একজন ঈশ্বর মারাজ এবং বিশ্বকাপে কানাডার রেকর্ড
২৫ মে ২০১৯ ১৭:০১
সে যেভাবেই হোক নিজের খেলোয়াড়ি সত্ত্বাকে স্মরণীয় করে রাখার সবথেকে বড় মঞ্চ পায় বিশ্বকাপকে। অনেক লিজেন্ড আছেন যারা একাধিক বিশ্বকাপ খেলেছেন, পার করেছেন দীর্ঘদিনের বর্ণাঢ্যময় খেলোয়াড়ি জীবন, কিন্তু বিশেষ কোনো রেকর্ড নেই নামের পাশে। অথচ আজ যার গল্প বলতে যাচ্ছি তিনি তার দলের এবং নিজের প্রথম বিশ্বকাপেই স্থান পেয়েছেন রেকর্ড বইয়ে।
গল্পটা যাকে নিয়ে তার নাম ঈশ্বর মারাজ, খেলেছেন কানাডার হয়ে। খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র ৬টি ওয়ানডে ম্যাচ। বিশ্বকাপ এবং ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে ধীর গতির ইনিংস খেলার রেকর্ডটি তার ঝুলিতে। ঘটনাটি ঘটে ২০০৩ সালের বিশ্বকাপে। ২০০১ সালের আইসিসি ট্রফির বাধা টপকে সেবার কানাডা ২৪ বছর পর দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের আসরে জায়গা করে নেয়। আর গোটা আসর জুড়ে কয়েকটি রেকর্ড সৃষ্টি করার কারণেই হয়তো সেই বিশ্বকাপ স্মরণীয় হয়ে থাকবে কানাডার জন্য।
কানাডা তাদের প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশকে হারিয়ে তাক লাগিয়ে দেয় বিশ্ববাসীকে। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গুটিয়ে যাওয়া ৩৬ রানের ইনিংসটি ছিল সে সময়ের সবথেকে স্বল্প রানের ইনিংস। ঠিক তার পরের ম্যাচেই শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬৭ বলে সেঞ্চুরি করে ওপেনার জন ডেভিসন তখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড করার কৃতিত্ব অর্জন করেন।
এরপরই আসে ঈশ্বর মারাজের সেই বিখ্যাত ইনিংস কিন্তু চরিত্রে একদম বিপরীত। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষের ওই ম্যাচে ২৫৫ রান তাড়া করতে নেমে ২৮ ওভারে ৫৮ রানে চার উইকেট খুইয়ে বসে কানাডা। বিশ্বকাপের আগের চার ম্যাচে মাত্র ৪৫ রান করা ঈশ্বর মারাজ এ দিন খেলেন ঐতিহাসিক সেই ধীর গতির ইনিংস।
ওপেনিংয়ে ব্যাট করতে নামা ঈশ্বর সম্মান বাঁচাতে ক্রিজে থিতু হওয়ার পরিকল্পনা করেন। অতঃপর ১৪৮ বল খেলে অর্ধশতকে পৌঁছান তিনি। ৩৪.১৯ স্ট্রাইক রেটে ইতিহাসের সবথেকে ধীর গতির এই ইনিংসে ১৫৫ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন ঈশ্বর। অর্থাৎ ম্যাচের অর্ধেকের বেশি বল তিনি একাই খেলেন। মান বাঁচানোর এই লড়াইয়ে ৫০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৬ রান তুলতে সক্ষম হয় কানাডা।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ শিরোপার ইতিহাসের আদি-অন্ত
ঈশ্বরের এই ইনিংসের আগে ৩৭.৭২ স্ট্রাইক রেটে ১৬৭ বলে ৬৩ রান করা পাকিস্তানের জাভেদ মিয়াঁদাদের ইনিংসটি ছিল সবথেকে ঢিলে ইনিংস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পার্থে ১৯৮৯ সালে এই ইনিংসটি খেলেছিলেন মিয়াঁদাদ। আর বিশ্বকাপের ইতিহাসে আগের রেকর্ডটির মালিক ভারতের সুনীল গাভাস্কার। ভারতীয় এই গ্রেট বিশ্বকাপে ৩৮.১৯ স্ট্রাইক রেটে ১৪৪ বলে করেছিলেন ৫৫।
টি-টোয়েন্টির এই যুগে মারকুটে খেলায় পরিণত হয়েছে ক্রিকেট। আগে যেখানে ২৫০ রান তাড়া করতেই হিমশিম খেত দলগুলো, সেখানে এখন দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড ৪০০ ছাড়িয়ে গেছে। অচিরেই হয়তো ৫০০ ছাড়িয়ে যাবে এই রেকর্ড। তাই এই যুগে এমন ঢিলে ইনিংস আর দেখা হবে বলে আশা করা যায় না। অন্তত ক্রিকেটপ্রেমীরা সেটি চাইবেন না।
সারাবাংলা/টিএম৬/এমআরপি
** বিশ্বকাপের রেকর্ড বইয়ে নতুন রেকর্ড সাকিবের
ঈশ্বর মারাজ কানাডা ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ বিশ্বকাপ স্পেশাল রেকর্ড