Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ভাত ছেড়ে’ ইংলিশ খাবার খাচ্ছেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা!


২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২১:২৯

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সুদিনের বাতাস বইতে শুরু করেছে দেশের ফুটবলে। ভুটান বিপর্যয়ের পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। প্রাক-বাছাইপর্ব পেরিয়ে লাল-সবুজরা এখন কাতার বিশ্বকাপ বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে। সামনে আফগান ম্যাচকে সামনে রেখে প্রস্তুতিতে কোন ছাড় দিতে চায় না জামাল ভূঁইয়ারা। পারফরম্যান্সের পাশাপাশি ফিটনেস ও স্ট্যামিনা বাড়াতে তাই কঠোর পরিশ্রম করে চলেছে জেমি ডে’র শিষ্যরা।

সেই পরিশ্রমের একটি হলো পরিপূর্ণ ফিটনেস নিয়ে ম্যাচে অংশ নেয়া। ফিটনেসসহ প্রস্তুতিতে কোন প্রকার ঘাটতি রাখতে চায় না জাতীয় দল। তাই মাঠে অনুশীলনসহ জিমন্যাসিয়ামেও প্রচুর ঘাম ঝরাচ্ছেন জামাল-বিপলু-সুফিল-রবিউলরা। সেজন্য খাদ্যাভ্যাসেও ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হয়েছে ফুটবলারদের।

বিজ্ঞাপন

দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার ভাত খাওয়া একেবারে কমিয়ে দেয়া হয়েছে ফুটবলারদের। ফিটনেস ও স্ট্যামিনা বাড়াতে ‘ইংলিশ খাবারে অভ্যস্ত’ করা হচ্ছে তাদের। খেলোয়াড়দের রিকোভারি থেকে শুরু করে শরীরে প্রয়োজনীয় প্রোটিন নিশ্চিত করতে খাদ্যাভ্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন কোচ জেমি ডে ও ট্রেইনার সিমন মল্টবাই।

জাতীয় দলের খেলোয়াড়রাও এখন এই রুটিনে অভ্যস্ত। ফিটনেস কোচ সিমন মল্টবাই সারাবাংলাকে বলেন, ‘একজন খেলোয়াড়কে ফিট থাকতে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আবশ্যক। মেসি-রোনালদো যাদের কথাই বলুন তারাও খাদ্যের মেন্যুসহ পরিশ্রম নিয়ে অনেক সিরিয়াস। কেননা পেশাদার ফুটবলারদের ফিটনেসটা সবসময় ঠিক রাখতে হয়। নাহলে ইনজুরির আশঙ্কা থাকে। খেলায় এর বাজে প্রভাব পড়ে। জামালদের সেইভাবেই রুটিনে আনা হয়েছে। এবং তারা ভালো পরিশ্রম করছে।’

ফিটনেস বাড়াতে কী খাচ্ছেন জাতীয় দলের ফুটবলাররা
জাতীয় দলের ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলেছে সারাবাংলাডটনেট। ফুটবলারদের মধ্যে ছিলেন রবিউল, আনিসুর রহমান জিকো ও মাহবুবুর রহমান সুফিল। তাদের বক্তব্যে, ‘ভাত একেবারে কম খাওয়া হয়। বিশেষ করে সবজি, মাছ, সালাত, মুরগির লেগ পিস, ফল খেয়ে থাকি। রুটিন অনুযায়ী এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হয় আমাদের। ফিটনেস ঠিক রাখতে নিয়মিত অনুশীলনসহ জিমনেসিয়ামে ভালো সময় থাকতে হয়।’

বিজ্ঞাপন

দেশের নারী ফুটবলারদেও খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে আনা হয়েছে অনেক আগে থেকে। তাদের সাফল্যের পেছনে অনেক বড় অবদান মার্জিয়াদের ফিটনেস। যা খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের ফলে সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন বাফুফের টেকনিক্যাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক ডিরেক্টর পল স্মলি।

খাদ্যাভ্যাসের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে পল স্মলি সারাবাংলাকে বলেন, ‘ফুটবলাররা যখন অনুশীলন করে, ম্যাচ খেলে তারা দমে যায়। তাদের রিকোভারি হচ্ছে কিনা এটা আমাদের নিশ্চিত করতে হয়। আমাদের নিশ্চিত করতে হয় তাদের খেলার যোগ্যতা বাড়ছে কিনা, অনুশীলনে বেশি সময় দিচ্ছে কিনা সেগুলোও নিশ্চিত করতে হবে।’

‘অনুশীলন বা খেলায় ইনজুরিতে পড়লে তাদের পুনর্বাসন সঠিকভাবে করা হচ্ছে কিনা সেটিও নিশ্চিত করতে হয়। প্রতিদিন পরিচর্যার মধ্যে রাখতে হয়। অনুশীলনে যে চাপের মধ্যে থাকে এবং শরীর থেকে যে পরিমাণ ঘাম বের হয় সেটার রিকোভারি করার চিন্তা করতে হয়। নিউট্রিশন নিশ্চিত করতে হয়।’ তিনি যোগ করেন।

দেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো কী সেই প্রোটিন বা নিউট্রিশন দিতে পারছে না এমন প্রশ্নের উত্তরে স্মলি জানান,‘ফুটবলাররা কি খাবার খেলে প্রয়োজনীয় প্রোটিন ও নিউট্রিশন শরীরে যোগ হবে সেটাও চিন্তা করতে হয়। বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবারগুলো খেলোয়াড়দের ঐ প্রয়োজনীয় নিউট্রিশন ও প্রোটিন দিতে পারছে না। ম্যাচ শেষে খেলোয়াড়দের পেশি ইনজুরির রিকোভারিও এই দেশি খাবার দিয়ে হচ্ছে না। তাই এই খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেছি।’

সেই প্রয়োজনীয়তা থেকেই ভাতের বদলে বেশি করে শাকসবজি, ফলমুল, আঁশ জাতীয় খাবার, সবজি ও ভিটামিন জাতীয় খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ব্রকোলি, ম্যালনিস, আপেল, কলা সরবরাহ করা হচ্ছে উচ্চ নিউট্রিশন নিশ্চিত করতে। আলু দেয়া হচ্ছে উচ্চ কার্বোহাইড্রেট যোগান দিতে। তাতে শরীরের পেশিগুলো মজবুত হয় বলে জানান স্মলি।

স্মলি আরও বলেন, ‘কোনো দেশই শুধু তাদের দেশীয় খাবার দিয়ে খেলোয়াড়দের নিউট্রিশন ও প্রোটিন নিশ্চিত করতে পারে না। ফুটবলাররা দিনের বিভিন্ন সেশনে অনুশীলন করে। তাই তাদের শরীরের উপর দিয়ে অনেক ঝক্কি যায়। সবকিছুর রিকোভারি দিতে এই উন্নত খাবার দিতে হয় তাদের। খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন আনতে হয়। ইউরোপেও লিজেন্ড খেলোয়াড়রা তাদের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে সফল হয়েছে।’

এই খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন জামাল ভূঁইয়াদের দিয়েছে বিশ্বমানের ফিটনেস। এ নিয়ে জেমি ডে বলেন, ‘বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের মতো বড় জায়গায় যেমন ফিটনেস বা মানসিক অবস্থা থাকা দরকার তার পরিপূর্ণটাই আছে জাতীয় দলের বর্তমান সদস্যদের। বিশ্বমানের। অর্থাৎ ইউরোপের ফুটবলারদের মতোই ফিটনেস লেভেল তাদের।’

আরও পড়ুন: মেসি-রোনালদোদের ফিটনেস নিয়ে বিশ্বকাপ মিশনে জামাল ভূঁইয়ারা!

খাদ্যাভ্যাস জামাল ভূঁইয়া জিকো জেমি ডে ফিটনেস রবিউল সুফিল স্ট্যামিনা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর