গ্রিজম্যান বার্সায়, মেন্ডি রিয়ালে
১৩ জুন ২০১৯ ০৯:৪৯
ইউরোপের ফুটবল মৌসুম শেষ হওয়ার সাথে সাথেই ঘোষণা দিয়েছিলেন অ্যাটলেটিকো ছাড়ছেন গ্রিজম্যান। তবে নতুন গন্তব্য কোন ক্লাব সে সম্পর্কে কিছুই বলেননি তখন। তবে না বললেও সংবাদ মাধ্যমে জোর গুঞ্জন উঠেছিল বার্সাতেই যাচ্ছেন অ্যান্তোনিও গ্রিজম্যান। আর এদিকে কেনাকাটা থেমে নেই রিয়ালেরও। শেষ চার মৌসুমের কেনাকাটা যেন একবারেই সেরে ফেলছেন রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরিন্তিনো পেরেজ। প্রথমে লুকা জোভিচ, এরপরে তারকা এডেন হ্যাজার্ড আর এবার ফ্রান্সের তরুণ ডিফেন্ডার ফারল্যান্ড মেন্ডি।
গ্রিজম্যানের পরবর্তী গন্তব্য কোন ক্লাব তা নিয়ে ইউরোপের সংবাদ মাধ্যমের কৌতুহলে শেষ নেই। কখনো গুঞ্জন ওঠে বার্সেলোনা তো কখনো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড আবার কখনো বাঁ প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের নাম। তবে গ্রিজি নিজেও জানিয়েছিলেন, এখনও দলবদল নিশ্চিত না হলেও তিনি জানেন আগামী মৌসুমে কোন দলের জার্সি গায়ে জড়াবেন তিনি।
এবার গ্রিজির পরবর্তী ঠিকানা হবে কোন ক্লাব তা নিশ্চিত করে দিলেন অ্যাটলেটিকোর সিইও মিগেল আনহেল গিল মারিন। আগামী মৌসুমে বার্সেলোনার জার্সিতেই দেখা যাবে বিশ্বকাপ জয়ী এই ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ডকে, গত মার্চেই এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার কথাও জানিয়েছেন মারিন।
২০১৭-১৮ মৌসুম শেষেই গ্রিযমানের বার্সার যোগ দেওয়ার ঘোষণাটা আসতে পারত। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ছেড়ে বার্সেলোনায় যোগ দেওয়া সময়ের ব্যাপারই মনে হচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রীতিমতো ঢাকঢোল পিটিয়ে, ডকুমেন্টারি বের করে জানিয়েছিলেন, ভালবাসার টানে অ্যাটলেটিকোতেই থাকছেন তিনি। তবে ২০১৮-১৯ মৌসুম শেষ হতে না হতেই ঘোষণা দিলেন এ মৌসুমে সত্যিই ক্লাব ছাড়ছেন তিনি।
মাত্র ১৮ বছর বয়সে রিয়াল সোসিয়াদাদে যোগ দিয়ে লা লিগায় এসেছিলেন গ্রিজি। পাঁচ বছর পর যোগ দেন অ্যাটলেটিকোতে। ডিয়েগো সিমিওনের দলে কাটিয়েছেন ছয় মৌসুম, ২বার খেলেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে, জিতেছেন লা লিগা, ইউরোপা লিগ, স্প্যানিশ কাপ এবং ইউরোপিয়ান সুপারকাপ। ফ্রান্সের হয়ে গত বছরই জিতেছেন বিশ্বকাপ।
আর এ মৌসুমে যোগ দিচ্ছেন বার্সেলোনার মতো ক্লাবে। যেখানে সতীর্থ হিসেবে পাচ্ছেন লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেরজের মতো তারকাকে।
এদিকে থেমে নেই রিয়াল মাদ্রিদও। জিদানের দ্বিতীয় মেয়াদে রিয়ালে যোগ দেওয়ার শর্তই ছিল দলে নতুন ফুটবলারের অন্তর্ভূক্তি। আর তা পূরণ করছেন রিয়াল প্রেসিডেন্ট ফ্লোরিন্তিনো পেরেজ। চেলসি থেকে হ্যাজার্ডকে এনে দিয়েছেন ১০০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে। ফ্রাঙ্ক্রফ্রুট থেকে এনে দিয়েছেন ইউরোপের সেরা প্রতিভাবান স্ট্রাইকার লুকা জোভিচকে মাত্র ৬০ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে।
আর এখন পর্যন্ত এ মৌসুমের চতুর্থ সাইনিং হিসেবে ৫৩ মিলিয়ন ইউরোতে দলে এনেছেন ফারল্যান্ড মেন্ডিকে। ফ্রেঞ্চ ক্লাব অলিম্পিক লিঁওর হয়ে এ মৌসুমে লিগের সেরা ডিফেন্ডার নির্বাচিত হয়েছেন মেন্ডি। ২০২৫ সাল পর্যন্ত জিনেদিন জিদানের দলের সাথে চুক্তি করেছেন এই ফ্রেঞ্চ লেফটব্যাক।
লিঁওকে ট্রান্সফার ফি বাবদ ৪৮ মিলিয়ন ইউরো প্রদান করবে রিয়াল আর চুক্তির অন্যান্য বিষয়াদির খরচ ৫ মিলিয়ন ইউরো। এডার মিলিতাও, লুকা জোভিচ, এডেন হ্যাজার্ডের পর এবারের দলবদলে রিয়ালের চতুর্থ সাইনিং হিসেবে দলে আসলেন মেন্ডি। আগামী বুধবার ১৯ জুন বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় রিয়ালের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর ভিএআইপি বক্সে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে তাকে।
মেন্ডির রিয়ালে যোগ দেওয়ার ব্যাপারটি অবশ্য আগেই নিশ্চিত করেছিলেন ফ্রান্স জাতীয় দলের বিশ্বকাপ জয়ী কোচ দিদিয়ের দেশম। এই সপ্তাহে ইউরো বাছাইপর্বের এক সংবাদ সম্মেলনে মেন্ডির রিয়ালে যোগ দেওয়ার ব্যাপারটি নিশ্চিত করেন ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী ম্যানেজার। রিয়ালে যোগ দেওয়ার আগ পর্যন্ত ফ্রান্সের বিভিন্ন লিগে খেলেছিলেন মেন্ডি। ২০০৪ থেকে ২০১২ পর্যন্ত প্যারিস সেইন্ট জার্মেইয়ের যুবদলে থাকার পর ২০১৩ সালে যোগ দেন লে হাভ্রের যুবদলে। যেখান থেকে উঠে এসেছেন রিয়াদ মাহরেজ, এনগোলো কান্তে, দিমিত্রি পায়েট এবং পল পগবার মত ফুটবলাররা। একই বছরে লে হাভ্রের ‘বি’ দলের হয়েও অভিষেক ঘটে তার। গত বছরের নভেম্বরে উরুগুয়ের বিপক্ষে ফ্রান্স জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয়েছিল মেন্ডির।
২০১৫ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত লে হাভ্রের মূল দলে খেলে লিঁওতে যোগ দেন মেন্ডি। বছর দুয়েক পর আবারও বদলানেন ক্লাব, এবার নিলেন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটাই। রিয়ালের বাঁ-প্রান্তে মূল একাদশে জায়গা করে নিতে মার্সেলোর সাথে লড়বেন তিনি। ‘লস ব্লাঙ্কোস’দের অন্য দুই লেফটব্যাক সার্জিও রেগুইলন এবং থিও হার্নান্দেজ এখনও কাগজে কলমে রিয়ালের ফুটবলার হলেও খুব শীঘ্রই অন্য কোথাও পাড়ি জমাবেন দুজনই, জানিয়েছে মার্কা।
আরও পড়ুন: এশিয়ার সেরা টুর্নামেন্টের চার চ্যালেঞ্জের সামনে বাংলাদেশ
সারাবাংলা/এসএস
অ্যান্তোনিও গ্রিজম্যান ইউরোপিয়ান ফুটবল দলবদল ফারল্যান্ড মেন্ডি ফুটবল বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদ'