ক্রিকেট মহারণের ১২তম আসর বসেছে ইংল্যান্ডে। মূল পর্বের খেলা ৩০ মে শুরু হলেও রোববার (২ জুন) বাংলাদেশের বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু হচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। আর অতীতে এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই আছে বাংলাদেশের সুখের স্মৃতি।
লন্ডনের দ্য ওভাল স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় দুপুর সাড়ে তিনটায় এবারের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে মাশরাফিরা। শুরুতেই মুখোমুখি শক্তিশালী প্রোটিয়াদের। তবে তাদের বিপক্ষে টাইগারদের আছে এক মহাসুখের স্মৃতি।
বিশ্বকাপের মঞ্চে এখন পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ খেলেছে ৩টি ম্যাচ। আর চার ম্যাচের একটিতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে জয়ও আছে টাইগারদের। ২০০৭ সালের ৭ এপ্রিল, বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ৯ম আসরের সুপার এইটে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ।
ম্যাচ শুরুর আগে স্পষ্টভাবেই ফেভারিট প্রোটিয়ারা। আর বাংলাদেশ তখনো ছোটদলের তকমাটা মুছে ফেলতে পারেনি। টাইগাররা নিজেদের সামর্থের সবটুকু দিয়ে লড়াই করছে ক্রিকেটের সব থেকে বড় মঞ্চে। আর এ ম্যাচেই ফেভারিটের তকমা তোয়াক্কা না করে বিশ্বকে চমকে দেন টাইগাররা। অধিনায়ক হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬৭ রানে হারায়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং বিপর্যয় টাইগারদের। দলীয় স্কোরবোর্ডে ৮৪ রান যোগ হতে না হতেই নেই ৪টি উইকেট।
এরপর সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে লড়াইয়ে ফেরে বাংলাদেশ। আর আশরাফুলকে সঙ্গ দেন আফতাব আহমেদ। পঞ্চম উইকেট জুটিতে এই দুই ব্যাটসম্যান তোলে ৭৬ রান।
আফতাব আহমেদ দুই চার আর দুই ছক্কায় ৪৩ বলে ৩৫ রান করে আউট হলেও অর্ধশতক করেন আশরাফুল। বাংলাদেশের ইনিংসের ৫০তম ওভারের প্রথম বলে বলে থামে আশরাফুলের ইনিংস।
আশরাফুল যখন আউট হয় তখন বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৫১ রানে ৮ উইকেট। অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ১২টি চারে ৮৩ বলে ৮৭ রানের ইনিংস খেলেন আশরাফুল। শেষ দিকে ৩ চার আর একটি ছক্কায় ১৬ বলে ২৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন মাশরাফি। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ২৫১ রানের লড়াই করার মতো পুঁজি জমা করে লাল-সবুজরা।
২৫২ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের তোপের মুখে পড়ে প্রোটিয়াস ব্যাটসম্যানরা। সে সময়কার বাংলাদেশের ভয়ংকর বাঁহাতি মিডিয়াম পেসার সৈয়দ রাসেল এবং সেই সাথে আরও তিন বাঁহাতি স্পিনার আবদুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ রফিক, সাকিব আল হাসানের বোলিংয়ে মাত্র ১৮৪ রানেই অলআউট আফ্রিকা।
আব্দুর রাজ্জাক ৩টি, সাকিব ও রাসেল ২টি আর মোহাম্মদ রফিক নেন ১টি উইকেট।
দক্ষিণ আফ্রিকা বধের ১২ বছর পূর্ণ হয়েছে। ইংল্যান্ডে বাসেছে বিশ্বকাপের ১২তম আসরও। আর বাংলাদেশ ক্রিকেট বদলেছে তখন থেকে অনেক বেশি। এখন আর ছোট দলের তকমা নেই টাইগারদের গায়ে। ক্রিকেট বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে তারা। আর তাই তো এবার আর ফেভারিটের তকমা গায়ে লাগিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলতে নামতে পারছে না প্রোটিয়ারা।
তাই তো প্রোটিয়াসদের চোখে চোখ রেখে লড়াইয়ের আশ্বাস টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মোর্ত্তজার। বিশ্বকাপের মূল পর্বের আগে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ জয় আর এরপরে উড়ে আসা ইংল্যান্ডে। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে নাম ভারতের বিপক্ষে।
ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ৯৫ রানে হারলেও নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার কাজটা হয়েছে ঠিক মতোই। প্রস্তুত বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে নিজেদের সেরাটা ঢেলে দিয়ে জয় ছিনিয়ে আনতে।
বাংলাদেশের দর্শকরা বিশ্বকাপের সকল ম্যাচ অনলাইনে কোনো প্রকার সাবস্ক্রিপশন ফি বা চার্জ ছাড়াই দেখতে পারবেন র্যাবিটহোলের ওয়েবসাইট www.rabbitholebd.com এ। এছাড়া র্যাবিটহোলের অ্যাপসেও দেখা যাবে প্রতিটি ম্যাচ। অ্যাপসটি এন্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/UNCWS2 (শুধুমাত্র বাংলাদেশ) এই লিঙ্কে ক্লিক করে। তাছাড়া আইওএস ব্যবহারকারীরা ডাউনলোড করতে পারবেন https://goo.gl/vJjyyL (শুধুমাত্র বাংলাদেশ ) এই লিঙ্কে ক্লিক করে।
** মাহমুদুল্লাহ-মোসাদ্দেক উন্মাদনায় ময়মনসিংহ
সারাবাংলা/এসএস