব থেকে বড় ভরসা সাকিব আল হাসানের জন্ম ২৪ মার্চ ১৯৮৭। ৩২ বছর বয়সী সাকিব এর আগে বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন তিনটি বিশ্বকাপ। এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার ২০১১ বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বাংলাদেশকে। তবে তার অভিষেক বিশ্বকাপ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজে, ২০০৭ সালে।
বিশ্বকাপে সাকিবই বাংলাদেশের সেরা পারফর্মার। তিন বিশ্বকাপে সব মিলিয়ে খেলেছেন ২১ ম্যাচ। আর জয়ের সব অর্জনে ভূমিকা রেখেছেন সামনে থেকেই। বিশ্বকাপে ২৩ উইকেট নিয়ে কেবল সর্বোচ্চ সংখ্যক উইকেট শিকারিই নন, ৫৪০ রান নিয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীও সাকিব। ব্যাটসম্যান সাকিব আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার ৯৯৫ রানের মালিক। ১৯৮ ওয়ানডে ম্যাচে প্রায় ৩৬ গড়ে নিয়ে মোট সংগ্রহ ৫ হাজার ৭১৭ রান।
সাকিবের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ১৩৪ রান বাংলাদেশের ক্রিকেটে চতুর্থ সর্বোচ্চ। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৭টি শতকের পাশাপাশি হাঁকিয়েছেন ৪২টি অর্ধশতকও।
বোলার সাকিব যেন আরো বেশি ভয়ংকর। ওয়ানডেতে ২৪৯ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনিই। সাকিব শুধু একজন উইকেট শিকারিই নন। প্রয়োজনের সময় কিপটে বোলার হিসেবেও বেশ নাম ডাক সাকিবের। তাই তো ১৯৮ ম্যাচ খেলার পরেও সাকিবের বোলিং ইকোনোমি মাত্র ৪.৪৪। ইংল্যান্ডের পিচে কখনোই স্পিনারদের জন্য বাড়তি কোন সুবিধা ছিল না। বিশ্বকাপেও যে স্পিনাররা বাড়তি কোনো সুবিধা পাবে এমন নয়। তবে রানের চাকার লাগাম টেনে ধরতে সাকিবের কার্যকারিতা অনস্বীকার্য। ওয়ানডেতে সাকিবের সেরা বোলিং পারফর্ম ৪৭ রান দিয়ে ৫ উইকেট। সেই সাথে ৪ উইকেটও নিয়েছে ৮ বার।
টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে দ্রুততম ৩০০০ রান ও ১৫০ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব সাকিবের। ক্রিকেট ইতিহাসের ১৩তম ক্রিকেটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে ৩০০০ রান ও ২০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব, সেটিও সবচেয়ে দ্রুততম। ওয়ানডে ক্রিকেটে সাকিবসহ মাত্র ৫ জন ক্রিকেটারের ৫০০০ রান ও ২০০ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব আছে। আর এ রেকর্ড গড়তে সাকিব খেলেছিলেন মাত্র ১৭৮ ইনিংস।
ওয়ানডেতে এক ম্যাচে সাকিবের সেঞ্চুরির পাশাপাশি চার উইকেটও আছে। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ১০ হাজার রান এবং ৪৫০ উইকেটের বেশি নেওয়ার কৃতিত্ব মাত্র তিনজন ক্রিকেটারের। আর সে তালিকায় নাম আছে টাইগার সাকিবেরও। ৩০০ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা দ্বিতীয় বাংলাদেশি সাকিব; আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫০০ উইকেট নেওয়া প্রথম ও একমাত্র বাংলাদেশি।
একজন সাকিব আল হাসানকে পরিসংখ্যান দিয়ে পরিমাপ করা অসম্ভব। তার অর্জন আর আভিজাত্য অনেক বিশাল! তবে সাকিবের জয় করা বাকি অনেককিছু। একটা বিশ্বকাপ সাকিবকে নিয়ে যেতে পারবে ক্রিকেট ইতিহাসের সেরা অলরাউন্ডারের তালিকার শীর্ষে। আর এই বিশ্বকাপে ক্যামেরার চোখও থাকবে সাকিবের দিকে। ব্যাটে-বলে সমানভাবে পারফর্ম করে যে একাই জেতাতে পারে দলকে, সেই সাকিবকেই দেখতে চাইবে ক্রিকেট বিশ্ব। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের প্লেয়ার টু ওয়াচ লিস্টে সাকিব থাকবেন অন্যতম ভরসার পাত্র হয়েই।
সারাবাংলা/এসএস/এমআরপি
** একই কীর্তিতে লয়েডের সঙ্গী যেখানে পন্টিং
অলরাউন্ডার ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ টাইগার বিশ্বকাপ স্পেশাল সাকিব