Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাইফ ক্লাবের আছে ‘বাংলাদেশের’ নেই!


২৬ আগস্ট ২০১৯ ২১:৩৭

ঢাকা: বিশ্ব ফুটবলে প্রযুক্তি ছোঁয়া লেগেছে বহু বছর আগে। পূর্ণ প্রতিযোগিতার এই যুগে কেউ পিছিয়ে থাকতে চায় না। ক্লাব বা দেশ প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়েছে বিশ্ব ফুটবল। চলমান ম্যাচেও পুরো ম্যাচের যাবতীয় তথ্য এক ক্লিকেই হাতের মুঠোয় দেখিয়ে দিচ্ছে প্রযুক্তি। যার ফলে ফুটবলটা আরও সহজ হয়ে এসেছে। প্রযুক্তির উপর ভর করেই তার পূর্ণ উপযোগিতা নিয়ে সাফল্য পাচ্ছে অনেক দলই। তবে, প্রযুক্তি দৌড়ে ঢের পিছিয়ে বাংলাদেশের ফুটবল।

বিজ্ঞাপন

অনেক পরে হলেও দেশের ফুটবল এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে। জিপিএসের মতো উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর ডিভাইস এনে ব্যবহার শুরু করেছে আরামবাগ-সাইফ স্পোর্টিংয়ের মতো দেশের ঘরোয়া ফুটবলের সর্বোচ্চ ক্লাবগুলো। দেশের জাতীয় ফুটবল দলেও এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু হয়েছে।

তবে, অনেক প্রযুক্তির মধ্যে একটা প্রযুক্তি এখনও জাতীয় দলে নেই। যা শুধু সাইফ শিবিরে আছে। ফুটবলের মান উন্নয়নে প্রয়োজনীয় এই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে ক্লাবটি। পরে হলেও তার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন।

সেটি হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে ম্যাচ বিশ্লেষণের সফটওয়্যার। যেটি শুধু সাইফ শিবিরেই আছে। এমনই একটি সফটওয়্যার বাফুফের কাছে চেয়েছেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ জেমি ডে। বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের মতো গুরুত্বপূর্ণ মিশনের সামনে এমন সফটওয়্যার দরকার বলে মনে করছেন জেমি।

অবশ্য জেমির তাগিদে সাড়া দিয়েছে ফেডারেশন। শিগগিরই এই সফটওয়্যার দেশে আনা হচ্ছে বলে বাফুফে সূত্র জানায়।

ইতোমধ্যে সাইফ তাদের ক্লাবের ফুটবলার ও দেশের ফুটবল উন্নয়নে এবার একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করা শুরু করেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে একটি দলের বিশ্লেষণ, খেলার ধরনের তুলনামূলক অবস্থা এবং খেলা পরিবর্তনের সেট-প্লে বিশ্লেষণ করে থাকে এ প্রযুক্তি। এ প্রযুক্তি বলে দিতে পারবে কিভাবে বিপক্ষ দল আচরণ করছে এবং করবে ও খেলবে।

ফুটবলারদের কি নিয়ে কাজ করবে এই সফটওয়্যার?
সাইফের প্রযুক্তির নাম দ্য ভিডিও অ্যানালিস্ট সফটওয়্যার নিয়ে কাজ করছেন সাইফের সহকারী কোচ আলেক্স ম্যাককার্থি। ইতোমধ্যে দলের খেলার উন্নয়নে এই প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করে দিয়েছে সাইফ। এই প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করে এমন প্রশ্নে আলেক্স ম্যাককার্থি সারাবাংলাকে জানান, খেলার ভিডিওকে বিভিন্নভাবে ভাগ করে দেখায় এ প্রযুক্তি। কোথায় সমস্যা, কোথায় দুর্বলতা দেখিয়ে দেয় এই প্রযুক্তি। কোন খেলোয়াড় কোথায় অবস্থান নিবে, তার কি দায়িত্ব তারও সুপারিশ করবে এই প্রযুক্তি। ফুটবলকে আরও সহজ করবে এই প্রযুক্তি।’

বিজ্ঞাপন

এ জন্য ম্যাচের ভিডিওয়ের উপর নির্ভর করতে হয় এই প্রযুক্তির। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই প্রযুক্তি নিয়ে কতটুকু কাজ করার সুযোগ আছে জানান এই ইংলিশ কোচ, ‘আপাতত মাইকুজো বা যে টেলিভিশনে ম্যাচ দেখানো হয় সেই ভিডিও বিশ্লেষণ করে এই সফটওয়্যার। তবে, বাংলাদেশে ম্যাচ ভিডিও যেখানে বল আছে শুধু সেখানে অবস্থানটা দেখা যায়। তাই এর বাইরে পেছনের ফুটবলারদের আচরণ কি হচ্ছে তা দেখাতে পারছে না এই প্রযুক্তি। উন্নত দেশের অনেক ক্যামেরা থাকায় বিশ্লেষণ করা সহজ হয়।’

ফুটবলারদের নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনারই অংশ হিসেবে এই প্রযুক্তি আনা হয়েছে বলে জানায় ক্লাব কর্তৃপক্ষ। ক্লাবের এই চিন্তার তাগিদটা এলো ফেডারেশনও। এই জন্য এই সফটওয়্যার কেনার জন্য ৮-১০ হাজার ডলার অর্থাৎ প্রায় সাত থেকে আট লাখ টাকা।

শিগগিরই আফগানিস্তান ম্যাচের আগেই ক্যাম্পে সফটওয়্যারটি নিয়ে আসা হবে বলে জানান বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগ, ‘কোচ জেমি ও টেকনিক্যাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক ডিরেক্টর পল স্মলি ম্যাচ পর্যালোচনা করার জন্য আমাদের কাছে ‘স্পোর্টস কোডের’ চাহিদা দিয়েছিল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের আগেই সফটওয়্যারটি চলে আসবে।’

সম্প্রতি ক্লাবের উদ্যোগের পর দেশের জাতীয় ফুটবলারদের জন্য জিপিএস ডিভাইস প্রযুক্তি কিনে এনে সেটি ব্যবহার শুরু করেছে দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ অভিভাবক। এমন অনেক প্রযুক্তি নেই জাতীয় দলের। দেশের ফুটবলারদের আন্তর্জাতিক মানের গড়ে তুলতে প্রযুক্তি নির্ভরতার বিকল্প নেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ফুটবলে আরেকটি নতুন প্রযুক্তির ছোঁয়া
বাংলাদেশের ফুটবলে একেবারে নতুন যে প্রযুক্তি

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন সফটওয়্যার সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর